রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’ ও ‘বিশ্বকবি’ হিসেবে অভিহিত কবির জন্মদিন ৭ মে উপলক্ষ্যে আমাদের এই বিশেষ আয়োজন ।
- জন্ম : ৭ মে ১৮৬১ (২৫ বৈশাখ ১২৬৮)।
- মৃত্যু : ৭ আগস্ট ১৯৪১ (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮)।
- জন্মস্থান : কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার ।
- পিতা : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- পিতামহ : প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।
- মাতা : সারদাসুন্দরী দেবী।
- পারিবারিক উপাধি : কুশারী ।
- বংশ: পিরালি ব্রাহ্মণ ।
- শিক্ষা : কবিগুরু বাল্যকালে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশুনা করেন। ১৮৭৮ সালে তাঁকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। শিক্ষা অসম্পূর্ণ রেখে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
- ছদ্মনাম : ভানুসিংহ ঠাকুর, অকপট চন্দ্র, দিকশূন্য ভট্টাচার্য, আন্নাকালী পাকড়াশী ।
- সম্পাদিত পত্রিকা : বঙ্গদর্শন (১৯১০), ভারতী (১৮৯৮), সাধনা (১৮৯৪), তত্ত্ববোধিনী (১৯১১)।
- ঢাকা আগমন : প্রথমবার ১৮৯৮ সালে। ১৯২৬ সালে দ্বিতীয়বার এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বক্তব্য রাখেন।
- প্রথম বক্তব্য ছিল — The Meaning of Arts ও দ্বিতীয়টি— The Big and The Complex
- বাংলাদেশে স্মৃতিবিজড়িত স্থান : শিলাইদহ, শাহজাদপুর, পতিসর, দক্ষিণডিহি ।
- আদি বাসস্থান : খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রাম ।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
- কাব্যগ্রন্থ : কবি কাহিনী (১৯৭৮, প্রথম), বনফুল (১৯৮০), ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী (১৮৮৪), সোনার তরী (১৮৯৪), ক্ষণিকা, বলাকা, গীতাঞ্জলি (১৯১০)।
- উপন্যাস : করুণা (১৮৭৮), বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩, প্রথম), চোখের বালি (১৯০৩), নৌকাডুবি (১৯০৬), গোরা (১৯১০), ঘরে বাইরে, শেষের কবিতা ।
- নাটক: বাল্মীকির প্রতিভা (১৮৮১, প্রথম), বসন্ত, রক্তকরবী, ডাকঘর, অচলায়তন, কালের যাত্রা।
- প্রহসন: বৈকুন্ঠের খাতা (১৮৯৭), চিরকুমার সভা, গোড়ায় গলদ ।
- ছোটগল্প : ভিখারিনী, পোস্টমাস্টার, কাবুলিওয়ালা, জীবিত ও মৃত, ক্ষুধিত পাষাণ ।
- আত্মজীবনী : জীবনস্মৃতি, আত্মপরিচয়, ছেলেবেলা ।
- ভ্রমণ কাহিনি : য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র, জাপান-যাত্ৰী, রাশিয়ার চিঠি, জাভা-যাত্রীর পত্র।
- সংকলন : চয়নিকা, সঞ্চয়িতা।
- প্রবন্ধ : কালান্তর, সভ্যতার সংকট, মানুষের ধর্ম।
- উৎসর্গকৃত গ্রন্থ : বসন্ত— কাজী নজরুল ইসলামকে, তাসের দেশ— সুভাষ চন্দ্র বসুকে, কালের যাত্রা— শরৎচন্দ্রকে, পূরবী— আর্জেটিনার কবি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে।
পুরস্কার/সম্মাননা
- ১৯১৩ সালের ১৩ নভেম্বর ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের ইংরেজি সংস্করণ Song Offerings এর জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
- ১৯১৫ সালের ৩ জুন ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘নাইটহুড’ উপাধি প্রদান করে।
- ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল সংঘটিত জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ২৭ মে কবিগুরু এই উপাধি ত্যাগ করেন ।
- ডি.লিট (১৯৪০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৫ সালে কাশী বিশ্ববিদ্যালয়)।
বিশেষ তথ্য
- কবিগুরু ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ লেখেন— ‘ব্রজবুলি’ ভাষায়।
- ‘গতিবাদের কাব্য’ বলা হয়— ‘বলাকা’ কাব্যগ্রন্থকে।
- ১৮৬৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বোলপুরে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠা করেন— শান্তিনিকেতন ।
- ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠা করেন— ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’।
- ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’-কে পরে ‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’- এ উন্নীত করা হয়— ১৯২১ সালে ।
- বাংলায় টি এস এলিয়টের কবিতা প্রথম অনুবাদ করেন— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- “আমার সোনার বাংলা’ কবিতাটি ‘সঞ্জীবনী’ ও ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় – ১৯০৫ সালে ।
- ‘বনফুল’ কাব্যকে কাব্যোপন্যাস বলে অভিহিত করেন— সুকুমার সেন ।
- রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন— ১৯০১ সাল থেকে ।
- জাতীয় সংগীত হিসেবে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটির দশ লাইন গৃহীত হয়— ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি ।
- ১৯১২ সালে ‘লন্ডন ইন্ডিয়া সোসাইটি’ প্রথম প্রকাশ করে— ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’ ।
- রবীন্দ্রনাথ ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্য উৎসর্গ করেন— ইংরেজ বন্ধু রোদেনস্টাইনকে।
- ‘ Song Offerings’ কাব্যের ভূমিকা লেখেন— W.B. Yeats