মাহে রমযান ও শবে কদর

Preparation BD
By -
0


বিশ্ব মানবতার মুক্তিবার্তা নিয়ে মুসলমানদের জীবনযাত্রায় বছর ঘুরে মাহে রমযান আবারো উপস্থিত। এ মাসেই রয়েছে হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রজনি লাইলাতুল কদর। যে রজনিতে অবতীর্ণ হয় মানবজাতির মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন। মাহে রমযান ও লাইলাতুল কদরের আগমন উপলক্ষে আমাদের এ বিশেষ আয়োজন।

মাহে রমযান

‘মাহে রমযান’ অর্থ রমযানের মাস। ‘রমযান’ শব্দটি আরবি ‘রময’ থেকে এসেছে। ‘রময’ অর্থ দহন বা পোড়ানো। এ মাসে রোযা পালন করলে মানুষের মধ্য থেকে লোভ-লালসা, পাপ-পঙ্কিলতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভূত হয়। রোযা পালনকারী রমযানে তার সব পাপ মুছে ফেলার সুযোগ লাভ করেন। রমযান মাসে পালিত রোযাকেই রমযানের রোযা বলা হয়।

রোযা

‘রোযা’ ফারসি শব্দ। এর আরবি প্রতিশব্দ ‘সাওম’ বা ‘সিয়াম’। এর আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থ ‘বিরত থাকা”। ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় সাওম হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা পালনের উদ্দেশ্যে সকল প্রকার পানাহার এবং ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ বলেন ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোযা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। আশা করা যায় এ থেকে তোমাদের মধ্যে তাক্বওয়ার গুণাবলি সৃষ্টি হবে।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৩] মাহে রমযানের পুরো এক মাসের রোযা তিনটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম ১০ দিন রহমত, দ্বিতীয়-১০ দিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় ১০ দিনকে নাজাতের সময় বলা হয়।

রমযান মাসের ফজিলত

  • রমযান মাসেই কুরআন অবতীর্ণ হয় ও রোযা ফরজ হয়। এটি লাইলাতুল কদরের মাস, এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের সত্তরটি ফরজের সমতুল্য, আর একটি নফল অন্য মাসের একটি ফরজের সমতুল্য।
  • রমযান মাসের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমযান’ বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোযা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।
  • যে ব্যক্তি রমযান পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারলো না, সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক। (বুখারী, তিরমিযি)

রমযান মাসে যা বর্জনীয়

  • অপ্রয়োজনীয়, অশ্লীল ও মিথ্যা কথা-বার্তা না বলা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কত রোযা পালনকারী এমন আছে, (রোযা অবস্থায় অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে) ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া রোযা থেকে সে আর কিছু লাভ করতে পারে না’। (ইবনে মাজাহ)
  • সকল প্রকার গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা

শবে কদর

‘শবে কদর’ ফারসি শব্দ। আরবিতে একে ‘লাইলাতুল কদর’ বলে। অর্থ সম্মানিত, মর্যাদাপূর্ণ ও মহিমান্বিত, সম্ভাবনাময়, ভাগ্যনির্ধারণী রজনি। শবে কদর পবিত্র কুরআন নাযিলের রাত। এ রাতেই প্রথম মক্কার হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেন। এ কারণে আল্লাহ তায়ালা এ রাতের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন।

সময়কাল

রাসুলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমযানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করো।’ (মুসলিম)। এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়। অর্থাৎ ২০, ২২, ২৪, ২৬ ও ২৮ রমযান দিবাগত রাতসমূহ।

উৎপত্তি

পূর্ববর্তী নবী এবং তাদের উম্মতগণ দীর্ঘায়ু লাভ করার কারণে বহু বছর আল্লাহর ইবাদত করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু মহানবী (সা.) এবং তার উম্মতের আয়ু অনেক কম হওয়ায় তাদের পক্ষে আল্লাহর ইবাদত করে পূর্ববর্তীদের সমকক্ষ হওয়া কিছুতেই সম্ভবপর নয়। সাহাবায় কেরামগণের এ আক্ষেপের প্রেক্ষিতে আল্লাহ সূরা কদর অবতীর্ণ করার মাধ্যমে শবে কদরের মতো মহা নেয়ামত দান করেন।

শবে কদরের ফজিলত

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি (অর্থাৎ কুরআন) লাইলাতুল কদরে নাযিল করেছি। তুমি কি জানো ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল কদর’ এক হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ। এ রাতে ফেরেশতা ও রূহরা নেমে আসে প্রতিপালকের অপার অনুগ্রহ নিয়ে। উষালগ্ন পর্যন্ত বর্ষণ করে সমস্ত অকল্যাণ থেকে নিরাপত্তা ও শান্তি।’ (সূরা : কদর)

আরো পড়ুন : ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর

এ রাতে মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদিকে হাজার মাসের ইবাদত-বন্দেগি ও আমলের সমান সওয়াব দান করেন। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ রাত ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করবে, আল্লাহ তার পূর্বেকৃত সব গুনাহ্ মাফ করে দেবেন’। (বুখারী)

পরিশেষে পবিত্র রমযান মাসে, সঠিকভাবে রোযা পালন, উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন, কুরআন অর্থসহ বুঝে পড়া ও সদকায়ে জারিয়া বেশি বেশি করতে পারলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাকওয়া ও সংযমের মহামূল্য সম্পদ দান করবেন, যার মাধ্যমে ইহকালীন ও পরকালীন প্রভৃত কল্যাণের দ্বার উন্মুক্ত হবে।


আরো পড়ুন :


অনুচ্ছেদ রচনা

বিস্তারিত

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী

বিস্তারিত

ইংরেজি ভাষা  সাহিত্য

বিস্তারিত

ইসলাম ধর্ম

বিস্তারিত

ইসলামের ইতিহাস  সংস্কৃতি

বিস্তারিত

এইচএসসি

বিস্তারিত

এসএসসি

বিস্তারিত

ওয়েব ডিজাইন

বিস্তারিত

কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি

বিস্তারিত

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

বিস্তারিত

গ্রন্থ-সমালোচনা

বিস্তারিত

চাকরি-বাকরি

বিস্তারিত

জীবনযাপন

বিস্তারিত

জীববিজ্ঞান

বিস্তারিত

জেলা পরিচিতি

বিস্তারিত

টিপস

বিস্তারিত

দেশ পরিচিতি

বিস্তারিত

তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি

বিস্তারিত

নৈতিকতা মূল্যবোধ ও সুশাসন

বিস্তারিত

পদার্থ বিজ্ঞান

বিস্তারিত

পিডিএফ ডাউনলোড

বিস্তারিত

পৌরনীতি ও নাগরিকতা

বিস্তারিত

প্রতিষ্ঠান পরিচিতি

বিস্তারিত

প্রবন্ধ আলোচনা

বিস্তারিত

প্রশ্ন সমাধান

বিস্তারিত

ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং

বিস্তারিত

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য

বিস্তারিত

বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি

বিস্তারিত

বাংলা রচনা সম্ভার

বিস্তারিত

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

বিস্তারিত

বাংলাদেশ বিষয়াবলী

বিস্তারিত

বিসিএস প্রস্তুতি

বিস্তারিত

ভাইভা প্রস্তুতি

বিস্তারিত

ভাবসম্প্রসারণ

বিস্তারিত

ভূগোল পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা

বিস্তারিত

লেখক পরিচিতি

বিস্তারিত

সাধারণ জ্ঞান

বিস্তারিত

সাধারন বিজ্ঞান

বিস্তারিত

সামাজিক বিজ্ঞান

বিস্তারিত

স্বাস্থ্য টিপস

বিস্তারিত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !