যেসব কারণে একজন চাকুরী প্রার্থীর ওপর VIVA বোর্ড বিরক্ত হতে পারে জেনে রাখুন।

যেসব কারণে একজন চাকুরী প্রার্থীর ওপর VIVA বোর্ড বিরক্ত হতে পারে জেনে রাখুন।

যে যে কারণে VIVA বোর্ড একজন চাকুরী প্রার্থীর ওপর বিরক্ত হয় যেসব কারণ চিহ্নিত করে আজকের পর্বটি সাজানো হয়েছে। যারা ব্যাংক বা যেকোনো চাকুরী পরীক্ষার ভাইবা দিতে যাবেন তারা অবশ্যই লেখাটি একবার পড়বেন। আশা করি লেখাটি আপনাদের সহায়ক হবে।

নিজের পরিচয় দেওয়া : VIVA বোর্ড পরীক্ষার্থীর কাছে অনেক সময় পরিচয় বা একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে চান।পরিচয় দেয়ার সময় একজন পরীক্ষার্থী যদি ঠিকমত বা ক্রমানুসারে নিজের পরিচয় উপস্থাপন করতে না পারে তখন বোর্ড বিরক্ত হতে পারে।এ সময় যে ইস্যুটা প্রথমে বলা দরকার সেটা পরে বা পরের ইস্যু আগে বললে বোর্ড বিরক্ত হয়।কাজেই এ বিষয়টির সঠিক উপস্থাপনের জন্য পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন।

সিদ্ধান্তহীনতা : VIVA বোর্ডের কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে ইতস্তত বা সিদ্ধান্তহীনতায় বোর্ড বিরক্ত হতে পারে। প্রশ্ন এমন হতে পারে–একজন ব্যাংক অফিসার হিসেবে গ্রাহক সেবায় আপনার ভূমিকা রাখার সুযোগ কতটুকু?এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে যদি পরীক্ষার্থী কারণ ছাড়াই সময় নেন বা ইতস্তত বোধ করেন অথবা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন সেক্ষেত্রে বোর্ড বিরক্ত হতে পারে। এতে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

মুদ্রা দোষ : VIVA পরীক্ষার্থীর মুদ্রাদোষ থাকলে বোর্ডের বিরক্তি উদ্রেক হতে পারে । কথা বলার সময় তোতলামি , চোখ , হাত , মুখের দ্বারা বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি , পা নাড়ানো , কিছুক্ষণ পর পর হাত দিয়ে চুল ঠিক করা , নখ কাটাসহ অনেক অবাঞ্চিত আচরণ ব্যাংক কর্মকর্তার শোভা পায় না।মোটকথা , VIVA বোর্ডে আপনার Aproach টা হবে একজন ব্যাংক কর্মকর্তার মতো। বোর্ড সদস্যরা সার্বিকভাবে আপনার মাঝে প্রকৃত ব্যাংক কর্মকর্তার অবয়ব দেখতে চান । যদি কারো মধ্যে সেটি ফুটে উঠে তখন বোর্ড তাকে চাকরি দেয়ার ব্যাপারে দৃশ্যত: পছন্দ করে ফেলেন । কাজেই মুদ্রাদোষ বর্জনীয়।

আরও পড়ুন :  সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর

পারিপার্শ্বিক জ্ঞান : পরীক্ষার্থীর পারিপার্শ্বিক জ্ঞান না থাকলে বোর্ড বিরক্ত হতে পারে । পরীক্ষার্থীর নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা হলের নাম বা ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক বা অনার্স/মাস্টার্সে পঠিত বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এসব সাধারণ বিষয়ে পরীক্ষার্থীর অপারগতা প্রকাশ দূষণীয়। ডিপার্টমেন্টের বিখ্যাত কোনো শিক্ষকের কৃতিত্ব তাৎক্ষণিক না বলতে পারা পরীক্ষার্থীর দুর্ভাগ্য। ব্যাংক কর্মকর্তারা হবেন সবদিকে সচেতন ও চোখ- কান খোলা রাখা একজন পরিপূর্ণ মানুষ।

