বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষিজ সম্পদ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ, যেখানে অধিকাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং রপ্তানি খাতে কৃষির অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কৃষি ও কৃষিজ সম্পদ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাধারণ জ্ঞান তুলে ধরা হলো—
প্রধান ফসল ও কৃষিজ সম্পদ
- প্রধান খাদ্যশস্য: ধান (সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ময়মনসিংহে)
- প্রধান অর্থকরী ফসল: পাট (সবচেয়ে বেশি হয় রংপুরে)
- চা উৎপাদন: সবচেয়ে বেশি হয় মৌলভীবাজারে, চা গবেষণা কেন্দ্র শ্রীমঙ্গলে
- তামাক: প্রধানত রংপুরে উৎপাদিত হয়
- তুলা: তুলা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা যশোর
- রেশম: সবচেয়ে বেশি রাজশাহীতে উৎপাদিত হয়, রেশম বোর্ডও রাজশাহীতে
গবেষণা কেন্দ্র ও সংস্থা
- ধান গবেষণা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI), জয়দেবপুর
- কৃষি গবেষণা: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI), জয়দেবপুর
- ইক্ষু গবেষণা: ঈশ্বরদীতে অবস্থিত
- ডাল গবেষণা: ঈশ্বরদীতে অবস্থিত
- মসলা গবেষণা: বগুড়ায় অবস্থিত
- আম গবেষণা: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত
সেচ প্রকল্প ও কৃষি নীতি
- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প: তিস্তা বাঁধ প্রকল্প (রংপুর)
- জাতীয় কৃষিনীতি প্রণীত হয়: ১৯৯৯ সালে
বিশ্ব পরিসরে বাংলাদেশের কৃষির স্থান
- ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান: বিশ্বে ৪র্থ
- চা উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান: বিশ্বে ১১তম
- পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান: বিশ্বে ২য়
- পাট রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ: বাংলাদেশ
আরও পড়ুন : বাংলা বাগধারা: ৩৫০টি জনপ্রিয় বাগধারা ও তাদের অর্থ
বাংলাদেশের কৃষি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: কৃষি দিবস কবে পালিত হয়?
উত্তর: কৃষি দিবস ১ অগ্রহায়ণ তারিখে পালিত হয়।
প্রশ্ন ২: বাংলাদেশের মোট জমির পরিমাণ কত?
উত্তর: বাংলাদেশের মোট জমির পরিমাণ ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার একর।
প্রশ্ন ৩: মোট আবাদী জমির পরিমাণ কত?
উত্তর: মোট আবাদী জমির পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার একর।
প্রশ্ন ৪: মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ কত?
উত্তর: মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ ০.২৮ একর।
প্রশ্ন ৫: বাংলাদেশের কত শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল?
উত্তর: প্রায় ৮০% মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন ৬: বাংলাদেশে ফসল তোলার প্রধান ঋতু কতটি এবং কী কী?
উত্তর: বাংলাদেশে ফসল তোলার প্রধান ঋতু ৩টি—ভাদোই, হৈমন্তিক এবং রবি।
প্রশ্ন ৭: শস্য কয়টি ভাগে বিভক্ত এবং কী কী?
উত্তর: শস্য প্রধানত ২ প্রকার—
১. রবিশস্য: শীতকালীন শস্য
২. খরিপ শস্য: গ্রীষ্মকালীন শস্য
প্রশ্ন ৮: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান কত?
উত্তর: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান ২০.৬০%।
প্রশ্ন ৯: বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার বলা হয় কোন অঞ্চলকে?
উত্তর: বরিশালকে বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার বলা হয়।
প্রশ্ন ১০: এখন পর্যন্ত মোট কতটি কৃষিশুমারি হয়েছে?
উত্তর: মোট ৪টি কৃষিশুমারি হয়েছে।
প্রশ্ন ১১: সর্বশেষ কৃষিশুমারি কবে পরিচালিত হয়?
উত্তর: সর্বশেষ কৃষিশুমারি পরিচালিত হয় ১৯৯৭ সালে।
প্রশ্ন ১২: বাংলাদেশের জাতীয় কৃষিনীতি প্রণীত হয় কত সালে?
উত্তর: জাতীয় কৃষিনীতি প্রণীত হয় ১৯৯৯ সালে।
প্রশ্ন ১৩: বাংলাদেশের প্রধান কৃষি পণ্য কী কী?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রধান কৃষি পণ্য হলো—
ধান, পাট, চা, গম, আখ, আলু, তামাক, ডাল, তেলবীজ, মসলা, ফল, মাংস, দুধ, পোল্ট্রি।
বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্যদ্রব্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যদ্রব্য কী?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যদ্রব্য হলো ধান।
প্রশ্ন ২: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ধান কোথায় উৎপাদিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হয় ময়মনসিংহে।
প্রশ্ন ৩: ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে কততম স্থান অধিকার করে?
উত্তর: ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ৪র্থ স্থান অধিকার করে।
প্রশ্ন ৪: ধান উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: ধান উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো চীন।
প্রশ্ন ৫: চাল রপ্তানিতে বিশ্বে শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: চাল রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো থাইল্যান্ড।
প্রশ্ন ৬: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) অবস্থিত গাজীপুরের জয়দেবপুরে।
প্রশ্ন ৭: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI) কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI) অবস্থিত গাজীপুরের জয়দেবপুরে।
বাংলাদেশের পাট সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল কী?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হলো পাট।
প্রশ্ন ২: বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৩: বাংলাদেশ পাট গবেষণা বোর্ড কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ পাট গবেষণা বোর্ড মানিকগঞ্জে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৪: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পাট কোথায় উৎপাদিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদিত হয় রংপুরে।
প্রশ্ন ৫: পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের কততম স্থানে রয়েছে?
