৫২’র ভাষা আন্দোলন পূর্ববাংলার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এক ধাপ এগিয়ে দেয় । জনগণের মধ্যে এ আন্দোলন এক নতুন জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটায়। এ চেতনাই ক্রমে ক্রমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয় ।
জনগণের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙক্ষাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দেয় এ আন্দোলন । তাই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল। বাংলাদেশের গণচেতনার প্রথম বহিঃপ্রকাশ এবং স্বাধিকার আন্দোলনের এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
১৯৮০ সালের ‘জিজ্ঞাসা’র একুশে সংকলনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন এক নতুন দিকদর্শন, এই আন্দোলন বাঙালিদের মনে যে বৈপ্লবিক চেতনা ও ঐক্যের উন্মেষ ঘটায় তা আমাদের পরবর্তী সকল আন্দোলনের প্রাণশক্তি ও অনুপ্রেরণা যােগায়।
এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের করে তা ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ঐতিহাসিক বিজয়।
১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের স্বাধিকার আন্দোলন ও ছয় দফা, ১৯৬৮-৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষভাবে প্রেরণা যুগিয়েছে এ ভাষা আন্দোলন। অতএব বলা যায়, ভাষা আন্দোলনই ধাপে ধাপে পরবর্তী। সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভবকে ত্বরান্বিত করেছে।