অন্যান্য

প্রতিষ্ঠান পরিচিতি : নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সরকার ঢাকায় ‘হাইড্রোলিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি (HRL)’ নামে একটি নতুন গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা অনুমোদন দেয়। ১৯৪৮-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে হাইড্রোলিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির উন্নয়ন করা হয়। ১৯৭৭ সালে এটি নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৮৪ সালে এটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (BWDB) হাইড্রোলিক গবেষণাগার হিসেবে পরিবৃদ্ধি লাভ করে। ১ জুলাই ১৯৮৯ এটি ঢাকা থেকে ফরিদপুরে স্থানান্তরিত করা হয়। ২০ আগস্ট ১৯৯১ ইনস্টিটিউটটি এক অধ্যাদেশ বলে (অধ্যাদেশ নং ৫৩, জুলাই ১৯৯০) BWDB থেকে পৃথক করে একটি জাতীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়।

কার্যাবলি

  • নদী শাসন, নদীর ভাঙ্গন রোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং সেচ ও পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনে নকশা প্রণয়ন এবং মাটি, পানি, পলল ও নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত উপকরণ পরীক্ষা এবং নির্মাণ কাজের মানের তদারকি ও মূল্যায়ন করা।
  • নদী কৌশল, নদীর পলল নিয়ন্ত্রণ, নদীর মোহনা এবং জোয়ার ভাটা সম্পর্কিত গবেষণা কাজে ভৌত মডেলের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনা করা।
  • পানি সম্পদ উন্নয়নের জন্য নদীর পানি প্রবাহ এবং পানি বিভাজন এলাকা, পানি বিজ্ঞান, ভূ-পরিস্থ এবং ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার এবং পরিবেশগত বিষয়াদি; বিশেষত লবণক্তার অনুপ্রবেশ এবং পানির গুণাগুণ সম্পর্কে গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনা করা।
  • উল্লিখিত বিষয়সমূহে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং তৎসংশ্লিষ্ট কারিগরি প্রতিবেদন প্রকাশ করা। ইনস্টিটিউটের কার্যাবলির মত একই প্রকার কার্যে নিয়োজিত অন্য কোনো দেশি বা বিদেশি সংস্থার সাথে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনা করা।
  • RRI ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর ‘RRI Technical Journal’ নামে একটি গবেষণা সাময়িকী প্রকাশ করার পাশাপাশি ত্রৈমাসিক নিউজ লেটার এবং বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

পরিদপ্তরসমূহ

জিওটেকনিক্যাল রিসার্চ পরিদপ্তর

জিওটেকনিক্যাল রিসার্চ পরিদপ্তরে তিনটি বিভাগ রয়েছে যথা— ১. মৃত্তিকা বলবিদ্যা ও ভূ-গর্ভস্থ পানি বিভাগ ২. উপকরণ পরীক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং ৩. পলল, রসায়ন ও পানি দূষন বিভাগ। এ বিভাগসমূহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ, পানি নিষ্কাশন, পানি উন্নয়ন ও অন্যান্য পানি উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রকল্পের পরিকাঠামোর পরিকল্পনা ও নকশার জন্য প্রয়োজনীয় মাটির বিভিন্ন ধরনের ভৌত গুণাবলির পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের নদী শাসন কাজ এবং পলল এর বৈশিষ্ট্য ও পানির গুণগত মান নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে।

হাইড্রোলিক রিসার্চ পরিদপ্তর

হাইড্রোলিক রিসার্চ পরিদপ্তরের অধীনে তিনটি বিভাগ। যথা— ১. রিভার অ্যান্ড কোস্টাল হাইড্রোলিক বিভাগ ২. হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার অ্যান্ড ইরিগেশন বিভাগ এবং ৩. ম্যাথমেটিক্যাল মডেলিং বিভাগ। এ বিভাগসমূহের কাজ হলো নদী প্রশিক্ষণ, নদী ভাঙ্গনরোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী কৌশল, নদীর মোহনা ও জোয়ার ভাটা সম্পর্কিত গবেষণা কাজে ভৌত মডেলের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনা, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কিত বিভিন্ন কাঠামোর (ব্রিজ, ব্যারেজ, সুইস, কালভার্ট, গ্রোয়েন, রিভেটমেন্ট ইত্যাদি) প্রকৃত স্থান নির্ধারণসহ নকশার কাজে প্রয়োজনীয় প্যারামিটার যাচাইয়ের জন্য সমীক্ষা পরিচালনা এবং পানি সম্পদ উন্নয়নের জন্য নদীর পানি প্রবাহ ও পানি বিভাজন এলাকা, পানি বিজ্ঞান, ভূ-পরিস্থ ও ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারসহ পানির গুণাগুণ সম্পর্কে সমীক্ষা পরিচালনা করা।

প্রশাসন ও অর্থ পরিদপ্তর

প্রশাসন ও অর্থ পরিদপ্তর পাঁচটি বিভাগ নিয়ে গঠিত যথা— ১. সংস্থাপন ২. হিসাব ও নিরীক্ষা ৩. লাইব্রেরি, জনসংযোগ ও আলোকচিত্র ৪. স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং ৫. ভৌত কাঠামোর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ। এ পরিদপ্তরের কার্যাবলির মধ্যে রয়েছে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সার্বিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সংস্থাপন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, চিত্রগ্রহণ, জনসংযোগ, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও ভাণ্ডার রক্ষণাবেক্ষণ, সার্বিক বৃক্ষ রোপণ, বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন, বার্ষিক প্রতিবেদন, জার্নাল, নিউজ লেটার, প্রভৃতি প্রকাশ করা।

Fact File

  • প্রতিষ্ঠান : নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট (RRI)
  • RRI’র পূর্ণরূপ : River Research Institute
  • প্রতিষ্ঠা : ১৯৭৭ সালে
  • প্রধান কার্যালয়ের অবস্থান : হারুকান্দি, ফরিদপুর
  • পূর্বের অবস্থান : ঢাকা
  • যে মন্ত্রণালয়ের অধীন : পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়
  • প্রধান নির্বাহী : মহাপরিচালক
  • পরিদপ্তর : ৩টি জিওটেকনিক্যাল রিসার্চ পরিদপ্তর, হাইড্রোলিক রিসার্চ পরিদপ্তর এবং প্রশাসন ও অর্থ পরিদপ্তর
  • আন্তর্জাতিক নদী রক্ষা দিবস : ১৪ মার্চ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button