টেলিমেডিসিন কী? শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সহজতর করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারলিখ।

মি. x একজন গবেষক। তিনি কম জায়গায় অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য গবেষণা করছেন। তার গবেষণাগারে মানুষের মত একটি যন্ত্র আছে। তিনি যা নির্দেশ দেন যন্ত্রটি তাই করে দেয়।
ক. টেলিমেডিসিন কী?
খ. শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সহজতর করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার লিখ।
গ. উদ্দীপকের মি. x এর গবেষণায় ব্যবহৃত প্রযুক্তির প্রয়োগক্ষেত্র লিখ ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত যন্ত্রটির গঠন বর্ণনা কর ।
ক. ভিডিও কনফারেন্সিং, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও চিকিৎসা সুযোগ প্রদান ও গ্রহণ করাকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।
খ. ক্লাসরুমে ইন্টারনেট ও অন্যান্য আইসিটিনির্ভর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে ‘ডিজিটাল ক্লাস’ তৈরি করা যায়। ক্লাসরুমে ছবি, অডিও-ভিডিও এনিমেশন ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাকে আর আকর্ষণীয় করা যায়। ক্লাসে ইন্টারনেটের ব্যবহার সহজলভ্য করা এবং শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার একটি ক্লাসকে অনেক কার্যকর করে তোলে। ই-বুক, প্রজেক্টর প্রভৃতির ব্যবহার ডিজিটাল ক্লাসে ব্যবহার করতে হবে।
গ. উদ্দীপকে মি. x এর গবেষণায় ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। জিন প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনো বিশেষ জিনকে ক্রোমোজোমের ডিএনএ (DNA) অণু থেকে পৃথক করে তাকে কাজে লাগানো। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রয়োগ ক্ষেত্র নিম্নরূপ :
- বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব থেকে তৈরি হচ্ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ।
- মানুষের বিভিন্ন ধরনের (হাঁপানি, ডায়াবেটিস, হৃদরোধ, ক্যান্সার ইত্যাদি) রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
- রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ (DNA) তৈরি করার মাধ্যমে প্রয়োজনমতো ও পরিমাণমতো বিশুদ্ধ মানব ইনসুলিন ও মানুষের বৃদ্ধিনিয়ন্ত্রণকারী হরমোন উৎপাদন করা যাচ্ছে।
- কৃষিবিজ্ঞানীরা অধিক ফলনশীল উন্নত মানের খাদ্যদ্রব্য (ধান, মটর, শিম ইত্যাদি) উৎপাদন করছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করছে। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করছে। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শস্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করছে ।
- নানা ধরনের ক্ষতিকর ও বিষাক্ত দূষণ পদার্থগুলো নষ্ট করে ফেলা যাচ্ছে।
- ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অপরাধকারী শনাক্তকরণ এবং সন্তানের পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ণয় করা যায়।
- কয়লা গ্যাস খনিতে মিথেন মুক্ত করার কাজে, আকরিক থেকে ধাতব পদার্থ যেমন- সোনা, ইউরেনিয়াম, তামা ইত্যাদি আহরণে, বন ধ্বংসকারী পোকা দমনে, আলু ও টমেটো ইত্যাদির পচনরোধে ব্যবহার করা হয়।
- টিস্যুকালচার পদ্ধতিতে পাতা থেকে গাছ তৈরি অথবা প্রাণীদেহের বিশেষ কোষগুচ্ছ থেকে কোনো বিশেষ অঙ্গ তৈরির কাজে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত যন্ত্রটি হলো রোবট। রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা- স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব। একটি সাধারণ রোবটে সাধারণত নিচের উপাদানগুলো থাকে।
- পাওয়ার সিস্টেম (Power systam) : সাধারণত লেড এসিড দিয়ে তৈরি রিচার্জেবল ব্যাটারি দিয়ে রোবটের পাওয়ার দেওয়া হয় ।
- মুভেবল বডি (Movable Body): রোবটের চাকা, যান্ত্রিক সংযোগসম্পন্ন পা অথবা স্থানান্তরিত হওয়ার যন্ত্রপাতি যুক্ত থাকে।
- ইলেকট্রিক সার্কিট (Electric circuit): রোবটকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে। একই সাথে হাইড্রোলিক ও নিউমেট্রিক সিস্টেমের রোবটকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে ।
- মস্তিষ্ক বা কম্পিউটার (Brain or Computer): রোবটের মস্তিষ্ক রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করে। আচরণ পরিবর্তন করতে হলে মস্তিষ্কে প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে হয় ।
- অ্যাকচুয়েটর (Actuator): একটি রোবটের হাত পা ইত্যাদি নড়াচড়া করার জন্য কতকগুলো বৈদ্যুতিক মোটরের ব্যবস্থা থাকে । একে একটি রোবটের হাত ও পায়ের পেশি বলে অভিহিত করা যায়।
- অনুভূতি (Sensing) : মানুষের অনুভূতি একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, তেমনি রোবটের অনুভূতি একটি বিশেষ উপাদান। রোবটের হাত বা পায়ের কোনো একটি জায়গায় স্পর্শ করলে সেই জায়গা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। চোখের ন্যায় ক্যামেরা দিয়ে সামনের বা পেছনের দৃশ্য নেওয়া হয় এবং 360° কোণ পর্যন্ত ঘুরাতে পারে ।
- ম্যানিপিউলেশন বা পরিবর্তন করা (Manipulation) : একটি রোবটের আশপাশের বস্তুগুলোর অবস্থান পরিবর্তন বা বস্তুটি পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে বলা হয় Manipulation। এখানে রোবটের হাতটি এই পরিবর্তনের যাবতীয় কাজ করে থাকে। প্রতিটি রোবটের হাতে কতগুলো আঙুল থাকবে যা নড়াচড়া করে কোনো বস্তু ধরতে পারবে।