অন্যান্য

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোথায় কেন পড়বেন?

কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে পর্যটন একটি ক্রমবর্ধমান শিল্প এবং এ প্রবণতা বর্তমান শতাব্দী জুড়েও অব্যাহত থাকবে। আমাদের দেশে পর্যটন শিল্প একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় খাত। দেশে এবং বিদেশে দ্রুত বর্ধনশীল ভ্রমণ ও পর্যটন শিল্পের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলােতে বিভাগটি চালু করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৭ সালে টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট নামে বিভাগ চালু হয়, আসন সংখ্যা ১১৫টি।

আরো পড়ুন : ক্রিমিনােলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স কোথায় কেন পড়বেন?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নামে ২০১৯ সালে এ বিভাগ কার্যক্রম শুরু করে, আসন সংখ্যা ৩০টি। ২০১৯ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়, আসন সংখ্যা ৭৫টি। এছাড়াও নােয়াখালী, পাবনা, বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেখ মুজিব মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিভাগে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানাে হয়।

ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট

ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট বলতে ব্যাপক একটা কর্মযজ্ঞকে বােঝানাে হয়, যেখানে আনন্দ, অবসর বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে দর্শনীয় স্থানসমূহতে পর্যটকদের ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের ব্যবস্থাপনা করা হয়। টিকেটিং, হােটেল বুকিং, ফুড অ্যান্ড অ্যাকোমােডেশন, লােকাল ট্রান্সপাের্টেশন, সাইট সিয়িং, ট্রাভেল গাইডসহ আরও নানা রকমের সার্ভিস টুরিস্ট বা ট্রাভেল এজেন্সিগুলাে পর্যটকদের দিয়ে থাকে।

হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট

হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি, ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির একটি সহায়ক এবং প্রসারিত শাখা হিসেবে কাজ করে। এটি ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টেরই একটি অংশ। হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে গেস্টদের হােটেল, মােটেল রা রিসাের্টে থাকার ব্যবস্থা করা, হােটেলেই খাবার এবং পানীয়র ব্যবস্থা করা, তাদের হােটেলে অবস্থানকালীন সময়ে লন্ড্রি, বিজনেস মিটিং, প্রয়ােজনে চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজগুলাে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের আওতায় পড়ে। এছাড়াও ট্যুরিজম এবং হােটেল ইন্ডাস্ট্রিতে আরও অনেক কাজের ক্ষেত্র রয়েছে।

যা পড়ানাে হয়

টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডামেন্টালস, বাংলাদেশ স্টাডিজ, টুরিজম কালচার, ট্যুর অপারেশন ম্যানেজমেন্ট, ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজমেন্ট, হাউস কিপিং ম্যানেজমেন্ট, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রােডাকশদা চুড় সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, ইকোনমিক্স, কমার্শিয়াল ল, ফার্স্ট এইড, আরবান অ্যান্ড রুরাল টুরিজম ইত্যাদি।

ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে অনেক নামিদামি তারকা হােটেল এবং রিসাের্ট। বাড়ছে দক্ষ কর্মী ও ব্যবস্থাপকের চাহিদা। শুধু ঢাকায় লা মেরিডিয়ান, ঢাকা ওয়েস্টিন, প্যান প্যাসিফিক সােনারগাঁ, হানসা রেসিডেন্স, ঢাকা রিজেন্সিসহ আরও অনেক তারকামান সম্পন্ন হােটেল গড়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন : নাটক ও নাট্যতত্ত্ব কোথায় কেন পড়বেন ?

ইতােমধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলছে। এগুলাে দেখেই বােঝা যাচ্ছে, দেশে ভবিষ্যতে বিদেশি ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়বে। ভ্রমণকালে তাদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়ােজন টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী জনবল। তাই এই সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলােতে ক্যারিয়ার গড়ার অফুরন্ত সুযোগ থাকছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের। এ সেক্টরে যেমন উচ্চ বেতন পাওয়া যায় অন্যদিকে রয়েছে স্মার্ট জীবনযাপনের সুযােগ।

যাদের পড়া উচিত

যারা সবার সাথে সহজেই মিশতে পারে, আতিথেয়তার কাজে আগ্রহ আছে, রান্না ঘর সাজানাে, অনুষ্ঠান পরিচালনার কাজেও আগ্রহ আছে তারা এ বিষয় পড়তে পারে। সাবলীল ও বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারাও এ বিষয়ে পড়ার জন্য দরকারি। যারা বাণিজ্য বিভাগে পড়াশােনা করেছে, তাদের জন্য এই বিভাগের পড়া তুলনামূলক সহজ হবে।

কর্মক্ষেত্র

ঢাকায় এখন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আন্তর্জাতিক মানের চেইন হােটেল চালু হচ্ছে। পারিবারিক বিনােদনকেন্দ্রগুলাের নতুন অংশ হয়ে উঠছে রিসাের্টগুলাে। তাই এ সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলােতে ক্যারিয়ার গড়ার প্রচুর সুযােগ থাকছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের। বাংলাদেশ বিমান থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সে কেবিন ক্রু, স্টুয়ার্ড হিসেবে কাজ করছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বাংলাদেশের বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক মানের হােটেলে সুপারভাইজার পর্যায়েও কাজ করছে তারা।

চাকরির বাজার

এখন আর শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের বাইরেও কাজের অবারিত সুযােগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হােটেল, মােটেল, হাসপাতাল, ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম সংস্থা, এয়ারলাইন্স, শিপ, কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস সেন্টার প্রভৃতি। পাঁচতারকা চেইন হােটেলের পাশাপাশি ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্সি তাে আছেই। তবে এ বিভাগে পড়া মানে যে শুধু পর্যটনসেবার ক্ষেত্রগুলােই কাউকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে হবে, তা নয়। যেকোনাে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানেও কাজ করার সুযােগ থাকে। এ বিভাগ থেকে পাস করা অনেক শিক্ষার্থীই স্নাতক শেষ করে সরকারি চাকরি করছে। তাই দক্ষতা গড়ে তুলতে পারলে নানা রকম সুযােগই আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button