জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত ঐতিহাসিক নথি, "বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা" (Universal Declaration of Human Rights), ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সাধারণ অধিবেশন সম্মেলনে গৃহীত হয়। এই ঘোষণাটি ছিল একটি মৌলিক এবং বিপ্লবী দলিল, যা মানবাধিকারের গুরুত্ব এবং সুরক্ষা বিষয়ক বিশ্বব্যাপী একটি মানদণ্ড স্থাপন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং মানবাধিকার সুরক্ষার উদ্দেশ্যে এটি গৃহীত হয়।
এই ঘোষণাটির মাধ্যমে জাতিসংঘ ঘোষণা করেছিল যে, সকল মানুষের জন্মগত অধিকার, স্বাধীনতা, সমতা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে, এবং কোনো দেশ বা সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে পারে না। ১৯৪৮ সালে গৃহীত এই ঘোষণা পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন দেশের সাংবিধানিক কাঠামো, আইন ও নীতি গঠনে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং এটি পরবর্তী সময়ে মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনেও সহায়ক হয়েছে।
বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণা মোট ৩০টি আর্টিকেল বা ধারা নিয়ে গঠিত, যা ব্যক্তির মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা, ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা, ভাষার অধিকার, এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের উপর ভিত্তি করে। এই নথি যে শুধু জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির জন্য বাধ্যতামূলক ছিল, তা নয়, এটি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকেও মানবাধিকার নিয়ে তাদের নীতি এবং আইন নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছে। এটি পৃথিবীর সব মানুষের জন্য মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সমতার ভিত্তিতে একটি সুরক্ষিত ভবিষ্যতের পথ প্রস্তাব করেছে।
Please login or Register to submit your answer