একাত্তরের দিনগুলি: সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

একাত্তরের দিনগুলি: সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যারা ঢাকা শহরে ছিলেন বা থাকতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। ঢাকা তখন এক অবরুদ্ধ নগরী, যেখানে চারিদিকে মৃত্যুর সংবাদ আর হানাদার বাহিনীর বীভৎসতার চিহ্ন। স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব ছিল না, কিন্তু সরকার এর বিপরীতে প্রচার চালিয়ে বলেছিল যে, দেশের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তারা স্কুল-কলেজ চালানোর চেষ্টা করেছিল এবং জোর করে টিভি ও রেডিওতে অনুষ্ঠান করতে বাধ্য করেছিল।
এ সময়টি ছিল আতঙ্ক এবং বিপর্যয়ের। তবে কিছু সময়ে মানুষ স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুষ্ঠান বা মুক্তিফৌজের খবর শুনে কিছুটা আনন্দ পেত। এমনকি, মানুষের মধ্যে নানা প্রকার দুঃখের মধ্যে মাঝে মাঝে আনন্দের ঘটনাও ঘটত।
তবে সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছিলেন লেখিকা, যখন হানাদার বাহিনী তাঁর বড় ছেলে রুমীকে আটক করেছিল। কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার পরামর্শ কেউ কেউ দিয়েছিল। কিন্তু মায়ের মন এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল না। শেষে, তিনি এবং তাঁর স্বামী সিদ্ধান্ত নেন, প্রাণভিক্ষা নয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হলো আত্মমর্যাদার এবং প্রতিরোধের, যা ত্যাগ ও সাহসের প্রমাণ।
এই ছিল একাত্তরের দিনগুলির এক অল্প বর্ণনা, যখন বাংলাদেশ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছিল এবং মানুষের জীবনে এক কঠিন যুদ্ধে পরিণত হচ্ছিল।
একাত্তরের দিনগুলি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
একাত্তরের দিনগুলি থেকে পরীক্ষায় আসার মত ৫ টি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া হল।আশা করছি যারা এসএসসি পরীক্ষার্থী আছো তাদের কাজে আসবে।
১। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করতে নেপথ্য ভূমিকা রেখেছিল। তারেক মাসুদ মুক্তির গান প্রামাণ্যচিত্রে দেখিয়েছেন শিল্পীরা বিভিনড়ব মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করেছেন। যুদ্ধ কেবল মুক্তিযোদ্ধারা করেনি। এ যুদ্ধে শিল্পী, কলাকুশলী ও শব্দসৈনিকের ভূমিকাও ছিল।
ক. যুদ্ধের সময় জামী কোন শ্রেণির ছাত্র ছিল?
জামী, যে সময় যুদ্ধ চলছিল, সে ছিল স্কুলপড়ুয়া ছাত্র। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে যুদ্ধ কেবলমাত্র যোদ্ধাদের নয়, বরং সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী এবং সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের ওপরও প্রভাব ফেলেছিল।
খ. নিয়াজির আত্মসমর্পণ আনন্দের কিন্তু শরীফের কুলখানি বেদনার কেন? বুঝিয়ে লেখ।
নিয়াজির আত্মসমর্পণ ছিল স্বাধীনতার বিজয়ের চূড়ান্ত চিহ্ন। এর মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হয়ে বাংলাদেশের মুক্তির পথে আরও এক পদক্ষেপ এগিয়ে যায়, যা দেশের মানুষকে আনন্দিত করে। অন্যদিকে, শরীফের কুলখানি ছিল বেদনাদায়ক, কারণ তিনি একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি যুদ্ধের পরিণতিতে প্রাণ হারিয়েছেন, যা দেশের জন্য গভীর শোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গ. উদ্দীপকের ভাবনা ‘একাত্তরের দিনগুলি’র কোন দিককে উন্মোচন করেছে? ব্যাখ্যা কর।
‘একাত্তরের দিনগুলি’ উদ্দীপকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানুষের অনুভূতি এবং সংগ্রামের অবস্থা উন্মোচিত হয়েছে। বিশেষ করে, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের যুদ্ধের সময় নেপথ্য ভূমিকার দিকটি এখানে গুরুত্ব পায়, যেখানে তারা যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক শক্তি বাড়ানোর জন্য তাদের কাজ করছেন।
