আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা বা IAEA (International Atomic Energy Agency) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালের ২৯ জুলাই, তবে কার্যকরভাবে এটি কাজ শুরু করে ১৯৫৭ সালের ২৬ অক্টোবর। এই সংস্থা গঠনের পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল— পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন পরমাণু বোমার ভয়াবহতা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিজ্ঞানীরা এবং রাজনীতিবিদেরা বুঝতে পারেন, এই প্রযুক্তি যেমন ধ্বংস ডেকে আনতে পারে, তেমনি মানুষের কল্যাণেও ব্যবহার করা যেতে পারে—যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন, চিকিৎসা, কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে। এই দ্বৈত ব্যবহারের বিষয়টি মাথায় রেখে জাতিসংঘের উদ্যোগে গঠিত হয় IAEA।
IAEA গঠনের অনুপ্রেরণা আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুয়াইট আইজেনহাওয়ারের ১৯৫৩ সালের জাতিসংঘে প্রদত্ত ঐতিহাসিক বক্তৃতা “Atoms for Peace” থেকে। তিনি সেখানে বলেন, পারমাণবিক শক্তিকে ধ্বংসের পরিবর্তে মানব কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। এই ধারণা থেকেই IAEA গঠনের পথ সুগম হয়।
IAEA একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থা, তবে এটি জাতিসংঘের সঙ্গে সংযুক্তভাবে কাজ করে এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদকে প্রতিবেদন প্রদান করে। সংস্থার প্রধান কার্যক্রম তিনটি বিষয়ে কেন্দ্রীভূত:
পারমাণবিক শক্তির নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবহার
অস্ত্র বিস্তার রোধ
সদস্য রাষ্ট্রদের পারমাণবিক প্রযুক্তিতে সহায়তা
বর্তমানে ১৭০টিরও বেশি দেশ IAEA-এর সদস্য। সংস্থাটি বিভিন্ন দেশে পরিদর্শক দল পাঠিয়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি তদারকি করে, যেন কেউ গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
২০০৫ সালে IAEA এবং এর তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ এল বারাদেই নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে অবদানের জন্য।
Please login or Register to submit your answer