রফিক সাহেব তার প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইন ভিত্তিক সম্পন্ন করেন। কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন ডেটা আদান- প্রদান, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ঠিকানা বিভিন্ন প্রোডাক্টের প্যাটার্ন, ব্যবসায়িক কৌশল কম্পিউটারে সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে এবং কোনো ডেটা বা কৌশল আইনগত প্রাপ্য প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করার জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন।
ক. ডেটা এনক্রিপশন বলতে কী বোঝ?
খ. এনকোডার এর ব্যবহার লিখো।
গ. উদ্দীপকে ব্যবহৃত বিশেষ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করো।
ঘ. বিশেষ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।
ক. ডেটা এনক্রিপশন অর্থ হচ্ছে ডেটাকে গোপন করার মাধ্যমে ডেটাকে নিরাপদ করা। ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ডেটাকে এনক্রিপ্ট (Encrypt) করা হয়। এর ফলে ঐ ডেটা অন্য কোনো অনির্দিষ্ট (Unauthorized) ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যবহৃত হতে পারে না।
খ. যে ডিজিটাল বর্তনীর মাধ্যমে মানুষের বোধগম্য ভাষাকে কম্পিউটারে ব্যবহৃত ভাষায় রূপান্তর করা হয় অর্থ্যাৎ আনকোডেড (Uncoded ) ডেটাকে কোডেড (Coded) ডেটায় পরিনত করা হয় তাকে এনকোডার বলে। এনকোডার এমন একটি সমবায় সার্কিট যার দ্বারা সর্বাধিক 2″ টি ইনপুট থেকে n টি আউটপুট পাওয়া যায়। এনকোডারের সাহায্যে যেকোনো আলফানিউমেরিক বর্ণকে ASCII, EBCDIC ইত্যাদি কোডে পরিণত করা যায়। এজন্য ইনপুট ব্যবস্থায় কী-বোর্ডের সঙ্গে এনকোডার যুক্ত থাকে।
গ. রফিক সাহেব একজন দক্ষ ব্যবসায়ী। তিনি যেমনি ব্যবসায়িক সকল কর্মকাণ্ড অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালনা করেন তেমনিভাবে তিনি বিভিন্ন প্রোডাক্টের প্যাটার্ন, ব্যবসায়িক কৌশল নির্ধারনে নৈতিকতা ও আইনানুগ পন্থার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। নৈতিকতা হলো মানুষের কাজ কর্ম, আচার ব্যবহারের সেই মূলনীতি যার ওপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভালো বা মন্দ দিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে।
সকল ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি নতুন মাত্রা থাকে যা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। নৈতিকতা মানুষকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারে। কী করা উচিত, কী করা অনুচিত তা নৈতিকতার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় । তথ্যের অমনুমোদিত ব্যবহার মারাত্মকভাবে ব্যক্তির প্রাইভেসিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। একইসাথে প্রোডাক্টের প্যাটার্ন স্বত্ত ব্যবসায়িকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এক্ষেত্রে প্যাটার্নের মেধাস্বত্ত আইনী ব্যবস্থার মাধ্যম কপিরাইট করিয়ে রাখলে পরবর্তীতে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় না। একইসাথে ব্যবসায়িক তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শক্তিশালী সার্ভার কম্পিউটার ব্যবহার করা যাতে রেজিস্টার্ড অপারেটিং সিস্টেম ও ডেটাবেজ সফটওয়্যার ব্যবহার করা জরুরী। ফলে হ্যাকিং এর মতো ভয়াবহ ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দিপকে উল্লিখিত বিশেষ ব্যবস্থা মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিষয়গুলো বুঝানো হয়েছে। নৈতিকতার বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করলে বিভিন্নভাবে তা সুফল বয়ে আনবে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সামান্য নমুনা তুলে ধরা হলো :
- রেজিস্টার্ড সফটওয়্যারের ব্যবহার। এর ফলে অনাকাঙ্খিত ভাইরাস আক্রমণ ও হ্যাকিং থেকে নিরাপদ থাকা যায়। এ ছাড়া সফটওয়্যার পাইরেসি, সাইবার আক্রমণ ইত্যাদি প্রতিরোধ করা যায়।
- কপিরাইট আইন । মেধাসত্ব সৃষ্টির সুফল পেতে এটি আবশ্যিক ।
- প্লেজারিজম। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির অবাধ স্বাধীনতার কারণে প্লেজারিজম একটি বড় ধরনের অনৈতিক কাজে পরিনত হয়েছে। প্লেজারিজম হচ্ছে অন্যের গবেষণা লব্ধ তথ্য নিজের নামে চালিয়ে দেয়া।
যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যক্তির নৈতিকতার বিষয়ে নিম্নলিখিত নিয়মসমূহ মেনে চলা উচিত:
- অনুমতি ব্যতিত অন্যের ফাইল, গোপন তথ্য সংগ্রহ না করা।
- বিনা অনুমতিতেত তথ্য সংক্রান্ত রিসোর্স ব্যবহার না করা।
- অন্যের বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত ফলাফল আত্মসাৎ না করা।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে সকল ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতার প্রয়োজনা প্রতীয়মান হয় ।