টুকরো সংবাদ

GI কী? | GI পণ্য এখন ৯টি | বাংলাদেশের GI পণ্য

GI কী?

GI-এর অভিব্যক্তি Geographical Indication; যার বাংলা অর্থ ভৌগােলিক নির্দেশক। GI হলাে একটি চিহ্ন বা প্রতীক। যেটা নির্দিষ্ট একটি পণ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়, যা কোনাে একটি নির্দিষ্ট ভৌগােলিক এলাকার (শহর বা দেশ) পণ্যের পরিচিতি বহন করে। এতে পণ্যটি ঐ দেশের বা এলাকার পণ্য হিসেবে খ্যাতি পায়।

GI পণ্য এখন ৯টি

বাংলাদেশের মানুষের গুণাগুণ এবং পানি ও মাটিসহ জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যকে ঘিরে। নানান পণ্য এদেশে ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। যুগযুগ ধরে এসব পণ্য মানুষের মন জয়। করে আসছে। সারাদেশেই ছড়িয়ে আছে এমন ঐতিহাবাহী পণ্য। ঐতিহাবাহী পণ্য কোনাে একজনের নিজস্ব সম্পদ নয়। আবার একক কোম্পানির মালিকানায়ও নেই। এ কারণে ঐতিহ্যবাহী নানা সম্পদ যথাযথভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ভৌগােলিক নির্দেশক (GD পণ্যের স্বীকৃতির সনদ দেয়া। শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৯টি বাংলাদেশি পণ্যের GI নিবন্ধন করা হয়।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

বাংলাদেশের GI পণ্য

DPDT এ পর্যন্ত ৯টি বাংলাদেশি পণ্যের GI নিবন্ধন করেছে। ১৭ নভেম্বর ২০১৬ প্রথম পণ্য হিসেবে নিবন্ধন সনদ পায় জামদানি শাড়ী। এরপর ২৪ আগস্ট ২০১৭ দ্বিতীয় পণ্য হিসেবে বাংলাদেশ ইলিশ এবং ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ তৃতীয় পণ্য হিসেবে। পাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম’ এ স্বীকৃতি পায়। সাম্প্রতিক সময়ে আরাে ছয়টি পণ্যের GI নিবন্ধন চূড়ান্ত করা হয়।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ২৮ পণ্য

পণ্য নিবন্ধনের জন্য পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে ৩৭টি পণ্যের আবেদন করা হয়। এর মধ্যে ৯টি পণ্যের নিবন্ধন করা হয়েছে। আরও দুটি পণ্য জার্নাল প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলাে হলাে- বাংলাদেশ বাগদা ও রাজশাহীর ফজলি। এই দুটি জার্নালে প্রকাশ হলে কোনাে আপত্তি না এলে পরবর্তী দুই মাস পর GI পণ্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে। এছাড়া বগুড়ার দই, সিলেটের আগর, জামালপুরের তুলসীমালা ধান, রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমসহ আরও ২৬টি পণ্য GI নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়াধীন।

নিবন্ধন সংস্থা

মেধাস্বত্ব-বিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থা World Intellectual Property Organization (WIPO) সাধারণত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন দেয়। তবে বাংলাদেশে WIPO’র হয়ে স্থানীয়ভাবে কাজটি করে থাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (DPDT)।

নিবন্ধনে বিদ্যমান আইন

বাংলাদেশ ৬ নভেম্বর ২০১৩ ভৌগােলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন করে। ভৌগােলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা আইন) ২০১৩ অনুযায়ী, ভৌগােলিক। | নির্দেশক পণ্য বা GI পণ্য অর্থ ভৌগােলিক নির্দেশকসম্পন্ন এরূপ কৃষিজাত বা প্রকৃতিজাত অথবা প্রস্তুতকৃত পণ্য, যার দ্বারা উক্ত পণ্য কোনাে বিশেষ দেশে বা ভূখণ্ডে বা উক্ত দেশ। বা ভূখণ্ডের কোনাে বিশেষ অঞ্চল বা এলাকার জাত বা প্রস্তুতকৃতকে বােঝায়।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে GI-এর গুরুত্ব

বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় GI পণ্য নিবন্ধন ও সুরক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের নিজস্ব। মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠা লাভের পাশাপাশি শক্তিশালী ব্র্যান্ডের মর্যাদা লাভ করবে। বিপণন কৌশলের নিয়ামক হবে, ভােক্তা সাধারণের অধিকার সুরক্ষা দেবে, গ্রামীণ | উন্নয়নের অন্যতম উপাদান হবে, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সমুন্নত রাখবে। এছাড়া এসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে, আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি হবে, রপ্তানি ও বিনিয়ােগ বাড়বে এবং নতুন নতুন শিল্প গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভােক্তা সাধারণ নিবন্ধিত GI পণ্যগুলাে ক্রয়ের ক্ষেত্রে সমজাতীয় অনিবন্ধিত GI পণ্যের চেয়ে ২০-৩০% মূল্য বেশি দিতে সম্মত থাকে।

বাংলাদেশের GI পণ্য ও আবেদনকারী

নং GI পণ্য আবেদনকারী
০১ জামদানি শাড়ী বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপােরেশন (BSCIC)
০২ বাংলাদেশ ইলিশ মৎস্য অধিদপ্তর (DOF)
০৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI)
০৪ ঢাকাই মসলিন বাংলাদেশ তাঁত বাের্ড (BHB)
০৫ রাজশাহী সিল্ক বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বাের্ড (BSDB)
০৬ বিজয়পুরের সাদা মাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নেত্রকোনা
০৭ দিনাজপুর কাটারীভােগ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI)
০৮ বাংলাদেশ কালিজিরা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI)
০৯ রংপুরের শতরঞ্জি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button