• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • ষষ্ঠ শ্রেণি
  • ভাষা ও বাংলা ভাষা
ভাষা ও বাংলা ভাষা

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

ভাষা ও বাংলা ভাষা

ভাষার উপাদান

ভাষার প্রধান উপাদানগুলো হলো- ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও বাগর্থ। নিচে এগুলো আলোচনা করা হলো।

ক) ধ্বনি: বাতাসে আঘাতের ফলে ধ্বনির সৃষ্টি হয়। কিন্তু সব ধ্বনিই ভাষার ধ্বনি নয়। ভাষায় তাকেই ধ্বনি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে যা বাগ্যন্ত্রর সাহায্যে তৈরি হয়। বাগ্যন্ত্রের ক্ষমতা অসীম। এর সাহায্যে আমরা পশু-পাখির নানারকম ডাক ডাকতে বা অনুকরণ করতে পারি। কিন্তু এসব ভাষার ধ্বনি নয়। ভাষার ধ্বনি শুধু বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে উৎপাদিত হলে চলবে না, তাকে অবশ্যই অর্থপূর্ণ হতে হবে। পশু-পাখির ডাক কিংবা এজাতীয় কোনো ডাককে আমরা বলি আওয়াজ। ভাষার একটি ধ্বনির স্থলে আরেকটি ধ্বনি বদলে দিলে নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি হয়। যেমন- 'কাল'। এখানে কক্ ধ্বনিটি বদলিয়ে খ বললেই সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ বহন করে এমন শব্দ তৈরি হয়। যেমন-খাল, গাল, তাল, ঢাল, মাল, শাল ইত্যাদি। এভাবে আমরা গৃত্ ম্ ধ্বনি পাই। ধ্বনির উপলব্ধি ভাষাভাষীদের মনেই রয়েছে এবং সাক্ষর ও নিরক্ষর সব মানুষই তা জানে, বোঝে ও ব্যবহার করে।

খ) শব্দ: এক বা একাধিক ধ্বনি মিলে শব্দের সৃষ্টি হয়। যেমন-মানুষ। এখানে পাঁচটি ধ্বনি আছে: ম্+ আ+ন্‌+উ+(ষ)। লক্ষ করো, এ-উদাহরণে শেষ ধ্বনিটি বোঝাতে তালব্য-শ লিখে প্রথম বন্ধনীতে মূর্ধন্য-ষ লেখা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, মূর্ধন্য-ষ ধ্বনি নয়, বর্ণ।

গ) বাক্য: বাক্য বলতে কথা বা বাচনকে বোঝায়। ভাষার উপাদান হিসেবে ধরলে বাক্যের স্থান তৃতীয়। ধ্বনি দিয়ে যা শুরু হয়েছিল শব্দে এসে তা আরও সংহত হয়। বাক্যে এসে পরিপূর্ণ না হলেও সে অনেকটাই পূর্ণতা পায়। প্রতিটি বাক্যই কেউ উৎপাদন করে আর কেউ শোনে। বাক্যের সঙ্গে তাই দুজনের সম্পর্ক রয়েছে- বক্তা ও শ্রোতা। এই দুই পক্ষের মধ্যে কোনো ঘাটতি থাকলে চলে না। বক্তা যা বলে তাতে শ্রোতার সব কৌতূহল মিটতে হয়। এজন্য বলা হয়: যা উক্তি হিসেবে সম্পূর্ণ এবং যাতে শ্রোতা পরিপূর্ণভাবে তৃপ্ত হয় তা-ই হলো বাক্য। যেমন- আমরা গ্রামে বাস করি। মহৎ গুণই মানুষকে বড় করে।

ঘ) বাগর্থ: অভিধানে শব্দের অর্থ থাকে। কিন্তু সেই শব্দ যখন বিশেষ পরিবেশে ব্যবহার করা হয় তখন তার অর্থ বদলে যায়। একই কথা বলা চলে বাক্য প্রসঙ্গে। আমরা শব্দের সাহায্যে যে-বাক্য তৈরি করি, তার অর্থ বাক্যে গিয়ে পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন- 'পোড়া' একটি শব্দ। এর অর্থ 'দগ্ধ হওয়া' (আগুনে তার খড়ের ঘর পুড়ে গেছে)। শব্দটি দিয়ে যখন বাক্য তৈরি করে বলা হয়: 'আমার মন পুড়ছে'- তখন এ-পোড়া' দগ্ধ হওয়া নয়। ভাষার শব্দ ও বাক্যের এসব অর্থের আলোচনাই হলো বাগর্থ।

পূর্ববর্তী

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