বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছিল এক যুগান্তকারী রাজনৈতিক বিকল্প, যা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ প্রশাসনের চাহিদা পূরণে গঠিত হয়েছিল। এর সূচনা হয় ১৯৯৬ সালে, যখন পঞ্চম সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানে এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পটভূমি:
১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরও বিরোধী দলগুলো অভিযোগ তোলে যে ক্ষমতাসীন দল নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না। এর ফলে আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এই প্রেক্ষাপটে, নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য নিরপেক্ষ ও দলনিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি ওঠে।
১৯৯৬ সালের মার্চে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজিত হয়।
এই ব্যবস্থায়:
একজন অরাজনৈতিক প্রধান উপদেষ্টা (যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন) থাকেন,
আরও ১০ জন উপদেষ্টা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়,
তাদের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন আয়োজন ও নিয়মিত প্রশাসন পরিচালনা।
কার্যকারিতা ও বিতর্ক:
১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ব্যবস্থাটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনলেও পরবর্তীতে তা বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসে, বিশেষত ২০০৭ সালের সামরিক-সমর্থিত দীর্ঘস্থায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার কালে।
২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়, কিন্তু আজও এটি রাজনৈতিক বিতর্কে প্রাসঙ্গিক।
Please login or Register to submit your answer