ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত তিন হাজার সাতশ বছর আগের একটি মৃন্ময় পাত্রে লিখিত কবিতার উল্লেখ দিয়ে শুরু করা যাক। এটি পাওয়া গিয়েছিল বর্তমান দক্ষিণ ইরাকে। যুগটা ব্যাবিলনীয় সভ্যতার। অমরত্ব- পিয়াসী নৃপতি গিলগামেশের কথা বলা হয়েছে সেখানে। বিস্তৃত বর্ণনা। কিন্তু কত জন পড়তে পেরেছেন সেই কবিতা?
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত সেই পাত্রের পাঠোদ্ধার হয়েছে। আমরা জেনেছি গিলগামেশের কথা। কিন্তু সেই চার হাজার বছর আগের পৃথিবীতে এমন কবিতা পাঠ করতে পারতেন কেবল হাতেগোনা কিছু মানুষ। তাঁরা সমাজের অভিজাত শ্রেণী। কিন্তু এ যুগে এটি লেখা হলে কবি একটি বৃহত্তর পাঠককূল পাওয়ার আশা করতে পারতেন। এর কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে মানবজাতির মধ্যে সাক্ষরতার হার এখন সর্বোচ্চ ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যমতে, বর্তমান পৃথিবীর আটশ কোটি মানুষের ৮৬ শতাংশ সাক্ষর। ২০১৫ সালে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে শতভাগ সাক্ষর করার অঙ্গীকার রয়েছে। এমন বাস্তবতায় ৮ সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস।
দিবসের কথকতা
১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ১৪তম অধিবেশনে ৮ সেপ্টেম্বরকে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৬৭ সাল থেকে জাতিসংঘ দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে জাতিসংঘের সবগুলো সদস্য রাষ্ট এ দিবস পালন করে। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবার এ দিবস উদযাপন করেন।
সাক্ষরতার পরিবর্তিত সংজ্ঞা
সাক্ষরতা সম্পর্কে সনাতনী ধারণা হচ্ছে— এটি হলো লিখতে, পড়তে ও অঙ্ক কষতে পারার দক্ষতা । কিন্তু বর্তমান বিশ্ব ক্রমবর্ধমান হারে ডিজিটাল হচ্ছে। জ্ঞান ও দক্ষতা ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ভাষায়। তথ্যের ভান্ডারে সমৃদ্ধ হয়ে চারপাশ বদলে যাচ্ছে দ্রুত। তাই নতুন যুগের সংজ্ঞায় সাক্ষরতা হচ্ছে এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা ব্যক্তিকে তথ্য চিহ্নিতকরণ, উপলব্ধির সক্ষমতা, ব্যাখ্যা দান, নতুন সৃষ্টি ও যোগাযোগের দক্ষতায় সমৃদ্ধ করবে। আর এই প্রক্রিয়াটি হবে বহমান। অর্থাৎ ব্যক্তি জীবনভরই শিখবেন। একঝাঁক উন্নততর উৎকর্ষতা অর্জন করবেন। যেমন ডিজিটাল জ্ঞান, নিয়োগ-সংক্রান্ত দক্ষতা, গণমাধ্যম সম্পর্কে ধারণা, টেকসই উন্নয়নের ব্যুৎপত্তি এবং বৈশ্বিক নাগরিকত্বের বোধ।
প্রযুক্তির সহায়তায় মানুষ যত বেশি হারে তথ্য সংগ্রহ ও শিখন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে, এসব দক্ষতাও তত বেশি প্রসারিত ও বিবর্তিত হচ্ছে। সাক্ষরতা ব্যক্তির ক্ষমতায়ন করে, মুক্ত করে তাকে। আর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব হিসেবে দারিদ্র্য দূর হয়, শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ বাড়ে এবং স্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়নের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সাক্ষরতা সমাজে সামগ্রিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটায়। এতে পরিবারের শিশুদের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি মানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। জীবনভর শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের মধ্যে থাকলে ব্যক্তির বিপুল ক্ষমতায়ন ঘটে। আর এ সবকিছুর সামগ্রিক প্রভাবে দারিদ্র্য দূর হয়। প্রত্যেক মানুষের জন্য তৈরি হয় সুযোগ ও সম্ভাবনার দুয়ার ।
সমসাময়িক বিশ্বে সাক্ষরতা শুধু শিশু ও তরুণদের জন্য জরুরি নয়— বয়স্কদেরকেও জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। তাদের দরকার সাধারণ পড়াশুনা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল দক্ষতা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বৈশ্বিক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ।
বৈশ্বিক সাক্ষরতা
গত কয়েক দশকে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার হারে অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখা গিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ১৯৭৬ সালে পৃথিবীতে সাক্ষরতার হার ছিল ৬৭ শতাংশ, যা ২০০১ সালে ৮১ শতাংশে উন্নীত হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে বিশ্বের সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৮৬ শতাংশের বেশি। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ৯৮ শতাংশ শিক্ষিত। এই বয়সী পুরুষদের সাক্ষরতার হার ৯৩ শতাংশ এবং নারীদের ৯১ শতাংশ। কিন্তু বৈশ্বিক জনসংখ্যার যে ১৪ শতাংশ এখনও নিরক্ষর রয়ে গিয়েছেন, সংখ্যায় তারা ৭৬৩ মিলিয়ন (৭৬ কোটি ৩০ লাখ)। শিশুদের মধ্যে আড়াইশ মিলিয়ন তথা ২৫ কোটি এখনও মৌলিক সাক্ষরতা থেকে বঞ্চিত ।
এসডিজি ও সাক্ষরতা
বর্তমান সহস্রাব্দের শুরুতে জাতিসংঘ ১৫ বছর মেয়াদি ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এমডিজি) গ্রহণ করে। সেটির মেয়াদ শেষ হলে নতুন বৈশ্বিক পরিকল্পনার তাগিদ অনুভূত হয়। সে লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫-২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা হয়। গৃহীত হয় ১৫ বছর মেয়াদি ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এসডিজি)। ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনের জন্য ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে অভীষ্ট রয়েছে ১৬৯টি লক্ষ্যগুলোর মধ্যে চতুর্থটি শিক্ষা ও সাক্ষরতা সংক্রান্ত । এগুলো অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে রাষ্ট্রগুলোর। অভীষ্টগুলো সংক্ষেপে এরকম—
৪.১ ২০৩০ সালের মধ্যে প্রত্যেক বালক-বালিকা যাতে প্রাসঙ্গিক, কার্যকর ও ফলপ্রসূ অবৈতনিক, সমতাভিত্তিক ও গুণগত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
৪.২ ২০৩০ সালের মধ্যে প্রত্যেক বালক-বালিকার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাসহ শৈশবের একেবারে গোড়া থেকে মানসম্মত বিকাশ ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠার নিশ্চয়তা বিধান করা।
৪.৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের সুযোগসহ সাশ্রয়ী ও মানসম্মত কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও উচ্চশিক্ষায় সকল নারী ও পুরুষের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
৪.৪ চাকরি ও শোভন কর্মে সুযোগ লাভ এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক দক্ষতাসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দক্ষতাসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো ।
৪.৫ অসমর্থ (প্রতিবন্ধী) জনগোষ্ঠী, নৃ-জনগোষ্ঠী ও অরক্ষিত পরিস্থিতির মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সকল পর্যায়ে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং শিক্ষায় নারী পুরুষ বৈষম্যের অবসান ঘটানো ।
৪.৬ যুবসমাজ এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে সাক্ষরতা ও গণন- দক্ষতা অর্জনে সফলকাম হয় তা নিশ্চিত করা।
