স্মার্টফোন

স্মার্টফোনের ১০টি গোপন ফিচার যা আপনি জানেন না!

স্মার্টফোনের ১০টি গোপন ফিচার যা আপনি জানেন না!

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি কাজের জন্য আমরা স্মার্টফোন ব্যবহার করি—ফোন কল, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, শপিং, বিনোদন, এবং আরও অনেক কিছু। তবে, স্মার্টফোনের অধিকাংশ ব্যবহারকারী তার ফোনের সকল ফিচার সম্পর্কে জানেন না। অনেক সময় স্মার্টফোনের মধ্যে এমন কিছু গোপন ফিচার থাকে যা ব্যবহারকারী জানলে তাদের স্মার্টফোনের ব্যবহার আরও দ্রুত, সুরক্ষিত এবং কার্যকরী হয়ে উঠবে।

এই লেখায় আমরা স্মার্টফোনের এমন ১০টি গোপন ফিচার নিয়ে আলোচনা করব যা সাধারণত ব্যবহারকারীরা জানেন না বা অনেকে এগুলি ব্যবহার করেন না। এই ফিচারগুলি আপনার স্মার্টফোনের কার্যকারিতা এবং সুবিধা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

স্মার্টফোনের গোপন ফিচার কেন গুরুত্বপূর্ণ?

স্মার্টফোনের গোপন ফিচারগুলো ব্যবহারকারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি:

  1. ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করে
    স্মার্টফোনের অনেক গোপন ফিচার থাকলেও, সেগুলোর অধিকাংশই ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও স্মার্ট করতে সাহায্য করে। যেমন, কিছু ফিচার ফোনের গতি বাড়াতে সাহায্য করে, অন্যদিকে কিছু ফিচার প্রাইভেসি বা সিকিউরিটি বাড়ানোর কাজ করে।
  2. বেসিক ফিচারগুলির বাইরে নতুন সুবিধা প্রদান করে
    স্মার্টফোনের অনেক ফিচার ব্যবহারকারী প্রথমে জানেন না, কিন্তু এগুলি ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা অনেক উন্নত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্ক্রিন রেকর্ডিং, দ্রুত নেভিগেশন, এবং হিডেন ক্যামেরা ট্রিকসের মতো ফিচারগুলি অনেক কাজ সহজ করে দেয়।
  3. ব্যাটারি সাশ্রয় এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
    স্মার্টফোনের ব্যাটারি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় অনেক সময়। তবে, কিছু গোপন ফিচার ব্যবহার করে আপনি ব্যাটারি আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে পারেন, যেমন ব্যাটারি সেভিং মোড অথবা সিস্টেম ক্লিনআপ।
  4. প্রাইভেসি এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে
    প্রাইভেসি এবং সুরক্ষা বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের একটি বড় চিন্তা। স্মার্টফোনের কিছু গোপন ফিচার যেমন, ডিভাইস লকিং, এনক্রিপশন, বা গোপন মোড ব্যবহার করলে আপনার ডেটা এবং তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
  5. ট্রিক্স এবং শর্টকাটের মাধ্যমে দ্রুত কাজ করা যায়
    স্মার্টফোনের কিছু গোপন শর্টকাট এবং ট্রিক্স ব্যবহার করে আপনি কার্যক্রম দ্রুত এবং আরও দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারেন। এটি আপনার সময় এবং প্রচেষ্টা বাঁচায়, ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও ফলপ্রসূ হয়।
  6. অ্যাপসের মধ্যে লুকানো ফিচারগুলিও কার্যকরী
    অনেক স্মার্টফোন অ্যাপে এমন কিছু গোপন ফিচার থাকে যা আপনি সাধারণভাবে ব্যবহার করেন না। এসব ফিচারগুলি অ্যাপের কার্যকারিতা এবং সুবিধা বাড়াতে সাহায্য করে, যেমন অটোমেটিক সিঙ্ক, ডার্ক মোড, এবং অন্যান্য উন্নত সেটিংস।

১০টি গোপন ফিচার

১. হিডেন ক্যামেরা ট্রিকস

স্মার্টফোনের ক্যামেরার অনেক হিডেন ফিচার রয়েছে যা সাধারণ ব্যবহারকারীরা জানেন না। কিছু স্মার্টফোনে অতিরিক্ত ক্যামেরা সেটিংস থাকে যা আপনার ছবি তোলার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে পারে।

