আইসিটি নির্ভর জ্ঞান ও প্রযুক্তি মানুষকে নানা বিষয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিচ্ছে। হাসান ICT বিষয়ে পড়াশুনা করে জানতে পারল কোনো প্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়া এক শৈল্য চিকিৎসা পদ্ধতি। পরবর্তিতে হাসান আইসিটি নির্ভর জীববৈচিত্র্য সৃষ্টির প্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করে খুবই আনন্দিত হলো ।
ক. ন্যানোটেকনোলজি কী?
খ. ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর ।
গ. হাসান এর চিকিৎসা পদ্ধতি শনাক্ত করে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে যে প্রযুক্তি হাসানের জ্ঞান লাভে আনন্দ দিল সেই প্রযুক্তি কৃষি সম্পদ উন্নয়নে কি ধরনের ভূমিকা রাখে মতামত দাও।
ক. ন্যানোটেকনোলজিকে সংক্ষেপে ন্যানোটেক বলে যা পদার্থকে আণবিক পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করার একটি বিদ্যা।
খ. ব্যক্তি সনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি হচ্ছে বায়োমেট্রিক্স।
বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তাকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা হয়। বায়োমেট্রিক্স এর সাহায্যে মানবদেহের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য সনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করা যায়। অর্থাৎ মানুষের কিছু অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ বা স্বভাব, গুণাগুণ ব্যবহার করে মানুষকে চিহ্নিত করা যায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে।
গ. উদ্দীপকে হাসান এর চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে ক্রায়োসার্জারী।
ক্রায়োসার্জারী হলো এমন এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রোগাক্রান্ত টিস্যুগুলোকে ধ্বংস করা হয়। ক্রায়োসার্জারীতে অস্বাভাবিক টিস্যু ধ্বংস করতে নাইট্রোজেন গ্যাস বা আর্গন গ্যাস হতে উৎপাদিত চরম ঠান্ডা বাহ্যিক ত্বকের চামড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন : বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
সাধারণত টিউমারের ক্ষেত্রে-২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা ব্যবহার করা হয় এবং ক্যান্সার এর ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা প্রয়োগ করা হয়। ক্রায়োসার্জারীর ক্ষেত্রে সাধারণত পৃথক পৃথকভাবে তরল নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, আর্গন এবং সমন্বিতভাবে ডাই-মিথাইল ইথার ও প্রোপেন এর মিশ্রণ ব্যবহার করা হয় । তাই, অস্ত্রোপচার ছাড়া ক্রায়োসার্জারী প্রয়োগ করে অভ্যন্তরীণ কিছু রোগ যেমন-যকৃত ক্যান্সার, বৃদ্ধ ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, গ্রীবাদেশীয় গোলযোগ, পাইলস, ইত্যাদির চিকিৎসা করা যায়।
ঘ. উদ্দীপকে যে প্রযুক্তি হাসানের জ্ঞান লাভে আনন্দ দিল তাহলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে ডিএনএ-এর প্রোটিনের পুনরায় সমন্বয় করে নতুন বৈশিষ্ট্যের জীব তৈরির প্রক্রিয়া। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে উদ্ভিদের উপর গবেষণা করে নতুন উন্নত প্রজাতির উদ্ভিদ, সার, খাদ্য করা হয়। এর ফলে কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। নতুন উদ্ভিদ, খাদ্য সৃষ্টির ফলে পৃথিবীতে খাদ্য ঘাটতি সংকুচিত করা সম্ভব হয়েছে এবং অল্প খাদ্যে অধিক পুষ্টি গুণাগুণ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে ।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মূলত কৃষিকে ঘিরেই বেশি পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃষিতে Genetically modified crops উৎপাদনের চারটি লক্ষমাত্রা রয়েছে। তারমধ্যে পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা, শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা, শস্যের গুণগতমান বৃদ্ধি করা, শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো ।
অর্থাৎ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর কারণে ক্লোন অর্থাৎ নতুন উন্নত উদ্ভিদ ও খ্যাদ্য সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে যা প্রতিকূল পরিবেশে সতেজ থাকতে পারে।