মুজিবনগর সরকার বলতে কী বােঝেন?

মুজিবনগর সরকার বলতে কী বােঝেন?

১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রহসন, ২৫ মার্চ রাতে বাঙালিদের ওপর নিম হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেয়া হয়। এ সগ্রামে ছাত্র-যুব-জনতা, সেনা, পুলিশ ও আনসার বাহিনী একযােগে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং গঠিত হয়। মুক্তিবাহিনী। এ মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালনা করার জন্যই মুজিবনগরে গঠিত হয় একটি বিপ্লবী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায়’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়। এ সময় এ স্থানের নতুন নামকরণ হয় মুজিবনগর। তাই এ বিপ্লবী সরকারকে ‘মুজিবনগর সরকারবলে আখ্যায়িত করা হয়।

এ সরকারে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ। মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত করা হয় এবং তার অনুপস্থিতিতে সরকারপ্রধানের দায়িত্বভার অপিত হয় সৈয়দ নজরুল ইসলামের ওপর। তার নেতৃত্বে বিপ্লবী সরকারের অন্য দপ্তরগুলাে নিম্নরূপ :

  • প্রধানমন্ত্রী : তাজউদ্দীন আহমদ,
  • পররাষ্ট্র দফতর : খােন্দকার মােশতাক আহমদ,
  • অর্থ দফতর : ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী,
  • স্বরাষ্ট্র দফতর : এ এইচ এম কামারুজ্জামান।

পরে এম এ জি ওসমানীকে করা হয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী।

এছাড়া এই বিপ্লবী সরকারকে প্রয়ােজনীয় দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়ার জন্যই গঠিত হয় একটি উপদেষ্টা। পরিষদ। এতে ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাপ (মােজাফফর), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও কংগ্রেসের একজন করে যথাক্রমে আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অধ্যাপক মােজাফফর আহমদ, কমরেড মণি সিং, শ্ৰী মনােরঞ্জন ধর এবং আওয়ামী লীগের ৫ জন সদস্য নিয়ে এ পরিষদ গঠিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিপ্লবী সরকারকে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ দিতেন এবং নীতি নির্ধারণে সহায়তা করতেন।

Leave a Reply