বাল্যবিয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে, এবং এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে — এমন তথ্য উঠে এসেছে ইউনিসেফ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএন উইমেনের এক যৌথ প্রতিবেদনে। এটি একটি উদ্বেগজনক ও সামাজিকভাবে গুরুতর সমস্যা, যা বাংলাদেশের নারী ও কন্যাশিশুদের ভবিষ্যৎ ও সামগ্রিক উন্নয়নকে প্রভাবিত করে।
বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, সামাজিক কুসংস্কার, নারী শিক্ষার অভাব, এবং পারিবারিক নিরাপত্তা নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগ। অনেক পরিবারই কন্যাশিশুকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়াকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে নিরাপদ সমাধান মনে করে। এর ফলে, বহু মেয়ে স্কুলে পড়ালেখা শেষ করার আগেই সংসার জীবনে প্রবেশ করে, যার প্রভাব পড়ে তার স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর।
বিশ্বের অনেক দেশেই বাল্যবিয়ের হার কমছে, তবে বাংলাদেশে তা এখনও উচ্চ। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আইন রয়েছে, যেমন ২০১৭ সালের "বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন", কিন্তু বাস্তবায়নে ঘাটতির কারণে পরিস্থিতির উন্নতি খুব ধীরে ঘটছে। স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং সামাজিক চাপ এই সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে, অনেক এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নারী সংগঠন এই ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারা কন্যাশিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, অভিভাবকদের সচেতন করা, এবং কমিউনিটিতে মেয়েদের ক্ষমতায়ন ঘটানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। এসব কার্যক্রমই ধীরে ধীরে বাল্যবিয়ের হার কমাতে সহায়ক হতে পারে।
এশিয়ায় শীর্ষস্থান এবং বিশ্বে অষ্টম হওয়া মানে হলো বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় সামাজিক সংকেত। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্ভাবনা রক্ষার জন্য এই সমস্যাটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধানের প্রয়াস নেওয়া জরুরি।
Please login or Register to submit your answer