কোনাে রাষ্ট্রের উন্নতি, অগ্রগতি ও সাফল্য তার নাগরিকের ওপর নির্ভর করে। সেজন্য নাগরিকদের সুনাগরিক হওয়া প্রয়ােজন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লর্ড ব্রাইসের (Lord Bryce) মতে সুনাগরিকের গুণাবলি হল তিনটি-
- বুদ্ধিমত্তা
- আত্মসংযম ও
- বিবেক
লর্ড ব্রাইস বর্ণিত এই তিনটি গুণ একজন সুনাগরিকের জন্য অপরিহার্য।
১। বুদ্ধিমত্তা : রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন, সরকার গঠন, শাসনকার্য পরিচালনা, সরকারি নীতি প্রণয়ন ইত্যাদি কার্য সম্পাদনের জন্য নাগরিকের বুদ্ধিমত্তার প্রয়ােজন। বুদ্ধিমান নাগরিক রাষ্ট্রে সুবিধা ভােগের সাথে সাথে নিজের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়। বুদ্ধি বিকাশের জন্য শিক্ষার প্রয়ােজন। সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করে সকল নাগরিককে সচেতন করে তােলা সরকারের দায়িত্ব।
২। আত্মসংযম : সরকারের প্রতি অনুগত থেকে এবং আইন মেনে চলে একটি সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র গঠনের জন্য নাগরিকদের আত্মসংযম একটি অপরিহার্য গুণ। আত্মসংযম রাষ্ট্রের বৃহত্তম স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে নাগরিকদের অনুপ্রাণিত করে। এছাড়া প্রমতসহিষ্ণু হওয়ার জন্যও আত্মসংযম প্রয়ােজন। সমস্ত লােভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিমুক্ত থাকার জন্যও আত্মসংযম একান্ত আবশ্যক। সুতরাং আত্মসংযম নাগরিকের একটি শ্রেষ্ঠ গুণ।
৩। বিবেক : রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনের জন্য এবং রাষ্ট্রের মঙ্গল ও কল্যাণ সাধনের জন্য নাগরিককে বিবেকবান হতে হবে। বিবেকবান ব্যক্তি আপন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেতন থাকে। রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য যে কোনাে ব্যবস্থা গ্রহণে আগ্রহী হয়। ন্যায় অন্যায় বিচার-বিবেকের ওপর নির্ভরশীল। সমাজসেবা, দেশপ্রেম বিবেকবােধ থেকেই সৃষ্টি হয়। সুতরাং বুদ্ধিমত্তা, আত্মসংযম, বিবেক ইত্যাদি গুণবিশিষ্ট নাগরিকদেরই সুনাগরিক বলা হয়