হ্যারি এবং রোনান্ড দুই বন্ধু বিমান বাহিনীতে যোগ দিয়েছে একদিন ক্লাস চলার সময় রোনাল্ড অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো। ডাক্তার তাকে এক সপ্তাহ বিশ্রামের পরামর্শ দিলেন। রোনাল্ড এই সপ্তাহ ক্লাসে যেতে না পারলেও ঘরে বসে ইন্টারনেটে উক্ত ক্লাসগুলি সরাসরি দেখতে পারতো। এদিকে হ্যারি ল্যাবে বসেই বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফেলল ।
ক. প্লেজারিজম কী?
খ. “রোবট মানুষের মত চিন্তা করতে পারে”- ব্যাখ্যা করো।
গ. ল্যাবে ব্যবহৃত প্রযুক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো কি কি?
ঘ. রোনান্ডের বিশেষ শিক্ষালাভের আলোকে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব বিশ্লেষণ করো।
ক. প্লেজারিজম হলো অন্যের লেখা বা গবেষণালব্ধ তথ্য নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া।
খ. রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা-স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব। রোবট তৈরি করা হয় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট এর মাধ্যমে।
মানুষের চিন্তা ভাবনার অথবা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটাকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর লক্ষ্য হচ্ছে কম্পিউটার বা মেশিনকে মানুষের মত জ্ঞান দান করা। মানুষের মত চিন্তা করার ক্ষমতা দান করা। সুতরাং রোবট মানুষের মত চিন্তা করতে পারে।
গ. ল্যাবে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব নিচে দেওয়া হলো। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাব :
- চিকিৎসাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- রিয়েলিটির মাধ্যমে ড্রাইভিং নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ।
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ফ্লাইট সিমুলেশন করা হয় ।
- মহাশূন্য অভিযানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয় ।
- খেলাধুলায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- সামরিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- ভিডিও গেমস তৈরিতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- বিভিন্ন ইমেজ সংরক্ষণ ও দৃশ্যধারণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
- নগর পরিকল্পনায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয় ।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব নিচে দেওয়া হলো :
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ফলে বর্তমান সমাজের মনুষ্যত্বহীনতা বা ডিহিউম্যানাইজেশন ইস্যুটি বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ফলে মানুষ ইচ্ছেমতো কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করতে পারবে। ফলে দেখা যাবে মানুষ বেশিরভাগ সময় কাটাবে কল্পনার জগতে এবং খুব কম সময় থাকবে বাস্তব জগতে। কিন্তু এভাবে যদি মানুষ কল্পনা ও বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য করতে না পারে তাহলে পৃথিবীতে চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করবে।
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের ফলে মানুষের চোখের ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রোনাল্ডের বিশেষ শিক্ষা লাভের প্রযুক্তিটি হলে ই-লার্নিং। ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলা হয় ইলেকট্রনিক লার্নিং বা সংক্ষেপে ই-লার্নিং। রেডিও থেকে মোবাইল অ্যাপস পর্যন্ত সবই ই-লার্নিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। ই-লার্নিং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনেক জনপ্রিয় ।
ই-লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী তার প্রয়োজন মত একই ডিজিটাল কনটেন্ট বা ভিডিও ক্লিপ, ইচ্ছেমতো বারবার ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সিং আবিষ্কারের পরে এখন শিক্ষক- শিক্ষার্থীকে আলাদা আলাদা জায়গায় থেকেও সরাসরি কথা বলতে পারছে। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে স্মার্টফোনভিত্তিক অ্যাপস ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত আগামী এক দশক শিক্ষাক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য করবে মোবাইল অ্যাপস।
একসময় ফ্লপি ডিক্স বা সিডি দিয়েও শিক্ষা উপকরণের আদান-প্রদান হয়েছে। সেটাকেও ই-লার্নিং বলা চলে। আজকাল ইন্টারনেটের বদৌলতে ই-লার্নিং ব্যাপারটা সবার কাছেই সুপরিচিত এবং এই ইন্টারনেট ই-লার্নিং এর সবচাইতে বড় অনুষঙ্গ। ই-লার্নিং এর সবচাইতে মজার ব্যাপারটি হলো এই যে ক্লাস করার জন্য আমাকে ক্লাসরুমে থাকতে হবে না। ইচ্ছে হলেই বাসার বিছানায় শুয়ে দেখে নিচ্ছি গেম থিওরির বর্ণনা, তাও আবার পৃথিবী-খ্যাত কোন প্রফেসরের কাছ থেকে।