প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর না দেওয়া/To the Point উত্তর না দেওয়া : বোর্ড পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে To The Point উত্তর আশা করে। প্রশ্নের উত্তরে যা চাওয়া হয়েছে তার অতিরিক্ত বলা বা কম বলা দুর্বলতার পরিচায়ক । আর উত্তর না জানা থাকলেও জানার ভান করলে বোর্ড বিরক্ত হয়। আবার উত্তরটাকে বেশি সময় নিয়ে বলার জন্য একই বিষয় ঘুরে ফিরে পুনরুক্তি করলে বোর্ড বিরক্ত হয় । তাই পরীক্ষার্থীদের কম শব্দে কম কথায় To The Point -এ উত্তর দেওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

আরও পড়ুন :  Current Affairs August 2021 50 MCQ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স আগস্ট ২০২১

অনার্স / মাস্টার্স পাস করা ব্যক্তির যা জানা উচিত তা না জানা : বোর্ড চায় ,একজন পরীক্ষার্থীর সব জানা উচিত নয় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সব ইস্যুতে কিছু কিছু জানা উচিত । অর্থাৎ Jack of All trade but master of None হওয়া উচিত। একজন ছাত্রের এদেশের সাধারণ ইতিহাস , সংবিধান , অর্থনীতি , সংস্কৃতি , ধর্ম সম্পর্কে কিছু কিছু জানা উচিত। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞানের ধারণা না থাকলে বোর্ড বিরক্ত হয় । বোর্ড ধারণা করে যে , এ ধরনের ছেলে ব্যাংক অফিসার হিসেবে ভালো করতে পারবে না।

দেশ বিদেশ সম্পর্কে ABC জ্ঞান না রাখা : পরীক্ষার্থীর দেশ বিদেশের বর্তমান হালহকিকত সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। দেশ বিদেশের রাজনীতি সম্পর্কে Follow up কারো যদি না থাকে তবে বোর্ড তাকে অসচেতন প্রার্থী হিসেবে ধরে নেয়। কাজেই আন্তর্জাতিক ,অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং বিষয়গুলোতে প্রার্থীদের সম্যক ধারণা থাকতে হবে।

আরও পড়ুন :  পায়ের ব্যায়াম করার সময় যে ভুলগুলো কখনো করবেন না

অন্যান্য কারণ : অনেকে প্রশ্নকারীর প্রশ্নে অমনোযোগী থাকেন কিংবা কি প্রশ্ন করছেন তা না খেয়াল করে শুনতে না পাওয়ার অজুহাতে চুপ করে বসে থাকেন , এতে বোর্ড বিরক্ত হন। কাজেই প্রার্থীর সবসময় চোখ কান খোলা রাখা উচিত। কিছু কিছু চাকরিপ্রার্থী বোর্ডকে তার ভালো রেজাল্টের কথা শুনিয়ে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করতে চেষ্টা করেন যেটা বিরক্তি উদ্রেকের অন্যতম কারণ।কেউ ভাল রেজাল্ট করলেই তাকে বোর্ড পছন্দ করবে না।অনেক সময় দেখা যায় , ভাল রেজাল্ট অর্জনকারীরা ভাল ব্যাংকার হতে পারেন না।তাই এমন Tendency পরিবর্তন করা উচিত পরীক্ষার্থীদের। VIVA বোর্ডে অনেক পরীক্ষার্থী চাকরির জন্য কাকুতি মিনতি করে চাকরি দাবি করে বসে,আবার অনেকে কোন চাকরিতে চাকরিরত থাকলে নিজেকে বোর্ডের সামনে Dashingly উপস্থাপন করেন , যেন বোর্ডকে তারা কিছুই মনে করেন না , এমন দুই আচরণই বোর্ডের চরম বিরক্তির কারণ।এ ব্যাপারে বোর্ডের সামনে পরীক্ষার্থীদের কথা বলার সময় সতর্ক থাকা উচিত।

Leave a Reply