ন্যানোটেকনোলজি কী? তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক- বুঝিয়েলেখ।

মি. “Y” তার বাবার ল্যাবরেটরিতে প্রবেশের সময় একটি বিশেষ সেন্সরের দিকে তাকানোর ফলে দরজা খুলে গেল। ভিতরে প্রবেশ করে দেখলো প্রথম কক্ষে জৈব তথ্যকে সাজিয়ে গুছিয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম তৈরি সংক্রান্ত গবেষণা এবং দ্বিতীয় কক্ষে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ (DNA) তৈরি সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়।
ক. ন্যানোটেকনোলজি কী?
খ. তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক- বুঝিয়ে লেখ।
গ. ল্যাবরেটরির দরজায় ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি বর্ণনা কর।
ঘ. ল্যাবরেটরিতে যে প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা হয় তাদের তুলনামূলক পার্থক্য বিশ্লেষণ কর ।
ক. ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ন্যানোমিটার স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়।
খ. তথ্য হচ্ছে এক ধরনের লিখিত, অডিও, ভিজুয়্যাল বা অডিও ভিজুয়্যাল বার্তা যার সাহায্যে একজন মানুষ স্থান, বস্তু, বিষয়, অবস্থা বা পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে।
একই ভাবে যোগযোগ হচ্ছে এরূপ বার্তা, বস্তু বা অন্য বিষয় স্থানান্তরের উপায় যার জন্য একটি মাধ্যম অর্থবোধক বার্তা, প্রেরক এবং গ্রাহক প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তি হচ্ছে সেই উপায় বা ব্যবস্থা যার সাহায্যে সহজে এবং স্বল্পতম সময়ে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সংরক্ষণ, বিতরণ এবং আদান-প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার একটি সমন্বিত ব্যবস্থা। তাই দেখা যাচ্ছে যে, তথ্য প্রযুক্তি (IT) এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি (CT) অনেকটা সমার্থক হিসেবে সর্বত্রই ব্যবহৃত হচ্ছে।
গ. ল্যাবরেটরিতে দরজায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি হচ্ছে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তির অন্তর্গত রেটিনা স্ক্যান প্রযুক্তি। আইরিস শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে চোখের তারার রঙিন অংশকে পরীক্ষা করা হয় এবং রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতিতে চোখের মনিতে রক্তের লেয়ারের পরিমাণ পরিমাপ করে মানুষকে শনাক্ত করা হয়।
এই পদ্ধতিতে কোনো জায়গায় অ্যাকাউন্ট খোলার সময় একটি ইমেজ সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে ঐ জায়গায় কোনো সময় প্রবেশ করতে চাইলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করার কাজটাও হয়ে যায়। এতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। বর্তমানে ব্যাংক, পুলিশের কাজকর্ম এবং বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণেও এ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
ঘ. উদ্দীপকে ল্যাবরেটরির প্রথম কক্ষে গবেষণার বিষয়টি হচ্ছে বায়োইনফরম্যাটিক্স এবং দ্বিতীয় কক্ষে গবেষণারত বিষয় হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
বায়োইনফরম্যাট্রিক্স হলো বিজ্ঞানের সেই শাখা যা বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করার জন্য কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে। বায়োইনফরম্যাট্রিক্স এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জৈবিক পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করা। অর্থাৎ জৈবিক পদ্ধতি বিষয়ে মূলত হিসাব নিকাশ করে ধারণা অর্জন করার চেষ্টা করা।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে যে পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষের নতুন জিন যোগ করে বা কোনো জিন অপসারণ করে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে জিন বেশি ব্যবহার উপযোগী করা হয়। জীবের কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থানরত ক্রোমোজোমের মধ্যে চেইনের মতো পেঁচানো কিছু বস্তু থাকে যাকে (DNA) বলে। এই DNA অনেক অংশে বিভক্ত এবং এর একটি নির্দিষ্ট অংশকে জিন বলে। জেনেটিক ইনঞ্জিনিয়ারিং এ বংশগতি সংক্রান্ত বিষয়ে আহরিত জ্ঞানকে মানুষের মঙ্গলের উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হয়।