ঘ. উদ্দীপকের অনুভব ‘একাত্তরের দিনগুলি’র সমগ্র অনুভবকে ধারণ করে কি? মূল্যায়ন কর।
‘একাত্তরের দিনগুলি’ একটি ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির উপলব্ধি এবং সংগ্রামের দিকগুলোকে বর্ণনা করে। উদ্দীপকের অনুভব এই বাস্তবতাকে ধারণ করে, যেখানে যুদ্ধের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সৃজনশীলতা, সংগ্রাম, ত্যাগ এবং একতার অনুভূতি ফুটে ওঠে। যুদ্ধের সময় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তি, এবং সেই অনুভূতিটি ‘একাত্তরের দিনগুলি’ পুরোপুরি ধারণ করে।
২। তুমি আসবে বলে, হে স্বধীনতা,
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল,
সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বধীনতা।
ক. ১৯৭১ সালের মে মাসের কত তারিখে মাধ্যমিক স্কুল খোলার হুকুম হয়েছিল?
১৯৭১ সালের মে মাসে মাধ্যমিক স্কুল খোলার হুকুম ২৫ মে তারিখে দেয়া হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর অমানবিক আচরণ ও অত্যাচারের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ছিল।
খ. “চরমপত্র” বলতে কী বোঝায়?
“চরমপত্র” বলতে একটি দেশের পক্ষে বা জনগণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বা আইনি ডকুমেন্ট বোঝানো হয়, যা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শেষবারের মতো দাবী জানাতে বা কোন বিষয় সমাধান না হলে পরবর্তী পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে চরমপত্র পাঠানো হয়েছিল।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘একাত্তরের দিনগুলি’র সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
এখানে উদ্দীপকটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করছে, যেখানে মানুষ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিল। ‘একাত্তরের দিনগুলি’ মূলত একটি স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ, যেখানে একজন ব্যক্তির চোখে একাত্তরের যুদ্ধের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। উভয়েই মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং সাধারণ মানুষের শোক ও আনন্দের কথা বলে। তবে ‘একাত্তরের দিনগুলি’তে ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ ও অনুভূতি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, যেখানে উদ্দীপকটি সাধারণভাবে স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরছে।
ঘ. ‘একাত্তরের দিনগুলি’র লেখিকার প্রিয়জনদের হারানোর পরিস্থিতি উদ্দীপকের সাথে একই সূত্রে গাঁথা- বিশ্লেষণ কর।
‘একাত্তরের দিনগুলি’ লেখিকার প্রিয়জনদের হারানোর দুঃখ এবং শোকের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি আবেগময় দিক যা সাধারণ মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। উদ্দীপকে, “হে স্বধীনতা”র মাধ্যমে, স্বাধীনতার জন্য মানুষের সংগ্রামের পরিণতি এবং ব্যক্তিগত ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট, জীবনযুদ্ধে তাদের অর্জিত বিজয়ের গুরুত্ব এবং শোক একত্রিত হয়েছে।
৩। মেলাঘরে ট্রেনিংয়ে গিয়ে দেখি ঢাকার যত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা, ধানমণ্ডি, গুলশানের বড়লোক বাপের গাড়ি হাকানো ছেলেরা, খেলার মাঠের চৌকস ছেলেরা, ছাপোষা চাকুরের বাপের ছেলেরা, সবাই জড়ো হয়েছে ওখানে। সবাই গেছে যুদ্ধ করার জন্য, এর বেশির ভাগ ঢাকার ছেলে। আমরা আছি সেক্টর টুতে। রেগুলার আর্মির পাশাপাশি আমরা আছি গেরিলা বাহিনী হিসাবে।
ক. ‘চরমপত্র’ কী?
