শিক্ষা

শিক্ষার্থী শিক্ষকের মানস সন্তান

শিক্ষার্থী শিক্ষকের মানস সন্তান

ভাব-সম্প্রসারণ : সভ্যতার শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে চলছে শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু। শিক্ষার মধ্য দিয়ে এককালের আদিম মানুষ তার আদিমতা থেকে মুক্তি পেয়েছে। আজকালের দিনের সভ্যতায় সে পদার্পণ করতে পেরেছে। শিক্ষক মানুষের দ্বিতীয় জন্মদাতা। বাবা-মা সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই, কিন্তু প্রকৃত মানুষ হিসেবে তার মানবিক দিক থেকে শুরু করে জীবন-গঠনের সকল বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলেন একজন শিক্ষক। ফলে শিক্ষার্থী হয়ে ওঠে শিক্ষকের মানস সন্তান। এজন্য শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর।

মানুষ জন্ম মাত্রই মানুষ নয়। সেও অপরাপর জীবের মতো একটি প্রাণী মাত্র। শিক্ষকের যাদুর কাঠির প্রত্যাশিত স্পর্শে সে প্রাণী মানুষে পরিণত হয়। শিক্ষক এমন এক পরশ পাথর সদৃশ যার স্পর্শে জন্মসূত্রে মানবাকৃতির প্রাণীটি বুদ্ধিদীপ্ত মানুষে পরিণত হয়। কেননা, শিক্ষক মানুষকে মনুষ্যত্বলোকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি মানুষ হিসেবে আমাদের করণীয় কাজগুলো কী হতে পারে তার পথ জানিয়ে দেন। তিনি শেখান- কি করে মানুষ হিসেবে নিজেকে গঠন করা যায়, কী করে জীবনকে সার্থক ও সুন্দরভাবে উপভোগ করতে হয়, কী করে মনের মালিক হয়ে অনুভূতি ও কল্পনার রস আস্বাদন করা যায়। শিক্ষক শুধু প্রাণীত্বের বাঁধন থেকেই মুক্তি দেন না, মনুষ্যত্বের উচ্চ শিখড়েও তিনি তাকে নিয়ে যান। শিক্ষক মানুষের মনের আলো, পথের দিশা; জীবন-যাপন পদ্ধতির নির্দেশক। তিনি তাঁর স্বীয় মেধা, শিক্ষা ও মনননের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীকে গড়ে তুলেন অনুরূপভাবে। আর এজন্যেই শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের মানস সন্তান হিসেবে গণ্য করা হয়।

শিক্ষকের বিদ্যা-বুদ্ধি ছাত্রের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। তাই মনুষ্যত্বের এ অমীয় ফল ভোগকারী ব্যক্তি ও জাতিগতভাবে মানুষ শিক্ষকের কাছে ঋণী। এ জন্য প্রতিটি মানুষের কাছে শিক্ষক পূজনীয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button