একটি সভ্যতার উন্নয়ন বা পরিমাণ নির্ধারণ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো কলাকৌশলের প্রয়োগ অর্থাৎ প্রযুক্তি, নির্মাণ কৌশল, কৃষি ব্যবস্থাপনা, শিল্প ও নৈপুণ্যের বিকাশের মাত্রা দেখে। সভ্যতা মানে শুধুই মানুষের বসবাস নয়, বরং মানুষের চিন্তাশক্তি, জীবনযাত্রা, দক্ষতা ও সামাজিক সংগঠনের জটিলতা।
কলাকৌশল কী?
‘কলাকৌশল’ বলতে বোঝায়—মনুষ্যসৃষ্ট নানান কৌশল, যন্ত্র, উপায় বা পদ্ধতি, যা মানুষ তার প্রয়োজন মেটাতে উদ্ভাবন করে। যেমন:
পাথর বা ধাতু দিয়ে অস্ত্র ও সরঞ্জাম তৈরি করা
কৃষিকাজের জন্য সেচ ব্যবস্থা
স্থাপত্যকলার বিকাশ
গৃহনির্মাণ প্রযুক্তি
কাগজ ও লেখার কৌশল
বস্ত্র ও রং প্রস্তুতির পদ্ধতি
সভ্যতার মাপকাঠি হিসেবে কলাকৌশল:
প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা: পিরামিডের মতো স্থাপনা নির্মাণ ছিল তৎকালীন প্রযুক্তির এক অসাধারণ নিদর্শন।
ভারতীয় সিন্ধু সভ্যতা: সুশৃঙ্খল নগর পরিকল্পনা, নালা ও পানির সরবরাহ ব্যবস্থা অত্যাধুনিক কলাকৌশলের প্রমাণ।
চীনা সভ্যতা: কাগজ, বারুদ, কম্পাস আবিষ্কার তাদের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার প্রমাণ।
কলাকৌশল ও সংস্কৃতি:
যে সমাজ যত বেশি কলাকৌশল ব্যবহার ও উদ্ভাবনে দক্ষ, তাদের জীবনযাত্রা তত উন্নত। এমন সভ্যতা শুধু দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয় না, বরং জ্ঞানচর্চা, সাহিত্য, সংগীত ও শিল্পকেও সমৃদ্ধ করে।
উপসংহার:
সভ্যতার প্রকৃত উন্নয়ন বোঝার জন্য কেবল লোকসংখ্যা বা আয়তন দেখা যথেষ্ট নয়। বরং তাদের দৈনন্দিন জীবন কতটা দক্ষতায় পরিচালিত হচ্ছে, মানুষ কেমন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং তারা কতটা নতুন কৌশল উদ্ভাবন করতে পারছে—এই বিষয়গুলো সভ্যতার মূল সূচক।
Please login or Register to submit your answer