ন্যানোপ্রযুক্তি কাকে বলে? হ্যাকিং একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড— ব্যাখ্যা করো।

ন্যানোপ্রযুক্তি কাকে বলে? হ্যাকিং একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড— ব্যাখ্যা করো।

জনাব আহম্মেদ কোম্পানির উঁচু পদে কর্মরত। একদিন তিনি কোম্পানিটির ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে গেলেন। ফ্যাক্টরীতে প্রবেশের সময় নির্দিষ্ট যন্ত্রের দিকে তাকানোর ফলে প্রবেশদ্বার খুলে গেল। ফ্যাক্টরীর ভিতরে প্রবেশের পর সে খেয়াল করল উৎপাদিত ভারী পণ্য স্থানান্তর করতে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছে। সে একটি যন্ত্রের কল্পন করলো যে সহজেই পণ্যসমূহ স্থানান্তর করতে পারে। ফ্যাক্টরী হতে বের হওয়ার সময় সে অপর একটি যন্ত্রের উপর আঙুল রাখার পর ফ্যাক্টরীর প্রবেশদ্বার খুলে গেল।

ক. ন্যানোপ্রযুক্তি কাকে বলে?
খ. হ্যাকিং একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড— ব্যাখ্যা করো।
গ. জনাব আহম্মেদ সাহেবের কল্পনায় তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক কোন প্রবণতা ফুটে উঠেছে— ব্যাখ্যা করো ।
ঘ. ফ্যাক্টরির নিরাপত্তায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ব্যবহৃত পদ্ধতি দুইটির মধ্যে কোনটি বেশি গ্রহণযোগ্য তা বিশ্লেষণ করো।

ক. ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ন্যানোমিটার স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়।

আরও পড়ুন :  সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান

খ. প্রোগ্রাম রচনা ও প্রয়োগের মাধ্যমে কোন কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের ক্ষতিসাধন করাকে হ্যাকিং বলা হয়। হ্যাকিং একটি নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ড কারণ ইন্টারনেটে হ্যাকিং ব্যাপকভাবে হওয়ার কারণে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে, এমনকি তথ্য নষ্ট ও চুরি হচ্ছে। এছাড়া ইন্টারনেটে পথিমধ্যে তথ্য বিকৃতি ঘটানোর নজির ও রয়েছে যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও লজ্জাজনক। তাই বিভিন্ন দেশে হ্যাকিং একটি দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গ. জনাব আহম্মেদ সাহেবের কল্পনায় তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় রোবোটিক্স সম্পর্কে ফুটে উঠেছে। রোবোটিক্স হলো রোবট টেকনোলজির একটি শাখা সেখানে রোবটের গঠন, কাজ, বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করা হয়। রোবোটিক্স বা রোবটবিজ্ঞান হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রসমূহ ডিজাইন ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিজ্ঞান। আর রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা- স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব।

আরও পড়ুন :  ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের ৪র্থ অধ্যায় : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন

বিভিন্ন শিল্পকারখানায় যেসব জিনিসপত্র মানুষের পক্ষে ওঠানামা ও স্থাপনের জন্য কঠিন সেসব ক্ষেত্রে রোবট ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে যানবাহন বা গাড়ির কারখানায় রোবট ব্যবহৃত হয়। কারখানার ঝুঁকিপূর্ণ জিনিসপত্র সংযোজন, প্যাকিং এবং জিনিসপত্র পরিবহনের জন্য রোবট ব্যবহার ফলপ্রসূ।

ঘ. ফ্যাক্টরির নিরাপত্তায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ব্যবহৃত পদ্ধতি দুটি হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়।

বায়োমেট্রিক্স এর মূল কাজই হচ্ছে প্রতিটি মানুষের যে অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে তাকে খুঁজে বের করা এবং প্রতিটি মানুষকে সেই বৈশিষ্ট্যের আলোকে পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। বায়োমেটিক্স সিস্টেমে শনাক্তকরণে যেসব বায়োলজিক্যাল ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো—১. শারীরবৃত্ত: মানুষের মুখমণ্ডল, হাতের আঙুল, হাতের রেখা, রেটিনা, আইরিস, শিরা এবং ২ আচরণগত ব্যক্তির আচরণ, হাতের লেখা, কথাবলা বা চলাফেরা স্টাইল।

আরও পড়ুন :  নার্সিং পড়তে চাইলে যে বিষয়গুলো আপনার জানা প্রয়োজন

উদ্দীপকে ফ্যাক্টরির প্রবেশের সময় নির্দিষ্ট যন্ত্রের দিকে তাকানোর ফলে প্রবেশদ্বার খুলে গেল। সুতরাং এখানে চোখের রেটিনা বা আইরিস ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে বের হওয়ার সময় হাতের আঙ্গুল ব্যবহৃত হলো। এখানে প্রবেশের ও বের উভয় ক্ষেত্রেই বায়োমেট্রিক্স ব্যবহৃত হয়েছে। প্রবেশের সময় ব্যবহৃত চোখের রোটিনা দ্বারা নিরাপত্তায় ব্যবহৃত মেশিন অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

তাছাড়া এই পদ্ধতিতে ডেটা রিকগনিশন ও ভেরিফিকেশন করা ঝামেলাপূর্ণ। অন্যদিকে বের হওয়ার সময় ব্যবহৃত আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার মেশিনটি কম দামী ও সহজ লভ্য। তাছাড়া এখানে ডেটা রিকগনিশন ও ভেরিফিকেশন করা অত্যন্ত সহজ। তাই ফ্যাক্টরি থেকে বের হওয়ার সময় ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি অধিকতর গ্রহনযোগ্য।

Leave a Reply