‘চরমপত্র’ বলতে সাধারণত একটি বিশেষ ধরনের পত্র বা নথি বোঝায় যা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা কোন বিষয় নিয়ে কঠোর ঘোষণা প্রদান করে। বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি এমন এক ধরনের পত্র ছিল, যার মাধ্যমে গেরিলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল বা সংগঠন নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বা কর্মসূচি ঘোষণা করত।
খ. ‘গাজুরিয়া মাইর’ বলতে কী বোঝায়?
‘গাজুরিয়া মাইর’ শব্দটি একটি আঞ্চলিক বা প্রবাদগত শব্দ, যার মাধ্যমে সাধারণত কাউকে গালিগালাজ বা শারীরিকভাবে আক্রমণ করার নির্দেশ বা পরিস্থিতি বোঝানো হয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের কল্পিত বা বর্ণনামূলক ভাষায় এক ধরনের ভয়াবহ বা কঠিন অবস্থাকে প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হতে পারে।
গ. উদ্দীপকে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার যে দিকটি প্রকাশিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
উদ্দীপকে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার যে দিকটি প্রকাশিত হয়েছে তা মূলত মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, তাদের সংগ্রাম এবং যুদ্ধের দিনগুলোর বর্ণনা তুলে ধরেছে। লেখক এখানে গেরিলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে তাদের ঐক্য এবং সংগ্রামের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ একত্রিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সমাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি প্রকাশ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন : নিরক্ষরতার কারণে কি ঘটে
ঘ. ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালির সর্বজনীন গণযুদ্ধ।’ – উদ্দীপক ও ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
উক্তিটি ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালির সর্বজনীন গণযুদ্ধ’ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের তাত্পর্য এবং এর সর্বব্যাপী সংগ্রামী চেতনা তুলে ধরে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল জাতিগত মুক্তির সংগ্রাম, যেখানে শুধু একদল বা এক শ্রেণির মানুষ নয়, বরং শহর, গ্রাম, যুবক, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ সবাই একত্রিত হয়ে যুদ্ধ করেছে। উদ্দীপকে এবং ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনায় বর্ণিত হচ্ছে, কীভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, যাদের মধ্যে ছিল ঢাকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শহরের ধনী-বিত্তবান পরিবার, খেলার মাঠের ছেলেরা, চাকরির পরিবার, সব মিলিয়ে এটি ছিল বাঙালির এক সর্বজনীন সংগ্রাম।
৪। সেই রেল লাইনের ধারে মেঠো পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে
এক মধ্যবয়সী নারী এখনও রয়েছে হাত বাড়িয়ে
খোকা ফিরবে ঘরে ফিরবে, কবে ফিরবে নাকি ফিরবে না।
ক. জাহানারা ইমামের বড় ছেলের নাম কী?
জাহানারা ইমামের বড় ছেলের নাম ছিল আদিলুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হন।
খ. জাহানারা ইমামের ভেতরে কিসের আশা জেগে ওঠে?