আরও পড়ুন : ২০২৫ সালের সেরা ১০টি গ্যাজেট যা আপনার জীবনকে সহজ করবে

  • প্রো মুড (Pro Mode): অনেক স্মার্টফোনে প্রো মুড রয়েছে যা আপনাকে ক্যামেরার ISO, অ্যাপারচার, শাটার স্পিড ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়। এটি বিশেষভাবে ব্যবহারকারীদের হাতে ক্যামেরার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়, যা পেশাদার ফটোগ্রাফির জন্য খুবই সহায়ক।
  • গোপন ক্যামেরা মোড: কিছু ফোনে গোপন ক্যামেরা মোড রয়েছে যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ছবি বা ভিডিও নিতে সক্ষম। এটি সাধারণত পর্দার নিচে বা ফোনের ব্যাক প্যানেলে লুকানো থাকে। তবে, এটি ব্যবহারের সময় অবশ্যই প্রাইভেসি রক্ষায় সতর্ক থাকতে হবে।
  • নাইট মোড: রাতে ভাল ছবি তোলার জন্য বিশেষ ধরনের নাইট মোড রয়েছে যা কম আলোতে আরও স্পষ্ট ছবি তোলার জন্য অটো এক্সপোজার এবং লং শাটার স্পিড ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন :  ২০২৫ সালের সেরা ১০টি গ্যাজেট যা আপনার জীবনকে সহজ করবে

২. গোপন কোড ব্যবহার করে ফিচার আনলক

অনেক স্মার্টফোনে এমন গোপন কোড রয়েছে যা ফোনের ইনফরমেশন এবং ফিচার আনলক করতে সাহায্য করে।

  • USSD কোডস (Unstructured Supplementary Service Data): কিছু বিশেষ কোডের মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার স্টেটাস পরীক্ষা করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, *#06# কোডটি ডায়াল করলে আপনার ফোনের IMEI নম্বর দেখতে পারবেন।
  • ডেভেলপার মোড (Developer Mode): ডেভেলপার মোড আনলক করার জন্য ## 784## বা ## 7594## কোড ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ফোনের সেটিংসে কিছু অতিরিক্ত অপশন আনলক করে।
  • ফ্যাক্টরি রিসেট (Factory Reset): কিছু কোড দিয়ে ফোনের ফ্যাক্টরি রিসেট করা সম্ভব, যা ফোনের সব ডাটা মুছে ফেলে এবং ফোনকে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে আনে।

৩. দ্রুত টাইপিং এর জন্য কীবোর্ড শর্টকাট

স্মার্টফোনের কীবোর্ডে কিছু শর্টকাট রয়েছে যা টাইপিং প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং সহজ করে তোলে।

  • স্লাইড টাইপিং: অনেক কীবোর্ড অ্যাপ্লিকেশন, যেমন গুগল কীবোর্ড বা স্যামসাং কীবোর্ড, স্লাইড টাইপিং সাপোর্ট করে। আপনি একে অপরের উপর হাতের আঙুল সরিয়ে দ্রুত শব্দ লিখতে পারেন, যা টাইপিংয়ের সময় কমায়।
  • শর্টকাট তৈরি করা: আপনি এক বা একাধিক অক্ষরের জন্য কাস্টম শর্টকাট সেট করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, “omw” টাইপ করলে এটি “On my way” হিসেবে পূর্ণতা পাবে।
  • স্বয়ংক্রিয় সংশোধন (Auto-correction): কীবোর্ডে স্বয়ংক্রিয় সংশোধন চালু করলে ভুল টাইপ করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক হয়ে যাবে, যা টাইপিং দ্রুত করতে সাহায্য করবে।
  • কীবোর্ড সেটিংস পরিবর্তন: কীবোর্ডের সাইজ এবং লেআউট পরিবর্তন করে ব্যবহারকারীরা আরও আরামদায়কভাবে টাইপ করতে পারে।

৪. ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘায়িত করার গোপন উপায়

স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ অনেকসময় আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু সহজ কৌশল রয়েছে যা ব্যাটারি সাশ্রয়ী করতে সাহায্য করে।

  • ব্যাটারি সেভার মোড: অধিকাংশ স্মার্টফোনে “ব্যাটারি সেভার” বা “ব্যাটারি সঞ্চয়” মোড রয়েছে, যা ব্যাটারির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ কার্যক্রম সীমিত করে, ডিসপ্লে ব্রাইটনেস কমায়, এবং সিস্টেমের অপ্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া বন্ধ করে।
  • অটো ব্রাইটনেস: স্মার্টফোনের ডিসপ্লে ব্রাইটনেস অটো-এডজাস্ট সেটিংয়ে রাখা হলে ব্যাটারি সাশ্রয় হতে পারে, কারণ এটি পরিবেশের আলো অনুযায়ী ডিসপ্লে লাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করে।
  • অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস বন্ধ করা: ব্যাটারি সাশ্রয়ের জন্য এমন অ্যাপস বন্ধ রাখা উচিত যা ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে এবং ব্যাটারি খরচ করে। অ্যাপ ম্যানেজার বা সেটিংসে গিয়ে আপনি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ করতে পারেন।
  • এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহার করা: যদি আপনি কোন নেটওয়ার্ক সংযোগের প্রয়োজন না থাকে, তাহলে এয়ারপ্লেন মোড চালু করা ব্যাটারি সাশ্রয়ের একটি সহজ উপায়।
  • স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা: স্মার্টফোনের স্টোরেজে অতিরিক্ত অ্যাপ্লিকেশন বা ডাটা জমে গেলে ফোনের পারফরম্যান্স ধীর হয়ে যায় এবং ব্যাটারি দ্রুত শেষ হতে পারে। তাই অপ্রয়োজনীয় ডাটা মুছে ফেললে ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি পায়।

৫. গোপন মোডে ব্রাউজিং (প্রাইভেসি টিপস)

স্মার্টফোনে গোপন বা প্রাইভেসি ব্রাউজিং মোড ব্যবহার করে আপনি আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিং হিস্ট্রি এবং অন্যান্য ডেটা লুকিয়ে রাখতে পারেন।

  • ইনকগনিটো মোড (Incognito Mode): গুগল ক্রোম, মোজিলা ফায়ারফক্স, সাফারি, ইত্যাদিতে ইনকগনিটো মোড বা প্রাইভেট ব্রাউজিং মোড ব্যবহৃত হয়। এই মোডে ব্রাউজিং করার সময় আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রি, কুকি, ক্যাশ বা পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ হয় না।
  • VPN (Virtual Private Network): VPN ব্যবহার করে আপনি আপনার ইন্টারনেট কানেকশন এনক্রিপ্ট করতে পারেন, যা আপনার ব্রাউজিং ডেটা ইন্টারনেটে তৃতীয় পক্ষের নজর থেকে লুকিয়ে রাখে। এটি আপনার অনলাইন প্রাইভেসি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • অ্যাড ব্লকার ব্যবহার: কিছু অ্যাড ব্লকার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি অপ্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন থেকে মুক্ত থাকতে পারেন, যা আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে সাহায্য করবে এবং ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতাকে আরও নিরাপদ ও দ্রুত করবে।
আরও পড়ুন :  ২০২৫ সালের সেরা ১০টি গ্যাজেট যা আপনার জীবনকে সহজ করবে

৬. এক ক্লিকে স্ক্রিন রেকর্ডিং

স্মার্টফোনে স্ক্রিন রেকর্ডিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার, যা আপনি বিভিন্ন কাজ বা মিটিং রেকর্ড করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

  • স্ক্রিন রেকর্ডিং টুল: বেশিরভাগ আধুনিক স্মার্টফোনে স্ক্রিন রেকর্ডিং একটি বিল্ট-ইন ফিচার হিসেবে থাকে। আপনি সহজেই স্ক্রিন শট বা স্ক্রিন রেকর্ড করতে পারেন, যা কোনও অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করা ছাড়াই ব্যবহার করা যায়। এটি সাধারণত নোটিফিকেশন প্যানেলে স্ক্রিন রেকর্ড বাটন থেকে এক ক্লিকে চালু করা যায়।
  • ভিডিও এডিটিং: স্ক্রিন রেকর্ডিং শেষে, আপনি যেকোনো ভিডিও এডিটিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রেকর্ড করা ভিডিও কেটে, ট্রিম করতে এবং সাউন্ড এফেক্ট যোগ করতে পারেন।
  • শর্টকাট সেট করা: কিছু স্মার্টফোনে স্ক্রিন রেকর্ডিংয়ের জন্য শর্টকাট বা বিশেষ জেস্টার সেট করা যায়, যেমন ভলিউম ডাউন + পাওয়ার বাটন একসাথে চাপলে রেকর্ডিং শুরু হয়। এটি দ্রুত ও সহজ করে তোলে।