৪.৭ উন্নয়ন ও টেকসই জীবনধারার জন্য শিক্ষা, মানবাধিকার, নারী পুরুষ সমতা, শান্তি ও অহিংসামূলক সংস্কৃতির বিকাশ, বৈশ্বিক নাগরিকত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়নে সংস্কৃতির অবদান সম্পর্কিত উপলব্ধি অর্জনের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থী যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
সাক্ষরতায় বৈষম্য
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ১৮২০ সালে পৃথিবীতে মাধ্যমিক শিক্ষিত লোকের সংখ্যা ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রতি দশ জনে একজন। ১৯০০ সালে এই হার কোনোমতে ২০ শতাংশ পার হয়। তবে সাক্ষরতার হারে দ্রুত পরিবর্তন দেখা দেয় ১৯৫০-এর দশকের পর। ১৯৬০ সালের ৪২ শতাংশ থেকে ১৯৮৩ সালে সেটি ৭০ শতাংশ হয়ে যায় । এই সুখবরের সঙ্গেও
রয়েছে একটি বিপরীত পিঠ। শিক্ষার হারে বিশ্বজুড়ে রয়েছে তীব্র বৈষম্য। বেশিরভাগ উন্নত দেশে যেখানে ৯৯ শতাংশ থেকে শতভাগ লোক শিক্ষিত, সেখানে দরিদ্র মধ্যম আয়ের অনেক দেশই পিছিয়ে।
সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়া শিক্ষার হারে এখনও পিছিয়ে। সেখানে মোট হার ৭৪ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থ্যাৎ এ অঞ্চলে প্রতি চার জনের একজন এখনও নিরক্ষর রয়ে যাচ্ছেন। আরব বিশ্বে এই হার ৭৩ শতাংশ এবং উত্তর আফ্রিকায় ৮০ শতাংশ। কিন্তু পূর্ব এশিয়া, এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে শিক্ষার হার ৯৪ থেকে ৯৬ শতাংশ। সাক্ষরতায় সবচেয়ে করুণ চিত্র সাব সাহারান আফ্রিকায়। সেখানে এমনিতেই সাক্ষরতার হার কম। ২০২০ সালে সামগ্রিকভাবে এই হার ছিল ৬৬ শতাংশ।
সাম্প্রতিকের নানা সংঘাত ও গৃহযুদ্ধ সেই হারকে আরও নিম্নগামী করছে। যেমন সংঘাতক্ষুব্ধ মালিতে ২০১৮ সালে শিক্ষার হার ছিল ৩৫ শতাংশ। ২০২০ সালে সেটি হয়েছে ৩১ শতাংশ। পৃথিবীর সবচেয়ে কম সাক্ষর মানুষের দেশের তালিকায় মালির কাছাকাছি রয়েছে দক্ষিণ সুদান (৩৫ শতাংশ) ও আফগানিস্তান (৩৭ শতাংশ)। কম সাক্ষরতার দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় নারীদের। বিশ্বের ৭৬ কোটি ৩০ লাখ নিরক্ষরের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী।
২০২০ সালে পৃথিবীর কিশোর ও পুরুষদের (১৫ বছর বা তার বেশি বয়সি) ৯০ ভাগ শিক্ষিত ছিলেন। এ সময় নারীদের মধ্যে শিক্ষার হার ছিল ৮৭ শতাংশ। কিন্তু সাব-সাহারান অঞ্চলে এই হারে বৈষম্য বিপুল। সেখানে পুরুষদের শিক্ষার হার ৭২ শতাংশ হলেও নারীদের হার মাত্র ৫৯ শতাংশ । বিশ্বে শিক্ষার হারে উল্লম্ফনের মধ্যেই ২০২০ সালে কোভিড মহামারির প্রকোপ দেখা দেয়। ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময় বিশ্বের ১৯৮টি দেশে বন্ধ ছিল অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্কুলে যেতে পারেনি কোটি কোটি শিক্ষার্থী। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার প্রায় ৮০ কোটি শিশুর পড়াশোনা সরাসরি বিঘ্নিত হয় ।
বাংলাদেশের সাফল্য
স্বাধীনতার পরপরই সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে বঙ্গবন্ধু নানাভাবে উদ্যোগ নেন। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ী-কৃষ্টপুর গ্রামকে প্রথম ‘নিরক্ষরতামুক্ত গ্রাম’ ঘোষণা করেন। এ বছরই প্রাথমিক শিক্ষার জাতীয়করণ ও অবৈতনিক ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত ড. কুদরত-ই খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে দেশে সাক্ষরতা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ১৯৭৫ সালে ১৮টি জেলায় গণশিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়।
