প্রাচীন সভ্যতাগুলোর বিকাশে নদী ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী প্রাকৃতিক উপাদান। ইতিহাসের অধিকাংশ প্রাচীন ও সমৃদ্ধ সভ্যতা গড়ে উঠেছিল নদীর তীরে। এর প্রধান কারণ হলো নদী মানুষের বসবাস ও কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করত, যোগাযোগের সহজ পথ তৈরি করত এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ বাড়িয়ে দিত।
প্রধান নদীকেন্দ্রিক সভ্যতাগুলো:
মেসোপটেমিয়া সভ্যতা (টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর তীরে): বর্তমানে ইরাক এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রথম নগররাষ্ট্র, আইনব্যবস্থা এবং লেখার পদ্ধতির সূচনা হয়।
মিশরীয় সভ্যতা (নাইল নদীর তীরে): নাইল নদীকে বলা হয় “মিশরের জীবনরেখা”। বছরে বছরে বন্যা হয়ে উর্বর পলি জমা হতো, যা কৃষিতে সহায়তা করত।
সিন্ধু সভ্যতা (সিন্ধু ও সরস্বতী নদীর তীরে): হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োর মতো শহর ছিল উন্নত ড্রেনেজ ও পরিকল্পিত নগরের উদাহরণ।
চীনা সভ্যতা (হোয়াংহো বা পীত নদীর তীরে): কৃষি, চাষাবাদ ও রাজত্বের গোড়াপত্তন এখানেই হয়।
নদীর ভূমিকা:
চাষাবাদ: সেচ ও জল সরবরাহের কারণে নিয়মিত ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়েছিল।
পানীয় জল ও মাছের উৎস: মানুষের জীবনধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
যোগাযোগ ও পরিবহন: নদীপথে সহজে যাতায়াত ও বাণিজ্য সম্ভব হয়েছিল।
সামাজিক সংগঠন: নদীঘেঁষা এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠে, যা সমাজ ও প্রশাসনের গঠনকে উৎসাহ দেয়।
সংস্কৃতি ও ধর্ম: অনেক সভ্যতায় নদীকে দেবতাস্বরূপ ভাবা হতো, যেমন গঙ্গা, নাইল ইত্যাদি।
উপসংহার:
নদী শুধু পানি বা কৃষির উৎস নয়, বরং মানব সভ্যতার ঘাঁটি হিসেবে কাজ করেছে। তাই বলা যায়, প্রাচীন সভ্যতার বিকাশের মূল চালিকা শক্তি ছিল নদী।
Please login or Register to submit your answer