সকল প্রশ্নআধুনিক সভ্যতার ভিত্তি কোনটি?
Preparation Staff asked 1 week ago

লোহা (Iron) মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আধুনিক সভ্যতার যেসব বৈশিষ্ট্য—যেমন উন্নত কৃষি, স্থাপত্য, রেলপথ, কলকারখানা, অস্ত্র বা গৃহনির্মাণ—সবকিছুর ভিত্তিতে রয়েছে লোহা ও ইস্পাতের ব্যবহার। তাই, লৌহকেই বলা হয় আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি

লৌহ যুগ:
  • মানুষের লৌহ ব্যবহারের শুরু হয় প্রায় ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে

  • এটি লোহা যুগ (Iron Age) নামে পরিচিত।

  • এই যুগে মানুষের অস্ত্র, কৃষিযন্ত্র, এবং নির্মাণ পদ্ধতিতে বড় রকম পরিবর্তন আসে।

লোহার বৈশিষ্ট্য:
  • শক্তিশালী ও টেকসই: পাথর, তামা বা ব্রোঞ্জের তুলনায় লোহা অনেক বেশি শক্ত এবং টেকসই।

  • বহুল ব্যবহৃত: লোহা দিয়ে তৈরি যন্ত্রপাতি কৃষিকাজ, যুদ্ধ, গৃহনির্মাণ এবং পরবর্তীকালে শিল্পকারখানার জন্য ব্যবহার হয়।

  • ইস্পাতের জনক: লোহার সঙ্গে কার্বন মিশিয়ে তৈরি হয় ইস্পাত, যা আধুনিক প্রযুক্তির প্রধান উপাদান।

শিল্পবিপ্লব ও লোহা:
  • ১৮শ ও ১৯শ শতকে শিল্পবিপ্লব শুরু হলে, লোহার ব্যবহার বিস্ময়কর হারে বৃদ্ধি পায়।

  • রেললাইন, ব্রিজ, জাহাজ, কলকারখানা—সব জায়গায় লোহা ছিল অপরিহার্য উপাদান।

  • আধুনিক নগর সভ্যতার রূপরেখা মূলত লোহা ও ইস্পাতের ভিত্তিতেই গড়ে ওঠে।

লোহার সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব:
  • কৃষিকাজে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়—লোহার লাঙ্গল বেশি জমি চাষ করতে সাহায্য করে।

  • সামরিক শক্তি বৃদ্ধি: লোহার অস্ত্র দিয়ে বড় সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।

  • বাণিজ্য সম্প্রসারণ: লোহা ছিল বিনিময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

উপসংহার:

লোহার ব্যবহার মানুষকে আধুনিকতার পথে নিয়ে এসেছে। সভ্যতার কাঠামো, শিল্প ও প্রযুক্তির যে বিস্তার আমরা আজ দেখি, তার পেছনে রয়েছে লোহা ও ইস্পাতের হাত। তাই, এক কথায় বলা যায়—লোহাই আধুনিক সভ্যতার মেরুদণ্ড