মানব সভ্যতার বিবর্তন একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া, যা কয়েক লক্ষ বছর ধরে গড়ে উঠেছে। ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা মানুষের এই অগ্রগতিকে সাধারণত তিনটি প্রধান যুগে ভাগ করেছেন। এগুলো হলো:
১. প্রস্তর যুগ (Stone Age)
২. তাম্র যুগ (Copper Age)
৩. লোহা যুগ (Iron Age)
১. প্রস্তর যুগ:
এই যুগে মানুষ প্রধানত পাথরের তৈরি সরঞ্জাম ব্যবহার করত। এটি আবার তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে:
প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Paleolithic Age)
মধ্য প্রস্তর যুগ (Mesolithic Age)
নব্য প্রস্তর যুগ (Neolithic Age)
এই যুগে মানুষ গুহায় বাস করত, আগুন ব্যবহার শিখত, এবং শিকার ও সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত।
২. তাম্র যুগ:
এই যুগে মানুষ তাম্র এবং পরে ব্রোঞ্জ (তাম্র ও টিনের মিশ্রণ) দিয়ে অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি তৈরি শুরু করে। কৃষিকাজ ও পশুপালনের বিস্তার ঘটে, সমাজ গঠনের সূচনা হয় এবং প্রথম শহরগুলো গড়ে ওঠে।
৩. লোহা যুগ:
এই যুগে লোহার ব্যবহার মানুষের জীবনযাত্রায় বিপুল পরিবর্তন আনে। শক্তিশালী ও টেকসই অস্ত্র, কৃষি যন্ত্র এবং অন্যান্য বস্তু তৈরি করা সম্ভব হয়। এই সময়ে রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যের জন্ম হয় এবং সভ্যতা একটি সুগঠিত রূপ নেয়।
এই তিনটি যুগ মানুষের প্রযুক্তিগত ও সামাজিক অগ্রগতির ভিত্তিতে নির্ধারিত। তবে মনে রাখা দরকার, এসব যুগ সব অঞ্চলে একই সময়ে শুরু হয়নি। বিভিন্ন অঞ্চলে সভ্যতার বিকাশের হার ভিন্ন ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রস্তর যুগ অনেক দিন পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল যখন অন্যত্র তাম্র বা লোহা যুগ শুরু হয়ে গিয়েছিল।
Please login or Register to submit your answer