মানব ইতিহাসে প্রযুক্তির বিকাশে একটি বড় মাইলফলক হলো ধাতুর ব্যবহার। মানুষ যখন ধীরে ধীরে পাথরের সরঞ্জামের বাইরে ভাবতে শুরু করে, তখন সে প্রথম যে ধাতুটি চিনেছিল এবং ব্যবহার করেছিল তা হলো তামা (Copper)। এটি ঘটে নব্য প্রস্তর যুগের শেষ দিকে, যখন মানুষ কৃষিকাজ, বসতি স্থাপন এবং সমাজ গঠনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল।
তামার ব্যবহার শুরু:
তামা একটি প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় এমন ধাতু, যা আগুনে গলানো সম্ভব এবং সহজে আকার দেওয়া যায়।
ইতিহাসবিদরা মনে করেন, তামার ব্যবহার শুরু হয়েছিল প্রায় ৬,০০০ বছর আগে।
প্রথম দিকে মানুষ তামা গলিয়ে অস্ত্র, অলংকার, বাসনপত্র ইত্যাদি তৈরি করত।
তাম্র যুগ:
এই সময়কে বলা হয় তাম্র যুগ (Chalcolithic Age)—যেখানে মানুষ পাথরের পাশাপাশি তামাও ব্যবহার করতে শুরু করে।
এই যুগে মানুষের সমাজ কাঠামো, ধর্মাচার এবং স্থাপত্যে বড় পরিবর্তন দেখা দেয়।
ভারতের মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ও উত্তরপ্রদেশে তাম্রযুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে।
তামা কেন প্রথম:
তামা সহজে গলানো যায় (প্রায় ১,০৮৪° C-এ গলে)।
এটি নরম, তাই হাতের চাপে বা হাতুড়ির আঘাতে আকার দেওয়া সহজ।
পাথরের তুলনায় এটি টেকসই এবং বহুমুখী।
পরবর্তী ধাপে ব্রোঞ্জ:
মানুষ পরে তামা ও টিন মিশিয়ে তৈরি করে ব্রোঞ্জ, যা আরও শক্তিশালী ও কার্যকর ছিল। ফলে শুরু হয় ব্রোঞ্জ যুগ, যা তামার যুগের উন্নত সংস্করণ।
উপসংহার:
তামার ব্যবহার মানুষকে ধাতব যুগে প্রবেশ করিয়েছে এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ভিত্তি গড়ে দেয়। তাই, ধাতু ব্যবহার শুরুর ক্ষেত্রে তামা ছিল মানব সভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ সোপান।
Please login or Register to submit your answer