শ্বাসমূল (Pneumatophore) হলো এমন একধরনের বিশেষ মূল, যা সাধারণত জলাভূমি বা লোনা পানির পরিবেশে জন্মানো গাছপালার মধ্যে দেখা যায়। এই মূলগুলো মূলত মাটির নিচ থেকে উঁচু হয়ে ওপরে উঠে আসে এবং গাছকে অক্সিজেন গ্রহণে সহায়তা করে, কারণ এসব অঞ্চলের মাটিতে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকে।
সুন্দরী গাছ হলো ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের (Mangrove Forest) একটি প্রধান উদ্ভিদ, যা বাংলাদেশের সুন্দরবনে প্রাচুর্য্যে দেখা যায়। এই গাছটি বিশেষভাবে লবণাক্ত জল ও কর্দমাক্ত পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম। এ কারণেই এটি শ্বাসমূলের মাধ্যমে বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করে।
সুন্দরী গাছের এই শ্বাসমূল মাটির ওপর দিয়ে খাড়া হয়ে উঠে আসে এবং এদের দেখতে অনেকটা ছোট খুঁটির মতো মনে হয়। এগুলো গাছের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সুন্দরবনের মাটি প্রায়ই জলাবদ্ধ থাকে এবং প্রচলিত মূলগুলো ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না।
শ্বাসমূল গাছগুলোর পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের (adaptation) এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত। শুধু সুন্দরী নয়, আরও কিছু ম্যানগ্রোভ গাছ যেমন গরান, গেওয়া, কাঁকড়া ইত্যাদিতেও শ্বাসমূল দেখা যায়। তবে সুন্দরী সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ।
এই উদ্ভিদের উপস্থিতি পরিবেশ রক্ষা, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিক্ষয় রোধ ও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Please login or Register to submit your answer