লবঙ্গ এর পুষ্টিগুণ | লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম | লবঙ্গ স্বাস্থ্য উপকারিতা

লবঙ্গ এর পুষ্টিগুণ | লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম | লবঙ্গ স্বাস্থ্য উপকারিতা

লবঙ্গ এর পুষ্টিগুণ : আমরা প্রায় সকলেই ‘লং’ এর সাথে পরিচিত। আর গৃহিণীদের তাে না-চেনার কোনাে কারণ নেই। লবঙ্গ’কেই অনেকে লং বলেন। এর আগার অংশ খাজকাটা, দেখতে অনেকটা ছােট নাকফুলের মতাে। এর রং কালচে খয়েরি। মাঝারি আকারের লবঙ্গ গাছ সাধারণত ১৫-২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। লবঙ্গের গন্ধযুক্ত এ গাছের পাতা দেখতে অনেকটা বকুল গাছের পাতার মতাে। ডালের আগার দিকে থােকা থােকা ফুল আসে। বোঁটাসহ ফুলের কুঁড়ি শুকিয়ে গেলেই তা’ লবঙ্গে পরিণত হয়। লবঙ্গের স্বাদ ঝাঁঝালাে। এটি সাধারণত গরম মসলা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। যারা গান করেন, তারা গলার স্বর পরিষ্কার রাখার জন্য সবসময় একটি লবঙ্গ মুখে পুরে রাখেন। এমনকি মুখের দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যও অনেকে লবঙ্গ মুখে পুরে রাখেন। লবঙ্গের রয়েছে নানা ঔষধি গুণ, যা নানা রােগ উপশম করে।

আরও পড়ুন :  যেকোনো পরীক্ষায় আসার মত কিছু বাংলা শব্দের অর্থ।

পেট ফাঁপা :

অনেক সময় পেট ফেপে থাকে ও পেটের ভেতর গড় গড় করে শব্দ হয়। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়। এ অবস্থায় কিছু পরিমাণ লবঙ্গ অল্প ভেজে গুঁড়া করে ৭ গ্রাম পরিমাণ সকাল বিকাল দু’বেলা পানিসহ খেলে এ সমস্যা। ভালাে হয়ে যাবে।

আমজ শূল :

পায়খানা হবার সময় পেটে মােচড় দিয়ে ব্যথা করলে। তাকে আমজ শূল বলে। এ রকম হলে ২-৩ টি লবঙ্গ। বেটে তাতে অল্প পরিমাণ গরম পানি মিশিয়ে সকাল বিকাল দু’বেলা খেতে হবে। এভাবে ৫ দিন খেলে রােগের উপশম হবে।

কাশি :

অল্প অল্প কাশির সাথে বুকে ব্যথা যদি থাকে, তাহলে নিউমােনিয়ার ভয় করাটাই স্বাভাবিক। এ রকম হলে ৪ গ্রাম লবঙ্গ গুঁড়া করে সামান্য গরম পানিসহ দু’বেলা খেলে কাশি ও বুকের ব্যথাটা চলে যাবে।

আরও পড়ুন :  জৈবিক নৃবিজ্ঞান: একটি বিস্তারিত পর্যালোচনা

পিপাসা রােগ :

অনেকেরই পিপাসা রােগ থাকে। এতে ঘন ঘন পানির পিপাসা লাগে। ধরে নিতে হবে এরা প্রায়ই চোরা অম্বলে ভােগেন। এর পরিণতি খুব একটা ভালাে না। এরকম দেখা গেলে ৪ গ্রাম পরিমাণ লবঙ্গ গুঁড়া করে সাথে ২-৪ ফোঁটা মধু মিশিয়ে সকাল বিকাল জিভ দিয়ে চেটে খেলে পিপাসা রােগ সেরে যাবে।

অরুচি :

কখনাে কখনাে ভাত, রুটি, মাছ, মাংস বা মিষ্টি জাতীয় খাবারসহ কোনাে কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না। সবকিছুতেই যেন অরুচি ভাব। এ রকম হলে লবঙ্গ ভেজে গুঁড়া করে নিন। ঐ গুঁড়া ৪ গ্রাম পরিমাণ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। খালি পেটে ও দুপুরে খাবারের পর খেলে। খাবারে রুচি ফিরে আসবে।

আরও পড়ুন :  ICC World Cup 2023

মাথার যন্ত্রণা :

যে কোনাে কারণে মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। ধোঁয়া, রােদ, ঠাণ্ডা লাগার ফলে বা অন্য কোনাে কারণে কখনাে কখনাে মাথায় যন্ত্রণা শুরু হয়। এছাড়াও নানা কারণে এ রােগ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে লবঙ্গ গুঁড়া ৪ গ্রাম পরিমাণ দিনে ২ বার, প্রয়ােজনে ৩ বার গরম পানিসহ খেলে উপশম হবে।

দাঁত ব্যথা :

দাঁতে ব্যথা হলে প্রথমে গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ২/৩ টি লবঙ্গ থেঁতাে করে। দাঁতের গােড়ায় চেপে রাখলে ব্যথা তাড়াতাড়ি সেরে যাবে। এবার আর মনে রাখবেন, যাদের গ্যাস্ট্রিক আছে তাদের লবঙ্গ খাওয়া ঠিক না। লবঙ্গ দীর্ঘদিন খেলে চুল পড়ে যায়।

দেখলেন তাে! ঝাঁঝালাে লবঙ্গের কেমন মিষ্টি মিষ্টি সুখ! ছােট-খাটো অসুখে ব্যবহার করতে পারেন লবঙ্গের মতাে উপকারী মসলা।

Leave a Reply