বর্তমানে অটোমোবাইল কোম্পানিতে অনেক লোক কাজ করে। কোম্পানি পলিসি অনুসারে, অফিসের মেইন বিল্ডিং-এ প্রবেশের জন্য তাদের ফিংগার প্রিন্ট ব্যবহার করা হয়। আবার মূল ওয়ার্ক স্টেশনে ঢুকতে অধিক নিরাপত্তার জন্য তাদের চোখের রেটিনা স্ক্যান করতে হয়। অফিসে তারা অন্য আরেকটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেখানে চোখে বিশেষ চশমা পড়তে হয় এবং সেফটি হেলমেট পড়তে হয় । এই পদ্ধতিতে তারা সহজে ভার্চুয়ালি গাড়ি চালিয়ে আনন্দ লাভ করে ।
ক. গ্লোবাল ভিলেজ কী?
খ. কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে লেখো।
গ. কোম্পানির লোকেরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়ালি গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা লাভ করে তা বর্ণনা করো।
ঘ. অফিসে প্রবেশের যে পদ্ধতিগুলোর কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে কোনটি বর্তমানে অধিক ব্যবহৃত হয়? বিশ্লেষণ করো।
ক. গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক বা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সহজেই তাদের চিন্তা-চেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে ও একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।
খ. মানুষের চিন্তা-ভাবনার অথবা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটাকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর লক্ষ্য হচ্ছে কম্পিউটার বা মেশিনকে মানুষের মত জ্ঞান দান করা। মানুষের মত চিন্তা করার ক্ষমতা দান করা। আর এর জন্য প্রয়োজন বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম। বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম তৈরি করার জন্য প্রধান যে বিষয়টা দরকার তা হচ্ছে Knowledge Representation & Reasoning.
গ. গাড়ী চালানোর জন্য যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে তাহলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত কম্পিউটার প্রযুক্তি ও সিমুলেশন তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ত্রি-মাত্রিক ইমেজ তৈরির মাধ্যমে অতি অসম্ভব কাজও করা সম্ভব।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ যেখানে ব্যবহারকারী ঐ পরিবেশে মগ্ন হয়, বাস্তবের অনুকরণে সৃষ্ট দৃশ্য উপভোগ করে, সেই সাথে বাস্তবের ন্যায় শ্রবণানুভূতি এবং দৈহিক ও মানসিক ভাবাবেগ, উত্তেজনা অনুভূতি প্রভৃতির অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে মাল্টিসেন্সর হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টার সেন্সরসমূহের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত থাকে যা মানব ব্যবহারকারীদেরকে কম্পিউটার- সিমুলেটেড অবজেক্ট, স্পেস, কার্যক্রম এবং বিশ্বকে একবারে বাস্তবের মতো অভিজ্ঞতা প্রদানে সক্ষম করে তোলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা সৃষ্টি করে ত্রি-মাত্রিক বিশ্ব এবং জীবন্ত দৃশ্য। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বাস্তব দৃষ্টিগ্রাহ্য জগৎ তৈরি করা হয় যা উচ্চমাত্রায় তথ্য বিনিময় মাধ্যমের কাজ করে ।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে প্রধান অফিসে প্রবেশের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহৃত হয়েছে এবং প্রধান কর্মস্থলে প্রবেশের জন্য চোখের রেটিনা ব্যবহৃত হয়েছে । এই দুটোই হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো; আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়।
ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যান করার জন্য কোন আলোর প্রয়োজন হয় না। ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ডিভাইসের দাম কম তাই এই পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ তুলনামূলক কম কিন্তু সফলতার হার প্রায় শতভাগ । তাছাড়া সনাক্তকরণের জন্য খুবই কম সময় লাগে। অন্যদিকে রেটিনার ক্ষেত্রে চোখ ও মাথাকে স্থির করে একটি ক্যামেরা সম্পন্ন ডিভাইসের সামনে ঠিকমতো দাড়াতে হয় যা অনেক সময়ই ঠিকমত হয় না।
তাছাড়া এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ডিভাইসের দাম ও মেমরি অত্যাধিক। এই পদ্ধতিতে আলোক স্বল্পতা পুরো কার্যক্রমকে ব্যহত করতে পারে। চোখে চশমা থাকলে এই কার্যক্রম ব্যহত হয়। চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই দুই প্রযুক্তির মধ্যে ফিঙ্গার প্রিন্ট বেশি ব্যবহৃত হয় ।