১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রহসন, ২৫ মার্চ রাতে বাঙালিদের ওপর নিম হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেয়া হয়। এ সগ্রামে ছাত্র-যুব-জনতা, সেনা, পুলিশ ও আনসার বাহিনী একযােগে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং গঠিত হয়। মুক্তিবাহিনী। এ মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালনা করার জন্যই মুজিবনগরে গঠিত হয় একটি বিপ্লবী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায়’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়। এ সময় এ স্থানের নতুন নামকরণ হয় মুজিবনগর। তাই এ বিপ্লবী সরকারকে ‘মুজিবনগর সরকারবলে আখ্যায়িত করা হয়।
আরো পড়ুন :
- বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিতে বরেন্দ্র অঞ্চল এবং বরেন্দ্র জাদুঘরের গুরুত্ব
- বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহিদমিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং সংসদ ভবনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব
- বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য
- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রভাব
এ সরকারে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ। মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করা হয় এবং তার অনুপস্থিতিতে সরকারপ্রধানের দায়িত্বভার অপিত হয় সৈয়দ নজরুল ইসলামের ওপর। তার নেতৃত্বে বিপ্লবী সরকারের অন্য দপ্তরগুলাে নিম্নরূপ :
- প্রধানমন্ত্রী : তাজউদ্দীন আহমদ,
- পররাষ্ট্র দফতর : খােন্দকার মােশতাক আহমদ,
- অর্থ দফতর : ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী,
- স্বরাষ্ট্র দফতর : এ এইচ এম কামারুজ্জামান।
পরে এম এ জি ওসমানীকে করা হয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী।
এছাড়া এই বিপ্লবী সরকারকে প্রয়ােজনীয় দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়ার জন্যই গঠিত হয় একটি উপদেষ্টা। পরিষদ। এতে ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাপ (মােজাফফর), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও কংগ্রেসের একজন করে যথাক্রমে আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অধ্যাপক মােজাফফর আহমদ, কমরেড মণি সিং, শ্ৰী মনােরঞ্জন ধর এবং আওয়ামী লীগের ৫ জন সদস্য নিয়ে এ পরিষদ গঠিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিপ্লবী সরকারকে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ দিতেন এবং নীতি নির্ধারণে সহায়তা করতেন।