৭. লুকানো ফাইল এবং ফোল্ডার আনলক করা

স্মার্টফোনে লুকানো ফাইল বা ফোল্ডার রাখতে চাইলে আপনি কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।

  • ফোল্ডার লক অ্যাপ: কিছু অ্যাপ্লিকেশন, যেমন “App Lock” বা “Vault,” আপনাকে গোপন ফাইল বা ফোল্ডার লুকিয়ে রাখার সুযোগ দেয়। আপনি পিন বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সেগুলির অ্যাক্সেস লক করতে পারেন।
  • গোপন ফোল্ডার ফিচার: অনেক ফোনে ইনবিল্ট গোপন ফোল্ডার ফিচার থাকে, যেমন স্যামসাং-এর “Secure Folder” বা হুয়াওয়ে’র “Private Space।” এই ফোল্ডারগুলোতে আপনি আপনার ব্যক্তিগত ফাইলগুলি সুরক্ষিত রাখতে পারেন।
  • ফাইল হিডিং টিপস: আপনি আপনার ফাইল বা ফোল্ডারের নামের শুরুতে একটি ডট (.) বসিয়ে এটি সিস্টেমের কাছে অদৃশ্য করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি ফোল্ডার নাম “.secret” করলে এটি সাধারণভাবে ফাইল ম্যানেজারে দেখা যাবে না, তবে আপনি এটিকে খুঁজে পেতে পারেন।
  • এনক্রিপশন: স্মার্টফোনে অনেক এনক্রিপশন ফিচার থাকে যা আপনার ফাইলকে নিরাপদ রাখে। আপনি অ্যাপ্লিকেশন বা সিস্টেম সেটিংসে গিয়ে ফাইল এনক্রিপ্ট করতে পারেন, যাতে শুধু আপনি পাসওয়ার্ড বা পিন দিয়ে সেই ফাইল অ্যাক্সেস করতে পারবেন।

৮. স্মার্টফোনের গতি বাড়ানোর কৌশল

বেশিরভাগ স্মার্টফোন কিছু সময় পর ধীর হয়ে যায়। তবে কিছু কৌশল রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি স্মার্টফোনের গতি বাড়াতে পারেন।

  • অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আনইনস্টল করা: স্মার্টফোনের স্টোরেজ এবং র‍্যাম ব্যবহারের জন্য অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস বা গেমস আনইনস্টল করা উচিত, যাতে ফোনের গতি দ্রুত হয়।
  • ক্যাশ ক্লিয়ার করা: ক্যাশ বা অস্থায়ী ফাইলগুলো ফোনের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বিভিন্ন অ্যাপের ক্যাশ ডেটা মুছে ফেললে ফোন দ্রুত চলতে থাকে।
  • অ্যাপ ম্যানেজমেন্ট: ফোনে যেসব অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলছে, সেগুলো বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে র‍্যাম ব্যবহারের চাপ কমানো যায়। “সেটিংস” থেকে “অ্যাপ” বিভাগে গিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস ম্যানেজ করতে পারবেন।
  • অ্যানিমেশন অফ করা: স্মার্টফোনের গ্রাফিক্স অ্যানিমেশন এবং ট্রানজিশন অ্যানিমেশন বন্ধ করে আপনি ফোনের পারফরম্যান্স বাড়াতে পারেন। সেটিংস থেকে “ডেভেলপার অপশনস” এ গিয়ে “Window transition scale” এবং “Animator duration scale” বন্ধ করলে ফোন দ্রুত কাজ করবে।
  • স্টোরেজ ফ্রি রাখা: ফোনে বেশি স্টোরেজ ফিল হয়ে গেলে তা ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। তাই স্টোরেজে পর্যাপ্ত ফ্রি স্পেস রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন :  ২০২৫ সালের সেরা ১০টি গ্যাজেট যা আপনার জীবনকে সহজ করবে

৯. একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের গোপন উপায়

আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোনে একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। এই ফিচারটি বিশেষভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেল, এবং অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য কার্যকর।

  • ডুয়াল অ্যাপ ফিচার: স্যামসাং, হুয়াওয়ে, অপো, এবং অন্যান্য ফোনে “ডুয়াল অ্যাপ” বা “অ্যাপ ক্লোন” ফিচার থাকে। এর মাধ্যমে আপনি এক অ্যাপ্লিকেশনের দুটি আলাদা ইনস্ট্যান্স ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি দুটি আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
  • গেস্ট মোড: বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোনে গেস্ট মোড থাকলেও আপনি বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের ফোন ব্যবহার করার সময় আপনার ডেটা সুরক্ষিত রাখতে পারেন। গেস্ট মোডে প্রবেশ করলে অন্য ব্যবহারকারীরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বা অ্যাপস অ্যাক্সেস করতে পারবেন না।
  • অ্যাকাউন্ট সুইচিং: গুগল অ্যাকাউন্টের মধ্যে সুইচিং খুব সহজ। আপনি এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে দ্রুত সুইচ করতে পারেন, যা মেইল, ক্যালেন্ডার, গুগল ফটো ইত্যাদির জন্য কার্যকর।

১০. স্মার্টফোনে গোপন ডেভেলপার মোড

ডেভেলপার মোড স্মার্টফোনে উন্নত ফিচার ও সেটিংস অ্যাক্সেস করতে দেয়, যা সাধারণত সাধারণ ব্যবহারকারীরা জানেন না।

  • ডেভেলপার অপশনস অ্যাক্সেস করা: আপনার ফোনের “সেটিংস” থেকে “অ্যাবাউট ফোন” অংশে গিয়ে “বিল্ড নম্বর” অপশনটি ৭ বার ট্যাপ করলে ডেভেলপার অপশনস চালু হয়। এরপর আপনি সেটিংস মেনুতে “ডেভেলপার অপশনস” দেখতে পাবেন।
  • USB ডিবাগিং: ডেভেলপার অপশনস থেকে USB ডিবাগিং চালু করলে আপনি আপনার ফোনকে পিসি বা ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করে ডেভেলপমেন্ট টুল ব্যবহার করতে পারবেন, যা অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের জন্য উপকারী।
  • অ্যাপ লিমিটেশন: ডেভেলপার অপশনসে “Limit background processes” সেটিং ব্যবহার করে আপনি ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসের সংখ্যা সীমিত করতে পারেন, যার ফলে ফোনের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায়।
  • এনিমেশন স্কেল পরিবর্তন: ডেভেলপার অপশনসে অ্যাপ ট্রানজিশন বা অ্যাপ অপেনিং অ্যানিমেশন এর স্কেল পরিবর্তন করে আপনি ফোনের প্রতিক্রিয়া গতি বাড়াতে পারেন।
  • ফোনের হার্ডওয়্যার টেস্টিং: ডেভেলপার মোডে বিভিন্ন হার্ডওয়্যার টেস্টিং অপশন থাকে যা আপনার ফোনের স্পিড, সেন্সর বা অন্যান্য প্রযুক্তি পরীক্ষা করতে পারে।

উপসংহার

স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, এবং এর মধ্যে অনেক গোপন ও কার্যকর ফিচার রয়েছে যা আমরা হয়তো জানি না। এই গোপন ফিচারগুলো কেবল আমাদের স্মার্টফোনের ব্যবহারকে আরও সহজ ও নিরাপদই করে না, বরং ফোনের পারফরম্যান্স, গোপনীয়তা এবং প্রাইভেসি রক্ষা করতেও সাহায্য করে।

এখন আপনি জানেন যে কীভাবে স্মার্টফোনের গোপন ক্যামেরা ট্রিকস ব্যবহার করে আরও ভালো ছবি তোলা যায়, কীভাবে দ্রুত টাইপিংয়ের জন্য কীবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করা যায়, কিংবা কীভাবে ব্যাটারি সাশ্রয়ী এবং ফোনের গতি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা যায়।

তদুপরি, আপনার ফোনের গোপন ডেভেলপার মোড এবং একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা ব্যবহার করে আরও উন্নত অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। সব মিলিয়ে, স্মার্টফোনের এই গোপন ফিচারগুলো জানলে আপনি আপনার ডিভাইসের পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন এবং এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।