আকাইদ শব্দটি আকিদা শব্দের বহুবচন। আকাইদ অর্থ বিশ্বাসমালা। ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসকেই আকাইদ বলা হয়। ইসলাম আল্লাহ তায়ালার মনোনীত একমাত্র দীন বা জীবনব্যবস্থা। এর দুটি দিক রয়েছে। যথা- বিশ্বাসগত দিক ও আচরণগত বা প্রায়োগিক দিক। ইসলামের বিশ্বাসগত দিকের নামই হলো আকাইদ । আল্লাহ তায়ালা, নবি-রাসুল, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, পরকাল, জান্নাত- জাহান্নাম ইত্যাদি আকাইদের অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়গুলো কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও প্রমাণিত । মুসলিম হতে হলে সবাইকে এ বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এরপর নামায, রোযা, হজ, যাকাত ইত্যাদি প্রায়োগিক দিক তথা ইবাদত পালন করতে হয়। বস্তুত আকাইদের বিষয়গুলোর উপর বিশ্বাসের মাধ্যমেই মানুষ ইসলামে প্রবেশ করে। এজন্য ইসলাম সম্পর্কে আলোচনার শুরুতেই আকাইদ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এ অধ্যায়ে আমরা সংক্ষেপে আকাইদ বা ইসলামি বিশ্বাসমালার কতিপয় মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জানব।
এ অধ্যায় শেষে আমরা –
ইসলামের পরিচয় ও ইসলাম শিক্ষা পাঠের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারব;
ইমান ও ইসলামের সম্পর্ক এবং ইমানের মৌলিক সাতটি বিষয়ের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব;
ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের প্রতি আস্থা স্থাপনে ও অনুশীলনে উদ্বুদ্ধ হব;
মহান আল্লাহর পরিচয় ও তাওহিদে বিশ্বাসের প্রভাব বর্ণনা করতে পারব;
তাওহিদের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারব;
কুফর, শিরক ও নিফাকের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব এবং এগুলোর পরিণতি জানতে পারব;
বাস্তবজীবনে কুফর, শিরক ও নিফাক পরিহার করে চলতে পারব;
মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে ইমানের গুরুত্ব বর্ণনা করতে পারব;
রিসালাত ও নবুয়তের ধারণা এবং নবি-রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে পারব;
নবি-রাসুলগণের গুণাবলি, তাঁদের আগমনের ধারা, নবি-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস ও তাঁদের অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে পারব;
খতমে নবুয়তের ধারণা, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর উপর বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব বর্ণনা করতে পারব;
নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে রিসালাত ও নবুয়তের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে পারব:
রিসালাতের প্রতি বিশ্বাস এবং এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্ধি করে নিজের জীবনে রিসালাতের শিক্ষা বাস্তবায়নে আগ্রহী হব;
আসমানি কিতাবের পরিচয় ও তৎপ্রতি বিশ্বাসের গুরুত্ব বর্ণনা করতে পারব;
নৈতিক জীবন গঠনে আসমানি কিতাবের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারব;
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে আল-কুরআনের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে পারব:
আসমানি কিতাবসমূহ ও কুরআন মজিদের পরিচয় জানব, বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করে কুরআন পাঠ করতে উদ্বুদ্ধ হব;
আখিরাতের ধারণা ও বিশ্বাসের গুরুত্ব বর্ণনা করতে পারব;
আখিরাতের জীবনের স্তরসমূহ- মৃত্যু, কবর, কিয়ামত, হাশর, বিচার, মিযান, পুলসিরাত, শাফাআত সম্পর্কে বর্ণনা করতে পারব;
জান্নাত ও জাহান্নামের পরিচয়, জান্নাত ও জাহান্নামের নাম, জান্নাত লাভের ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের উপায় বর্ণনা করতে পারব;
নৈতিক জীবন গঠনে আখিরাতে বিশ্বাসের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারব;
আখিরাতে বিশ্বাস ও এর তাৎপর্য অনুধাবন করে পাপমুক্ত, সৎকর্মশীল, নীতিবান, মানবহিতৈষী ব্যক্তি হিসেবে জীবন গঠনে অনুপ্রাণিত হব ।