উত্তর: পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ২য় স্থানে রয়েছে।
প্রশ্ন ৬: পাট উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: পাট উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো ভারত।
প্রশ্ন ৭: পাট রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: পাট রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো বাংলাদেশ।
প্রশ্ন ৮: জুটন কী?
উত্তর: জুটন হলো ৭০% পাট এবং ৩০% তুলার সমন্বয়ে তৈরি এক প্রকার কাপড়।
প্রশ্ন ৯: বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাটকল কোনটি?
উত্তর: বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাটকল হলো আদমজী পাটকল, যা ১৯৫১ সালে স্থাপিত হয়।
প্রশ্ন ১০: আদমজী পাটকল কবে বন্ধ হয়ে যায়?
উত্তর: আদমজী পাটকল ৩০ জুন, ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায়।
প্রশ্ন ১১: আদমজী পাটকল পুনরায় চালু হয়েছে কি?
উত্তর: (এই তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আপডেট করা দরকার)।
প্রশ্ন ১২: আন্তর্জাতিক পাট সংস্থার সদর দপ্তর কোথায়?
উত্তর: আন্তর্জাতিক পাট সংস্থার সদর দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত।
প্রশ্ন ১৩: নারায়ণগঞ্জকে কী নামে ডাকা হয়?
উত্তর: নারায়ণগঞ্জকে “প্রাচ্যের ডান্ডি” বলা হয়।
বাংলাদেশের চা শিল্প সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশে মোট কতটি চা বাগান রয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশে মোট ১৬৩টি চা বাগান রয়েছে।
প্রশ্ন ২: বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশে প্রথম চা চাষ কবে শুরু হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম চা চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে।
প্রশ্ন ৩: বাংলাদেশের প্রথম চা বাগান কোথায় স্থাপিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রথম চা বাগান স্থাপিত হয় সিলেটের মালনিছড়ায়।
প্রশ্ন ৪: সর্বশেষ চা বাগান কোথায় তৈরি করা হয়েছে?
উত্তর: সর্বশেষ চা বাগান তৈরি করা হয়েছে পঞ্চগড়ে।
প্রশ্ন ৫: বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগান কোথায় তৈরি করা হয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগান তৈরি করা হয়েছে পঞ্চগড়ে।
প্রশ্ন ৬: বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রথম অর্গানিক চায়ের নাম কী?
উত্তর: বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রথম অর্গানিক চায়ের নাম “মীনা চা”।
প্রশ্ন ৭: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা কোথায় উৎপাদিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদিত হয় মৌলভীবাজারে।
প্রশ্ন ৮: বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৯: বাংলাদেশ চা জাদুঘর কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ চা জাদুঘর শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত।
প্রশ্ন ১০: বাংলাদেশ চা বোর্ড কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ চা বোর্ড চট্টগ্রামে অবস্থিত।
প্রশ্ন ১১: চা উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের কততম স্থানে রয়েছে?
উত্তর: চা উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে ১১তম স্থানে রয়েছে।
প্রশ্ন ১২: চা উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: চা উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো ভারত।
প্রশ্ন ১৩: চা রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ কোনটি?
উত্তর: চা রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলো কেনিয়া।
বাংলাদেশের অন্যান্য কৃষি ও শিল্প সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেশম কোথায় উৎপন্ন হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেশম রাজশাহীতে উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন ২: বাংলাদেশ রেশম বোর্ড কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ রেশম বোর্ড রাজশাহীতে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৩: বাংলাদেশে তামাক উৎপাদনে শীর্ষ অঞ্চল কোনটি?
উত্তর: বাংলাদেশে তামাক উৎপাদনে শীর্ষ অঞ্চল হলো রংপুর।
প্রশ্ন ৪: তুলা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি?
উত্তর: তুলা উৎপাদনে বাংলাদেশের শীর্ষ জেলা হলো যশোর।
প্রশ্ন ৫: বাংলাদেশের রাবার উৎপাদনের প্রধান স্থান কোথায়?
উত্তর: বাংলাদেশের রাবার উৎপাদনের প্রধান স্থান হলো কক্সবাজারের রামু। এছাড়া চট্টগ্রাম, মধুপুর এবং পার্বত্য চট্টগ্রামেও রাবার উৎপাদিত হয়।
প্রশ্ন ৬: বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প কোনটি?
উত্তর: বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প হলো তিস্তা বাঁধ প্রকল্প, যা রংপুরে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৭: বাংলাদেশ ইক্ষু (আখ) গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র ঈশ্বরদীতে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৮: বাংলাদেশ ডাল গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ ডাল গবেষণা কেন্দ্র ঈশ্বরদীতে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৯: বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র বগুড়ায় অবস্থিত।
প্রশ্ন ১০: বাংলাদেশ আম গবেষণা কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ আম গবেষণা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত।
প্রশ্ন ১১: জুমচাষ কী?
উত্তর: জুমচাষ হলো পাহাড়ে চাষ করার একটি বিশেষ কৌশল, যা সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীরা ব্যবহার করে।
প্রশ্ন ১২: বাংলাদেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর ময়মনসিংহে অবস্থিত, যা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এই তথ্যগুলো কৃষি ও শিল্প সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।