জেলা পরিচিতি

পাহাড়-টিলা-হাওরের জেলা হবিগঞ্জ

ইংরেজ শাসনামলে ১৮৬৭ সালে হবিগঞ্জকে মহকুমা ঘোষণা করা হয় এবং ১৮৭৮ সালে হবিগঞ্জ মহকুমা গঠন করা হয়। আসাম প্রাদেশিক সরকারের ২৭৩নং নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ৭ এপ্রিল ১৮৯৩ হবিগঞ্জ থানা গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) এর অফিস স্থাপিত হয় এবং সর্বশেষ ১ মার্চ ১৯৮৪ জেলায় উন্নীত হয়।

নামকরণ

সুফি সাধক হযরত শাহজালাল (রঃ) এর অনুসারী সৈয়দ নাছির উদ্দিন (রঃ) এর পূণ্যস্মৃতি বিজড়িত খোয়াই, করাঙ্গী, সুতাং, বিজনা, রত্না প্রভৃতি নদী বিধৌত হবিগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জনপদ। ঐতিহাসিক সুলতান হাবেলীর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ সুলতানের অধঃস্তন পুরুষ সৈয়দ হেদায়েত উল্লাহর পুত্র সৈয়দ হবিব উল্লাহ খোয়াই নদীর তীরে একটি গঞ্জ বা বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামানুসারে হবিবগঞ্জ থেকে কালক্রমে তা হবিগঞ্জ নামে পরিণত হয়।

সাধারণ তথ্যাবলি

  • প্রতিষ্ঠা : ১ মার্চ ১৯৮৪
  • সীমানা: উত্তরে সুনামগঞ্জ ও সিলেট, পূর্বে মৌলভীবাজার, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
  • আয়তন : ২,৬৩৬.৫৯ বর্গ কিমি [সূত্র: BBS]
  • জনসংখ্যা : ২৩,৫৮,৮৮৬ জন সাক্ষরতা (৭ বছর ও তদূর্ধ্ব) : ৭৫.৮% [SVRS2022]
  • ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) : ৮৯৫ জন।
  • প্রধান নদনদী > কুশিয়ারা, খোয়াই, সুতাং, রত্না, শুটকী, সোনাই, করাঙ্গী, ঝিংড়ী, ভেড়ামোহনা, বরাক, বিজনা প্রভৃতি।

প্রশাসনিক কাঠামো

  • উপজেলা : ৯টি হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জ
  • থানা : ৯টি
  • পৌরসভা : ৬টি হবিগঞ্জ সদর, মাধবপুর, চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ
  • ইউনিয়ন : ৭৭টি
  • জাতীয় সংসদের আসন : ৪টি

তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ

৪ এপ্রিল ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তেলিয়াপাড়ায় ২য় ইস্ট বেঙ্গলের সদরদপ্তরে একত্রিত হন। চা বাগান পরিবেষ্টিত পাহাড়ী এ অঞ্চলে জেনারেল এম এ জি ওসমানী, লে: কর্নেল আব্দুর রব, লে. কর্নেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর মইনুল হোসাইন চৌধুরীসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সভাতেই মুক্তিবাহিনী সাংগঠনিকভাবে পরিপুষ্ট হয়ে উঠে এবং জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্ব গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বৈঠককে স্মরণ করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এখানে তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

জানেন কি : হবিগঞ্জ

  • আয়তনে দেশের : ২৩তম সিলেট বিভাগের : ৪র্থ
  • জনসংখ্যায় দেশের : ৬১তম · সিলেট বিভাগের : ৩য় মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জ
  • সেক্টর > ৩নং

হানাদার বা শত্রুমুক্ত দিবস

  • ৫ ডিসেম্বর : চুনারুঘাট
  • ৬ ডিসেম্বর : সদর, নবীগঞ্জ, বাহুবল, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ
  • ৭ ডিসেম্বর : আজমিরীগঞ্জ ও লাখাই
  • ৮ ডিসেম্বর : বানিয়াচং।

উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান

  • সদর : শাহজামে মসজিদ
  • লাখাই : অমৃত মন্দির, বায়েজিদ শাহের মাজার
  • মাধবপুর : বাজামুরা রাজবাড়ী, ফ্রুটস ভ্যালী ও তেলিয়াপাড়া স্মৃতি সৌধ
  • চুনারুঘাট : রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
  • নবীগঞ্জ : বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড (উত্তোলনের দিক দিয়ে দেশের বৃহৎ)
  • শায়েস্তাগঞ্জ : গায়েবী গজার মাছের পুকুর
  • আজমিরীগঞ্জ : খাজা শাহ ইছাক চিশতির মাজার
  • বাহুবল : আলিয়া খাসিয়াপুঞ্জী, রশিদপুর গ্যাসফিল্ড ও রুপাইছড়া রাবার বাগান
  • বানিয়াচং : মাকালকান্দী স্মৃতিসৌধ, শ্যাম বাউল গোস্বামীর আখড়া।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

  • শাহ্ মোহাম্মদ কিবরিয়া (অর্থমন্ত্রী)
  • সৈয়দ মুজতবা আলী (কথা সাহিত্যিক)
  • মেজর জেনারেল এম এ রব (মুক্তিযুদ্ধের চীফ অব স্টাফ)
  • মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী (১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ কোম্পানির অধিনায়ক)
  • মাহবুবুর রব সাদী (সাব সেক্টর কমান্ডার, সাবেক সংসদ সদস্য)
  • জগৎজ্যোতি দাস (বীরবিক্রম ও মুক্তিযুদ্ধের দাস বাহিনীর প্রধান)
  • মানিক চৌধুরী (রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা)
  • মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ও শেগুফতা বখত চৌধুরী (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button