রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী তীব্র জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে তেল-গ্যাসের প্রবাহ। জ্বালানি পণ্যের দামও বাড়ছে ক্রমাগত। ফলে পরিবর্তিত বিশ্বে অনেক দেশ কয়লাভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। ইতিমধ্যে জার্মানিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলাে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীন ও ভারতেও বাড়ছে কয়লার উৎপাদন।
পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, পায়রা, পটুয়াখালী
চলতি বছরের ২১ মার্চ দেশের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ নদের পাশে নির্মিত এই কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল), চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপাের্ট অ্যান্ড এক্সপাের্ট করপােরেশন (সিএমসি) এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল)। কয়লাভিত্তিক এই প্ল্যান্টে ব্যবহার করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের অবস্থান কোথায়?
উত্তর : পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ নদের পাশে।
প্রশ্ন : কোন দেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মিত হয়েছে?
উত্তর : চীন।
প্রশ্ন : পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদনক্ষমতা কত?
উত্তর : ১৩২০ মেগাওয়াট।
প্রশ্ন : পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র কোন ধরনের জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র?
উত্তর : কয়লাভিত্তিক।
প্রশ্ন : বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা কত মেগাওয়াট?
উত্তর :২৫ হাজার মেগাওয়াট।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল), বাগেরহাট
চলতি বছর কয়লাভিত্তিক এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের কথা রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ বিনিয়ােগে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। এখান থেকে দুই ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে মােট ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এতেও আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক নাম কী?
উত্তর : মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল)।
প্রশ্ন : প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা
উত্তর : বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)
প্রশ্ন : বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল অবকাঠামাে তৈরির দায়িত্ব পালন করছে কোন প্রতিষ্ঠান?
উত্তর : ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল)।
প্রশ্ন : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে?
উত্তর : আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি।
প্রশ্ন : সুন্দরবন থেকে রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দূরত্ব কত?
উত্তর : ১৪ কিমি।
আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল
আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সালফার অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের পার্টিকেলগুলাে ট্র্যাপ করে ফেলা যায়। ফলে সেগুলাে বাতাসে বেরােতে পারে না।