চন্দ্রাবতী বাংলা সাহিত্যের এক ঐতিহাসিক নাম, যিনি প্রথম নারী কবি হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা হলো “রামায়ণ”—যা তিনি নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রচনা করেন। যদিও অনেকেই তাঁকে ব্যক্তি মনে করে প্রশ্নটি করে থাকেন, প্রশ্নের প্রকৃত উত্তরের প্রেক্ষিতে বুঝতে হবে “চন্দ্রাবতী” এখানে তাঁর রচনার কথা বোঝাচ্ছে, যা একটি কাব্য।
চন্দ্রাবতী মূলত ষোড়শ শতকের একজন মেধাবী কবি, এবং তাঁর পিতা দ্বিজ বংশীয় কবি “ব্রজবল্লভ”। তিনি ময়মনসিংহ অঞ্চলের কবি ছিলেন। তাঁর রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি পুরাণকথা, বিশেষত রামায়ণকে নারীর দুঃখ, যন্ত্রণা ও সংগ্রামের দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন। এ দৃষ্টিভঙ্গি বাংলা কাব্যসাহিত্যে একটি অভিনব প্রবণতা সৃষ্টি করে।
চন্দ্রাবতীর “রামায়ণ” কাব্য রামচন্দ্রকে কেন্দ্র নয়, বরং সীতা ও অন্যান্য নারীর দুঃখময় পরিণতির প্রতি আবেগময় আলো ফেলেছে। তাঁর লেখায় ন্যায়-অন্যায়, ভালবাসা-ত্যাগ এবং সমাজব্যবস্থার প্রতি এক গভীর প্রশ্ন উপস্থাপিত হয়েছে।
চন্দ্রাবতীর কাব্যধারা ছিল সাবলীল, হৃদয়স্পর্শী এবং সামাজিকভাবে সচেতন। নারীবাদী সাহিত্য চর্চার একটি প্রাথমিক নিদর্শন হিসেবেও তাঁর রচনাকে বিবেচনা করা যায়।
সুতরাং, “চন্দ্রাবতী কী?” প্রশ্নের সরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ উত্তর—“একটি কাব্য”, যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অনন্য।
Please login or Register to submit your answer