শিক্ষা

ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

ভিনক্লু নামে জাপানের এক প্রযুক্তি কোম্পানি ডিজিটাল প্রযুক্তির কৃত্রিম গৃহকর্মী তৈরি করেছে যার নাম দেওয়া হয়েছে হিকারি। এই গৃহকর্মীকে দেখা যাবে হলোগ্রাফিক পর্দায়। হিকারি তার গৃহকর্তাকে ঘুম থেকে জাগানো, গুড মর্নিং বলা, অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন বার্তা পাঠানোর কাজও করবে। রাফি সদ্য পড়াশুনা শেষ করে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছে। যেহেতু যে বাসায় একা থাকে তাই মাঝে মাঝে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। সেজন্য সে একটি হিকারি কেনার সিদ্ধান্ত নিলেন। যেহেতু হিকারির দাম বেশি তাই বাসা থেকে যেনো চুরি না হয় সেজন্য বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা করলেন। যাতে পরিচিত ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট বাটনে আঙুলের ছাপ দিয়ে বাসায় প্রবেশ করতে পারবে। যদিও নিরাপত্তার জন্য তার অফিসের টাকার ভোল্টে প্রবেশের জন্য মাইক্রোফোনে কথা বলে প্রবেশ করতে হয়।

ক. ক্রায়োসার্জারি কী?
খ. আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের হিকারি তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে রাফির বাসা ও অফিসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কৌশলের মধ্যে কোনটি বেশী উপযোগী— বিশ্লেষণপূর্বক তোমার মতামত দাও ৷

ক. ক্রায়োসার্জারি হলো এমন এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রোগাক্রান্ত টিস্যুগুলোকে ধ্বংস করা হয়। ক্রায়োসার্জারিতে অস্বাভাবিক টিস্যু ধ্বংস করতে নাইট্রোজেন গ্যাস বা আর্গন গ্যাস হতে উৎপাদিত চরম ঠান্ডা বাহ্যিক ত্বকের চামড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

খ. আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি হচ্ছে ন্যানোটেকনোলজি। ন্যানোটেকনোলজি হচ্ছে পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব ও বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞান।

অর্থাৎ ন্যানো প্রযুক্তির সাহায্যে ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুর উপাদান দিয়ে কাঙ্ক্ষিত কোনো বস্তুকে এতটাই ক্ষুদ্র করে তৈরি করা যায় যে, এর থেকে আর ক্ষুদ্র করা সম্ভব নয়। ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসাবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স, শক্তি উৎপাদনসহ বহু ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে।

গ. উদ্দীপকে হিকারি তৈরিতে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার অন্তর্গত রোবোটিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের চিন্তাভাবনা গুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মধ্যে রূপ দেওয়ার ব্যবস্থা। হিকারি তৈরিতে ব্যবহৃত রোবোটিক্স হলো প্রযুক্তির একটি শাখা যেটি রোবটসমূহের ডিজাইন, নির্মাণ, কার্যক্রম ও প্রয়োগ নিয়ে কাজ করে। পাশাপাশি এটি রোবটসমূহের নিয়ন্ত্রণ, সেন্সরি ফিডব্যাক এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমগুলোর জন্যও কাজ করে। এই

রোবোটিক্স প্রযুক্তি অটোমেটেড মেশিনগুলোর সাথে কাজ করে যা বিপজ্জনক পরিবেশ বা উৎপাদন প্রক্রিয়াসমূহে মানুষের স্থান দখল করে কিংবা মানুষের উপস্থিতি, আচরণ ইত্যাদির সাথে মিল থাকে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত রাফি সাহেবের বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কৌশল হচ্ছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির অন্তর্গত ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার এবং অফিসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কৌশল হলো ভয়েস রিকগনিশন।

রাফি সাহেবের ব্যবহৃত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির অন্তর্গত ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার কৌশলটি ভয়েস রিকগনিশন কৌশলের চেয়ে অধিক উপযোগী।
কারণ স্ক্যানারের মাধ্যমে মানুষের আঙ্গুলের ছাপের ইমেজ নেওয়ার পর তা কম্পিউটারে ফিঙ্গারপ্রিন্টের ইমেজ হিসেবে সংরক্ষণ না করে সংখ্যার সিরিজ (বাইনারি কোড)-কে ভেরিফিকেশনের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেমের অ্যালগরিদমে বাইনারি কোডকে ইমেজে পুন:রূপান্তর করতে পারে না। তাই কেউ ফিঙ্গারপ্রিন্টকে নকল করতে পারে না।

এছাড়া যে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে সনাক্তকরণে ব্যবহৃত নিরাপদ বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির বেশ কয়েক প্রকার পদ্ধতি তথা ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ডিএনএ, আইরিস ও রেটিনা স্ক্যানিং, ফেইসরিকগনিশন, ভয়েস ও সিগনেচার রিকগনিশন ইত্যাদি পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ফিঙ্গার প্রিন্ট বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিটিই অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় দামে সস্তা, ব্যবহার সহজ, শতভাগ বিশ্বাসযোগ্য। তাই রাফির নিরাপত্তা ব্যবস্থার কৌশলের মধ্যে ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তিটিই বেশি উপযোগী।

এই বিভাগ থেকে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button