সময়ের সঙ্গে দেশের শিক্ষার হার বেড়েছে। সাক্ষরতা অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা পুরস্কার দেয়। নারী ও কন্যাশিশুদের সাক্ষরতা নিশ্চিতকরণ ও এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৪ সালে ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘টি অব পিস’ পদকে ভূষিত করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শতভাগ শিক্ষিত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে।
- দেশে ১৯৮১ সালে সাক্ষরতার হার যেখানে ছিল ২৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ২০১৬ সালে সেটি ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুসারে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ ।
- গত জুলাই মাসে প্রকাশিত দেশের প্রথম ‘প্রায়োগিক স্বাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ’-এ দেখা গেছে, প্রায়োগিক স্বাক্ষরতা রয়েছে এমন নাগরিকের সংখ্যা ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ।
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের উপযোগী শিশুদের ৯৭ ভাগের বেশি স্কুলে ভর্তি হচ্ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হারও কমে ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
- সারাদেশে এখন প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এসডিজি-৪-এর লক্ষ্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদান, মিড-ডে মিল, বিদ্যালয়সমূহের অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
- ২০১৪ সালে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন প্রণীত ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
বৈশ্বিক উদ্যোগ
বিশ্বে সবার জন্য সাক্ষরতা তথা ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির ৪ নং অভীষ্ট পূরণে সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি। বিশেষত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বৈশ্বিক উদ্যোগ হিসেবে ২০১৬ সালে গড়ে তোলা হয় ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর লিটারেসি’। এর মাধ্যমে সাক্ষরতার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিতকরণ চলছে। ইউনেস্কোর ‘ইন্সটিটিউট ফর লাইফলং লার্নিং’ এই উদ্যোগের সচিবালয় হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে এই নেটওয়ার্কে যুক্ত রয়েছে ৩০টি দেশ। এই দেশগুলো তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষার হার বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইউনেস্কোর ২০২০-২০২৫ সময়কালের জন্য নিজস্ব কৌশল রয়েছে। সেটির সঙ্গে এই পশ্চাদপদ ৩০টি দেশের নেটওয়ার্কের নীতিগত সাযুজ্য রয়েছে। এজন্য ফোকাস নির্ধারণ করে কাজ করছে ইউনেস্কো।
পাঠ যাচাই
- কত সাল থেকে জাতিসংঘ ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস’ পালন করছে?
- ২০২০ সালে বিশ্বে সাক্ষরতার হার কত দাঁড়িয়েছে?
- টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের মধ্যে কোনটি শিক্ষা ও সাক্ষরতা সংক্রান্ত?
- ২০২০ সালে সাব সাহারান আফ্রিকায় সামগ্রিকভাবে সাক্ষরতার হার কত ছিল?
- বিশ্বের ৭৬ কোটি ৩০ লাখ অক্ষরজ্ঞানহীনের মধ্যে নারীদের ভাগ কত?
- ইউনেস্কো কত সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ট্রি অব পিস’ পদকে ভূষিত করে?
- দেশে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতা রয়েছে এমন নাগরিকের সংখ্যা কত?
- দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের উপযোগী শিশুদের কত শতাংশ স্কুলে ভর্তি হচ্ছে?
- দেশে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন কবে প্রণীত হয়েছে?
- “গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর লিটারেসি’ কোন সংস্থার উদ্যোগ?