জাতীয় ফল কাঁঠাল

Preparation BD
By -
0

জাতীয় ফল কাঁঠাল

সূচনা

দৃষ্টিকাড়া ফুল আর অজস্র উপাদেয় ফলে বাংলার প্রকৃতি ভরপুর। প্রকৃতির অসংখ্য ফল ভােজনরসিক বাঙালিকে তুষ্ট করে। এসব ফলের। বিচিত্র নাম, ভিন্ন রূপ, নানা স্বাদ ও গন্ধ। গ্রীষ্মের ফল কাঁঠাল। এ-ফল গন্ধ, স্বাদ ও আকৃতিতে বাঙালির অতিপ্রিয়। কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল।

আকার-আকৃতি

জঙ্গল থেকে বাইর অইল এক ব্যাটা গায়ে তার একশাে একটা কাঁটা ॥

প্রচলিত এই ধাঁধাটির অর্থ হলাে কাঁঠাল। গায়ে কাঁটার আবরণে কাঁঠাল ফলরাজ্যে নিজের স্বাতন্ত্রই ঘােষণা করে। আকৃতিতে এটি অনেক বড়। এক কেজি থেকে বিশ কেজি পর্যন্ত হতে পারে একটি কাঁঠালের ওজন। কাঁচা কাঁঠাল সবুজ বা সবুজাভ হলুদ কিংবা হলদেটে রঙের হয়ে থাকে। কাঁঠাল গাছ এবং ফল দুটোতেই থাকে সাদা দুধের মতাে কষ। কঁঠাল গাছ মাঝারি থেকে বড় হয়ে থাকে। একটি গাছে ধরে অনেক অনেক কাঁঠাল। গাছের গােড়া থেকে শাখা পর্যন্ত কাঁঠাল ফলে।

প্রাপ্তিস্থান

কাঁঠাল বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই পাওয়া গেলেও গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, ময়মনসিংহ এবং যশোের অঞ্চলে এর ফলন বেশি হয়। মূলত লৌহ-সমৃদ্ধ লাল মাটিতে কাঁঠাল ভালাে জন্মে। পাহাড়ি কাঁঠালের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও বান্দরবানের পাহাড়ে বিশেষ আকারের কাঁঠাল জন্মে। স্বাদেও এ-এলাকার কাঁঠাল সমতলভূমির কাঁঠাল থেকে পৃথক। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কাঁঠাল বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

ব্যবহার্য অংশ

কাঁঠাল অসংখ্য কোষসমৃদ্ধ হয়ে থাকে। কাঁচা অবস্থায় তা কেটে রান্না করে খাওয়া হয়। কাঁঠালের সব অংশই ব্যবহার করা যায়। কাঁঠালের কোষ এবং বিচি মানুষের উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাবার। এর ছাল গবাদিপশুর খাবার। কাঁঠালের বিচি ভেজে কিংবা রান্না করে খাওয়া যায়।

পাকা কাঁঠালের গন্ধ ও স্বাদ অতুলনীয়। কবির ভাষায় :

কাঁঠাল কণ্টকে ঘেরা ভিতরেতে কোষ,
তার তরে এ ফল কেবা দেয় দোষ।

কাঁঠাল পাকার পর এর মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে ওঠে। গাছের চারদিক পাখি বা কীট ছুটে আসে এর আস্বাদ নিতে।

চাষপদ্ধতি

কাঁঠাল উঁচু জমির ফল। যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না, সেখানে কাঁঠাল গাছ ভালাে জন্মে। বীজ এবং কলমের মাধ্যমে কাঁঠাল গাছের বংশবৃদ্ধি ঘটানাে যায়। বীজ থেকে চারা উৎপন্ন করলে সেই চারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে রােপণ করলে উৎপাদন ভালাে হয়।

অপকারিতা

মুখরােচক হলেও কাঁঠাল একটি গুরুপাক খাদ্য। বেশি কাঁঠাল খেলে পেটের পীড়া হতে পারে। কাঁঠালের আঠা খুবই বিরক্তিকর। হাতে আঠা লাগলে আর কাঁঠালের কোষ ছাড়াতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু কাঁঠালই ফলের মধ্যে সবচেয়ে আমিষসমৃদ্ধ ফল।

উপসংহার

কাঁঠাল বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশের উঁচু এলাকায় সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে কাঁঠালের উৎপাদন বাড়ানাের প্রতি আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। তা ছাড়া কাঁঠালের জুস বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণ করে বাজারজাত করা যেতে পারে। এ-বিষয়ে আমাদের জাতীয়ভাবে সচেতন হওয়া প্রয়ােজন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !