সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হলো এমন একটি নিরাপদ বেষ্টনী যার মাধ্যমে সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। দেশে দেশে জনগণের প্রয়োজন অনুসারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গড়ে তোলা হয় । এটি আধুনিক কল্যাণরাষ্ট্রের সামাজিক নীতির অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ।
বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের কথা বলা হয়েছে। এটির মাধ্যমে সমাজের মানুষের মধ্যে পরস্পর সহাবস্থান এবং সম্প্রীতির একটি সুষম পরিবেশ তৈরি করা হয়। এর উদ্দেশ্য বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ও সামাজিক দুর্যোগের ফলে মানুষের মধ্যে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা মোকাবিলা, বিভিন্ন আইনি সহায়তা এবং অসুস্থতা, বেকারত্ব, শিল্পদুর্ঘটনা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সহায়তা করা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতের আওতায় ১২৩টি কর্মসূচি রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলোর মধ্যে ৮টি কর্মসূচি হচ্ছে নগদ ভাতা, আর ১১টি খাদ্য সহায়তা।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য— বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি কার্যক্রম, বেদে ও অনগ্রসর মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ কার্যক্রম, অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কার্যক্রম, শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, কিডনি এবং লিভার সিরোসিস রোগীদের সহায়তা কার্যক্রম, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি, গৃহহীন ও ছিন্নমূলদের আবাসন কার্যক্রম, সর্বসাধারণের জন্য পেনশন কার্যক্রম ইত্যাদি।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে মোট ১,১৩,৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দারিদ্র্য বিমোচনে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি SDC’র মূল প্রতিপাদ্য ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ (No one leaving behind) স্লোগানকে পূর্ণতাদানে কার্যকর ভূমিকা রাখছে ।