জাহানারা ইমামের ভেতরে যে আশা জেগে ওঠে তা হলো তাঁর ছেলে আদিলুর রহমানের ঘরে ফিরতে। কবিতার লাইনগুলোতে তাঁর এই আশা ফুটে উঠেছে, যেখানে তিনি অপেক্ষা করছেন “খোকা ফিরবে ঘরে ফিরবে, কবে ফিরবে নাকি ফিরবে না।” এই লাইনগুলি মায়ের অসহায়ত্ব এবং সন্তান হারানোর দুঃখের মাঝে থাকা আশা ও আত্মবিশ্বাসের চিত্র।
গ. উদ্দীপকে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ দিনপঞ্জির কোন আবহটি ফুটে উঠেছে? বর্ণনা কর।
উদ্দীপকটি “একাত্তরের দিনগুলি” দিনপঞ্জির আবহ ফুটিয়ে তোলে, যেখানে মায়ের ভেতরে যুদ্ধের পরে সন্তান ফিরে আসার প্রস্থানের সময় ও স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি জীবিত থাকে। এটি মূলত স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনাবোধ এবং একাকীত্বের মধ্যে মা হিসেবে অপেক্ষার ভীষণ অনুভূতি প্রতিফলিত করে।
ঘ. ‘একাত্তরের দিনগুলি’ দিনপঞ্জির আলোকে উদ্দীপকের গানটির বাস্তবতা নিরূপণ কর।
“একাত্তরের দিনগুলি” দিনপঞ্জির আলোকে উদ্দীপকের গানটির বাস্তবতা হলো, এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মা, সন্তান এবং পরিবারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার একটি বাস্তব চিত্র উপস্থাপন করে। এটি যুদ্ধের বিভীষিকায় সন্তান হারানোর যন্ত্রণা এবং মা হিসেবে অপেক্ষা করার বাস্তবতা তুলে ধরে। গানটি যুদ্ধের পরিণতির পর মায়ের অপেক্ষা, হতাশা, এবং স্বাধীনতার চেতনাকে প্রতিফলিত করে।
৫। সেবিকা সাইফা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্পে যুদ্ধাহতদের সেবা শুশ্রুষা করেছিলেন। হৃদয়বিদারক সেই স্মৃতি আজো তাকে তাড়িত করে। অবসর সময়ে তিনি নাতি-নাতনিদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কথাগুলো স্মৃতিচারণ করেন।
ক. জেনারেল নিয়াজী কত জন সৈন্য নিয়ে আত্মসমর্পণ করে?
জেনারেল নিয়াজী ৯৩,০০০ সৈন্যসহ আত্মসমর্পণ করেন। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যেখানে পাকিস্তানি বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হেরে গিয়ে ভারতীয় বাহিনী এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
খ. সামরিক জান্তার কাছে মার্সি পিটিশন করলে রুমী বাবা-মাকে ক্ষমা করতে পারবে না কেন?
রুমী যদি সামরিক জান্তার কাছে মার্সি পিটিশন (ক্ষমার আবেদন) করেন, তবুও তার বাবা-মাকে ক্ষমা করার সম্ভবনা নেই, কারণ রুমী নিজে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে সামরিক জান্তা কোনো স্নেহ বা মায়া প্রদর্শন করবে না। তাছাড়া, পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের সহযোগী বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামীদের প্রতি কোনো সহানুভূতি প্রদর্শন করেনি।
গ. উদ্দীপকের বিষয়টি নবীন প্রজন্মকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করবে তা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার আলোকে ব্যাখ্যা কর।
‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার মাধ্যমে লেখিকা, বুদ্ধিজীবী, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ এবং সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছেন। এই রচনাটি নবীন প্রজন্মকে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জানার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। সাইফা মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা শুশ্রুষা করার স্মৃতিচারণ, বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের গল্পের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম, আত্মমর্যাদা, এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্য বোঝানোর এক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠবে।
ঘ. ‘উদ্দীপকের সাইফার কর্মকাণ্ড এবং ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার লেখিকার প্রয়াস এক ও অভিনব’ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
‘উদ্দীপকের সাইফার কর্মকাণ্ড’ এবং ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার লেখিকার প্রয়াস এক ও অভিনব বলার কারণ হলো, সাইফা যেমন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছিলেন, তেমনি ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনার লেখিকাও যুদ্ধের বাস্তব চিত্র এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিষয়গুলি নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করেছেন। সাইফা এবং লেখিকা উভয়ই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে জীবন্ত রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন, যা এক ধরনের অভিনব প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত।