ক্যান্সারের রোগী জামান ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার তাকে কিছু ওষুধ দিলেন যা তেমন কার্যকর নয় এরপর ডাক্তার অন্য পদ্ধতিতে নিম্ন তাপমাত্রা ব্যবহার করে তার চিকিৎসা করলেন। এর জন্য ডাক্তার তার কাছে বেশি টাকা বিল করলেন। পরে ডাক্তার কম্পিউটারে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে তার কাছ থেকে কম টাকা নিলেন ।
ক. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?
খ. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মানুষের জন্য উপকারী ব্যাখ্যা করো।
গ. জামানের পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতিটি বর্ণনা করো।
ঘ. পুরোনো রোগী চিহ্নিতকরণে ডাক্তারের ব্যবহৃত পদ্ধতি আলোচনা করো।
ক. প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞাননির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে ।
খ. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকে ব্যবহার করে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর একটি নির্দিষ্ট জীন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে নতুন ধরনের জীন বা জাতের উদ্ভব ঘটানো হচ্ছে। ফলে উন্নত প্রজাতির প্রাণী যেমন- হাঁস, মুরগী, গরু এবং ঔষধ শিল্পে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। তাই বলা যায়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মানুষের উপকারী।
গ. জামানের চিকিৎসা পদ্ধতিটি হলো ক্রায়োসার্জারি। ক্রায়োসার্জারি হচ্ছে এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অতি ঠাণ্ডায় অস্বাভাবিক ও অসুস্থ টিস্যু ধ্বংস করা হয়। এক্ষেত্রে তরল নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, আর্গন ও ডাই মিথাইল ইথার-প্রোপেন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। ক্রায়োথেরাপিতে ক্যানসার আক্রান্ত টিস্যুর তাপমাত্রা ১২ সেকেন্ডের ভিতরে কমিয়ে ১২০–১৬৫° সে. তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়।
এই সময় একটি সূচের প্রান্ত দ্বারা ক্যান্সার টিস্যুর ভিতরে খুব দ্রুত আর্গন গ্যাসের নিঃসরণ করানো হয়। তাপমাত্রার অত্যাধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে ঐ টিস্যুটি একটি বরফপিণ্ডে পরিণত হয়। বরফ পিন্ডের ভেতরে ক্যান্সার টিস্যুটি আটকা পড়ে গেলে এতে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কারণ – ১৬৫° সে. তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন পরিবহন সম্ভব নয়।
এর ফলে জমাটবদ্ধ অবস্থায় ক্যান্সার টিস্যুটির ক্ষয় সম্পন্ন হয়। আবার সূচের প্রান্ত দিয়ে ক্যান্সার টিস্যুটির ভিতরে হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে টিস্যুটির তাপমাত্রা ২০°-৪০° সে. এ উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ ক্যান্সার টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পুরাতন রোগীর শনাক্তকরণের জন্য ডাক্তার যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে তা হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্তকরণ করা যায়।
এ পদ্ধতিতে মানুষের বায়োলজিক্যাল ডেটা কম্পিউটারের ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে রাখা হয় এবং পরবর্তিতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। ডেটাতে মিল পেলে তা বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং অনুমতিপ্রাপ্ত হয়। জামান বা কোন রোগী প্রথমে যখন ডাক্তারের কাছে যায় তখন ডাক্তার রোগীর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে রাখে। ফলে তার সমস্ত তথ্য ডাক্তারের ডেটাবেজে রয়ে যায়।
পরবর্তীতে যখন আবার উক্ত রোগী ডাক্তারের কাছে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দেয় তখন কম্পিউটার সিস্টেম ডেটাবেজের সাথে মিলিয়ে দেখে রোগীর নাম রেজিস্ট্রেশন করা আছে কি-না। যদি ফিঙ্গার প্রিন্ট তথা ডেটার সাথে মিল পায় তাহলে পুরাতন রোগী বোঝা যায়। ফলে পুরাতন রোগীর কাছে থেকে নির্ধারিত হরে কম টাকা নেয়। আর যদি পুরাতন না হয় তাহলে নতুর রোগীর নির্ধারিত ফি নেয়।