GATT (General Agreement on Tariffs and Trade) ছিল একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য ১৯৪৭ সালে চালু করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন দেশের মধ্যে শুল্ক এবং বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা কমিয়ে মুক্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে GATT কার্যকর ছিল এবং এটি ৮টি রাউন্ডে বাণিজ্য আলোচনা পরিচালনা করেছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল "উরুগুয়ে রাউন্ড" (১৯৮৬-১৯৯৪), যেখানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিধি আরও প্রসারিত হয়।
GATT ছিল শুধুমাত্র একটি বাণিজ্যিক চুক্তি, যার কোন স্থায়ী সংস্থা বা আইনি কাঠামো ছিল না। তবে বৈশ্বিক বাণিজ্যের জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় এবং নতুন নতুন ইস্যু যেমন সেবা, মেধাস্বত্ব, কৃষিপণ্য ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় একটি শক্তিশালী ও স্থায়ী প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রয়োজন হয়।
এই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় WTO (World Trade Organization)। WTO হচ্ছে GATT-এর উত্তরসূরি এবং এটি কেবল পণ্যের উপরই নয়, বরং সেবা, বৌদ্ধিক সম্পদ অধিকার (TRIPS), বিনিয়োগ ইত্যাদির উপরও নজর দেয়। WTO আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও সংগঠিত, স্বচ্ছ ও বিচারযোগ্য করে তোলে।
WTO প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি স্বাধীন ও বৈধ প্রক্রিয়াও চালু হয়, যা GATT-এর তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। WTO বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশের সদস্য রয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম তৈরি ও প্রয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সারসংক্ষেপে, GATT ছিল একটি অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কাঠামো, আর WTO হল একটি স্থায়ী আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৯৫ সালে GATT WTO-তে রূপান্তরিত হয়, যা বিশ্ব বাণিজ্যে এক নতুন যুগের সূচনা করে।
Please login or Register to submit your answer