টিপস

উদ্যোক্তা হবেন যেভাবে

২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে ১০০ কোটি নতুন চাকরি সৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তির আবির্ভাব নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। দেশে প্রতিবছর প্রায় ২২ লাখ তরুণ কর্মবাজারে প্রবেশ করেন। যারা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চান তাদেরকে সৃজনশীলতা, নেতৃত্বের ক্ষমতা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এগোতে হবে। জেনে নেওয়া যাক তেমন কয়েকটি বিষয়—

অভিজ্ঞদের কথা শুনুন

কিছু শুরু করার আগে অভিজ্ঞদের কথা শুনুন। অভিজ্ঞদের সঙ্গে লিঙ্কড-ইন বা স্কোরের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যোগাযোগ করতে পারেন।

জানার বিকল্প নেই

পরামর্শদাতাদের পাশাপাশি, আপনি প্রকাশিত বই এবং নিবন্ধ থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। যেসব উদ্যোক্তারা সফল হন, তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতা লিখে রাখেন। প্রায়শই তাঁরা সেসব অভিজ্ঞতা বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান। তাঁরা চান যে আপনি তাদের ভুল এবং সাফল্য থেকে শিখুন। তাঁদের গল্পগুলো বাস্তব গল্প। আপনার নতুন উদ্যোগে এই গল্পগুলো অনেক বেশি প্রেরণাদায়ী হবে।

উদ্যোক্তা হওয়ার ইভেন্টগুলোতে যোগ দিন

যে অবস্থায় আছেন তার থেকে আরও ভালো হতে চাইলে, উদ্যোক্তা হওয়ার নানা ধরনের কর্মশালায় যোগ দেওয়া উচিত। ট্রেড শো, সম্মেলন, ওয়েবিনারয়ের মতো ইভেন্টগুলোতে নিজের উদ্যোক্তা মনকে স্থির করে। এই জাতীয় ইভেন্টগুলো নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ। এগুলো সাফল্যের জন্য আপনাকে প্রস্তুত করবে।

টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখুন

সময়ের সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি কোন কাজটি কখন করতে হবে, তা জানা থাকা উদ্যোক্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে উদ্যোগের ধরন অনুযায়ী নিজেকেই সময় ব্যবস্থাপনার কৌশলগুলো আয়ত্ত করে নিতে হবে।

নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজু

উদ্যোক্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হলো সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে আপনার এই দক্ষতার প্রমাণ মিলবে। পাশাপাশি, আপনাকে প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা গ্রহণ করা শিখতে হবে।

ব্যবসায়ের প্রতিটি দিক বুঝে নিন

যে উদ্যোগটি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সেটি সম্পর্কে পুরোপুরি জানার বিকল্প নেই। অন্যকে দিয়ে সবকিছু তৈরি করে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কর্মীদের কাজের ধরন কী তা দেখার জন্য বিভিন্ন ভূমিকায় তাদের পাশাপাশি কাজ করতে হবে। দলের সব বিষয়ে ধারণা তৈরি করতে পারলে দল হিসেবে বন্ধন গড়ে উঠবে।

সুশৃঙ্খল হোন

নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাইলে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল হওয়া জরুরি। পেশাগত ও ব্যক্তিগত উভয় ক্ষেত্রে সময়ের যথাযথ মূল্য দিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয়িত সময় যথাযথ হওয়া দরকার। আর দরকার প্রচুর ঘুম ও ভারসাম্যপূর্ণ খাবার।

অভিনব আইডিয়া বেছে নিন

ব্যবসার ক্ষেত্রে আইডিয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিজস্ব উদ্যোগের ক্ষেত্রে কিছু অভিনব আইডিয়া এমন হতে পারে—

ক. অডিও বুক সার্ভিস

কর্মব্যস্ত এই যুগে বই পড়ার প্রচণ্ড ইচ্ছে থাকার পরও সময় ও ধৈর্য অনেকেরই থাকে না। তাদের জন্য অডিও বুক সার্ভিসটি হবে আশীর্বাদস্বরূপ। একজন উদ্যোক্তা মিক্সআপ অডিও ওয়েবসাইটে রেকর্ডকৃত বই আপলোড করতে পারেন। তাছাড়া অডিও বুকের নিজস্ব ওয়েবসাইট খোলা যেতে পারে। এটিও আরেকটি সম্ভাবনাময় বাণিজ্য ক্ষেত্র।

খ. থামনেইল তৈরি

ইউটিউবারের সংখ্যা বাড়ায় অনলাইন জগতে থামনেইলের চাহিদা বাড়ছে। সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন নতুন উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে যারা লোগো বা গ্রাফিক্সের কাজ জানেন তাদের জন্য এই ব্যবসাটি অত্যন্ত উপযোগী।

গ. পোষা প্রাণী সংক্রান্ত

বাংলাদেশে বর্তমানে অনেকেই পোষা প্রাণী রাখছেন। তাই প্রফেশনাল ‘পেট ফটোগ্রাফি’ শুরু করতে পারেন। আবার দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে পোষা প্রাণীকে নিয়ে বিপাকে পড়েন মালিকেরা। এদের সহযোগিতায় পেট-সিটিং মার্কেট প্লেসের ব্যবসা শুরু করা যায়। পোষা প্রাণীর খাবার, চিকিৎসা, ফটোগ্রাফি ও সিটিংয়ের ব্যবস্থা নিয়ে অ্যাপও খোলা যায়।

মোদ্দা কথা হলো, উদ্যোক্তা হতে চাইলে সৃজনশীল ভাবনার বিকল্প নেই। সময়ের প্রয়োজন বুঝে যারা এগিয়ে যেতে পারেন, তাদের জন্য সাফল্যের দরজা খুলবে, এটা নিশ্চিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button