স্মার্ট ক্যারিয়ার গড়তে শুধু পুঁথিগত বিদ্যাই যথেষ্ট নয়, প্রয়ােজন সাবলীলভাবে কথা বলার যােগ্যতা। সুন্দর এবং মার্জিত কথা ক্যারিয়ারে নিয়ে আসবে কাক্ষিত সাফল্য। নিম্নোক্ত কৌশল অনুসরণ করে আপনিও সাবলীলভাবে কথা বলা বা বক্তব্য দিতে পারবেন অনায়াসে।
সঠিক প্রস্তুতি ও অনুশীলন
বক্তব্য যে বিষয়ের ওপর দিতে হবে, সে সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখা জরুরি। সেই সাথে ভালাে বক্তা হতে হলে অনুশীলনের বিকল্প নেই। এজন্য প্রতিনিয়ত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চর্চা করা যেতে পারে।
বক্তব্যের বিষয়বস্তু সাজিয়ে নেওয়া
কথা বলার সময় এলােমেলােভাবে কথা বলে সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলতে হবে। প্রয়ােজনে বক্তব্যের কাঠামাে পূর্বেই দাঁড় করিয়ে নিতে হবে। বক্তব্যে সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত বিষয়ের ওপর গুরুত্বারােপ করা জরুরি।
শুরুতেই মনােযােগ আকর্ষণ
দর্শকের মনােযােগ আকর্ষণ করতে গতানুগতিকভাবে বক্তব্য শুরু না করে । চমকপ্রদ কোনাে তথ্য বা অসাধারণ কিছু বলে বক্তব্য শুরু করা যেতে পারে। বক্তব্য শেষ করার সময় পুরাে বক্তব্যের সারমর্ম বা উদ্দীপনাদায়ক কথা দিয়ে শেষ করতে হবে, যা । বক্তব্যকে হৃদয়গ্রাহী করে তুলবে।
স্বরভঙ্গির যথাযথ ব্যবহার
যেকোনাে কথা সঠিক শব্দ ব্যবহারে। সহজভাবে বলার চেষ্টা করতে হবে। ভাষার জটিলতা পরিহার করতে হবে। হাসিমুখে কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। ভালাে বক্তারা অপ্রয়ােজনীয় কথা বাদ দিয়ে সংযত হয়ে কথা বলেন।
চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা
ভালাে বক্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে শ্রোতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা। এতে বক্তার সাথে শ্রোতার। সেতুবন্ধন রচিত হয়। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার অভ্যাস করতে পারলে বক্তার আত্মবিশ্বাসও অনেক। বেড়ে যাবে।
দর্শকের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া
দর্শকের চাহিদা ও উদ্দেশ্যের দিকে নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করতে হবে, প্রয়ােজন হলে বক্তব্যে কিছু পরিবর্তন এনে বক্তব্য। দিতে হবে। একদম গত্বাঁধা বক্তব্য দিলে সবচেয়ে আগ্রহী শ্রোতারও মনােযােগ নষ্ট হবে।
নিজস্বতা বজায় রাখা
যে বিষয়ে কথা বলা হােক না কেন, বক্তব্যে নিজস্বতা বজায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, শ্রোতারা। বক্তার কথা, ধারণা, চিন্তাচেতনা হতে ভালাে কিছু গ্রহণ করতে এসেছেন। তাই সবসময় বক্তব্যে নিজস্বতা বা মৌলিকতা বজায় রাখতে হবে।
Mentors’ Speech |
বড় স্বপ্ন দেখা ও তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার মাঝে রয়েছে জীবনের সাফল্য। প্রখ্যাত মার্কিন লেখক অধ্যাপক ডেভিড জে, শর্টজ তার বিখ্যাত The Magic of Thinking Big বইয়ে এ সাফল্য লাভের কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছেন সেগুলাে হলাে-
|
ঘটনা বা গল্পের মাধ্যমে আকৃষ্ট করা
বক্তব্যে প্রাসঙ্গিক মজার কোনাে ঘটনা, গল্প বা কৌতুক থাকলে দর্শক অবশ্যই আকৃষ্ট হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও শ্রোতাদের।
সঙ্গে শেয়ার করা যেতে পারে।
কথার মাঝে বিরতি দেওয়া
আলােচনাকে সুন্দর, প্রাণবন্ত, গােছালাে করে তুলতে কথার মাঝে মাঝে সময় নিতে হবে। পুরাে বিষয়টির জন্য। মানসিক চাপ না নিয়ে বক্তব্যকে সহজভাবে নিতে হবে। ধীরস্থিরভাবে স্পষ্টভাবে বক্তব্য তুলে ধরতে হবে।
কথার মাঝে ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তােলা
পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত পােশাক পরিধান করতে হবে। সবসময় সাবলীলভাবে এবং স্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গিতে কথা বলতে হবে। এতে শ্রোতারা মনােযােগ দিয়ে। কথা শুনবে।
বক্তৃতায় অন্যকে আঘাত না করা
বক্তব্যে অন্য কোনাে ব্যক্তি, সমাজ, জাতি কিংবা ধর্মকে আঘাত করা যাবে। বিনয়ী হতে হবে, অন্যের আবেগ অনুভূতিকে সম্মান করতে হবে, তাহলে বক্তা হিসেবে আপনার গ্রহণযােগ্যতা আরও বাড়বে।
নিজের ওপর আস্থা রাখা
শ্রোতা কী ভাবছে এটা না ভেবে বিষয়বস্তুর ওপর নজর দিতে হবে। এছাড়া বক্তৃতা দিতে গিয়ে ছােটখাটো ভুল হওয়া স্বাভাবিক ভেবেই বক্তৃতা দিতে হবে। হীনম্মন্যতায় না ভুগে সঠিক আত্মবিশ্বাস থেকে নির্বিঘ্নে কথা বলতে হবে। এতে শ্রোতারা সানন্দে তা গ্রহণ করবেন।
সুতরাং আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী হয়ে উপরিউক্ত কৌশলগুলাে আয়ত্ত করলে। আপনিও সাবলীলভাবে বক্তব্য দিতে পারবেন। আর হতে পারবেন একজন দক্ষ বক্তা।