কামাল নিজের কম্পিউটার ব্যবহার করে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখেন এবং প্রবাসী ছেলের সাথে কথা বলেন। জামাল তার প্রয়োজনীয় কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা কৃষিবিদদের নিকট থেকে কামাল সাহেবের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। কামালের মেয়ে কলি কম্পিউটারের মাধ্যমে বিদেশি লাইব্রেরি ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করে এবং ঘরে বসে একটি বিদেশি ডিগ্রি অর্জন করে।
ক. বিশ্বগ্রাম কী?
খ. প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা- কর।
গ. কামালের ক্ষেত্রে বিশ্বগ্রাম ধারণা সংশ্লিষ্ট কোন উপাদানগুলো প্রতিফলিত হয়েছে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কলির শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডের প্রভাব বিশ্লেষণ কর ।
ক. গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।
খ. প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা ত্রিমাত্রিক বিশ্ব সৃষ্টি করে এবং যার দৃশ্যমানতা বাহক জীবন্ত। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্যেগকারী যোগান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা বলে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে বাস্তবের ন্যায় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় গাড়ি চালানোর, বিমান চালানোর, সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর যুদ্ধ পরিচালনা ইত্যদি অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। ফলে ব্যবহারকারীরা কোনো প্রকার শারীরিক ঝুঁকি বা বিপদ ছাড়াই এই সকল বাস্তব অভিজ্ঞতা পেয়েছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে যেকোনো দৃশ্য দেখা ও শ্রবণানুভূতি করা যায়। হাতের সাথে সংযুক্ত গ্লোভস দ্বারা প্রয়োজনীয় কোনো কমান্ড বা নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সঙ্গে প্রয়োজনীয় দৃশ্যের অবতারণা এবং কোনো নির্দিষ্ট কাজের নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ব্যবহারকারীকে অনুভবের এক অন্য পৃথিবীতে নিয়ে যায়।
গ. কামালের ক্ষেত্রে বিশ্বগ্রাম ধারণা সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ সংক্রান্ত উপাদানগুলো প্রতিফলিত হয়েছে যা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো- উদ্দীপকে কামাল সাহেব কম্পিউটার ব্যবহার করে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখেন এবং তার প্রবাসী ছেলের সাথে কথা বলেন। এখানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সিং। ভিডিও কনফারেন্সিং হলো এক সারি ইন্টারঅ্যাকটিভ টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি, যা দুই বা ততোধিক অবস্থান হতে নিরবিচ্ছিন্ন দ্বিমুখী অডিও এবং ভিডিও সম্প্রচার এর মাধ্যমে একত্রে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ দেয়।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর সুবিধা হচ্ছে:
১. একই জায়গায় না এসে বিভিন্ন স্থানের একদল মানুষ সভায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
২. বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দল এক জায়গায় না এসে এ সভায় অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে ।
৩. বিভিন্ন জায়গা থেকে সভায় অংশ গ্রহণ করা যায় বলে যাতায়াতের প্রয়োজন হয় না ফলে গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় হয় না।
৪. ভিডিও কনফারেন্সিং টি রেকর্ড করে রাখা যায়। ফলে, যে কোনো সময় তা আবার দেখা যায়।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কলির শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ড অর্থাৎ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।
বিশ্বগ্রামের অন্তর্গত ই-লার্নিং এর মাধ্যমে অফিসের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন সম্ভব হয়েছে। গ্লোবাল ভিলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে এনে দিয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তাছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর দূর দূরান্তে বসে শিক্ষার্থীরা ই-লাইব্রেরী, ভার্চুয়াল ক্যাম্পাস ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বাস্তবের ন্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া বর্তমানে দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কোর্স অনলাইনে উন্মুক্ত করেছে।
নানা দেশের শিক্ষার্থীরা উক্ত কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারছে। ফলে অনলাইনের মাধ্যমে দেশের অনেক মানুষ ডিগ্রী অর্জন করছে। অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে আসিফ অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন করতে পারছে। সুতরাং দেশে বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। ভবিষ্যৎ এ আরো অনেক প্রযুক্তি শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে বলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করছেন ।