এক বছরের ঊর্ধ্বে এবং পাঁচ বছর পর্যন্ত মেয়াদের জন্য সংগৃহীত তহবিল মধ্যমেয়াদি অর্থায়ন হিসেবে পরিগণিত। একটি প্রতিষ্ঠান মধ্যমেয়াদি তহবিল ব্যবহার করে ব্যবসায়ের চলমান মূলধনের দীর্ঘমেয়াদি প্রয়ােজন মিটায়। এই তহবিলের খরচ বা সুদের হার স্বল্পমেয়াদি তহবিলের খরচ হতে বেশি এবং দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের খরচ হতে কম হয়। বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যভেদে এর উৎস আললাচনা করা হলাে :
বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রদত্ত ঋণ
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলাে যেসব ঋণ মধ্যম মেয়াদের জন্য প্রদান করে, তা সাধারণত জামানতের বিপরীতে দেয়া হয়। জামানত হিসাবে চলতি সম্পদ অথবা স্থায়ী সম্পত্তি ও ব্যবহারযােগ্য। একটি প্রকল্পে বেশি পরিমাণে ঋণ প্রদান একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ফলে বেশি পরিমাণে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে অনেকগুলাে বাণিজ্যিক ব্যাংক একত্রিত হয়ে সিন্ডিকেশন প্রক্রিয়ায় দলগত ব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে বড় আকারের ঋণ প্রদানের ঝুঁকি গ্রহণ করে। বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ প্রদানের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নির্ধারিত সুদের হার ও ঋণের চাহিদা বিচার-বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট হারে সুদ ধার্য করে।
বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান
সাধারণত রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে বিশেষ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলা হয়, যেগুলাে বিশেষ বিশেষ খাতের উন্নয়নের স্বার্থে নিয়ােজিত থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক শর্তে মধ্যমেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ: শিল্প ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশে বেশ কিছু এনজিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ও কর্মরত আছে, যেগুলাে ব্যবসা। প্রতিষ্ঠানকে মধ্যমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে। যেমন: মাইডাস, ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান ও অর্থায়নের উৎস এনজিও হিসেবে আইনগত সত্তা লাভ করে এখানে ব্যবসায় করছে। এসব প্রতিষ্ঠান তহবিল প্রদান ছাড়াও পরামর্শ দান, প্রশিক্ষণ দান, দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রভৃতি ব্যাপারেও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করে থাকে।
মূলধনি বাজারের প্রতিষ্ঠান
বিভিন্ন প্রকার মূলধনি প্রতিষ্ঠান যেমন: বিমা প্রতিষ্ঠান, বিনিয়োেগ ব্যাংক, অর্থ মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান (অবলেখক) ও মধ্যমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে।