বায়োমেট্রিক্স কী? প্লেজারিজম বলতে কী বোঝায়?

বায়োমেট্রিক্স কী? প্লেজারিজম বলতে কী বোঝায়?

আবির দ্বাদশ শ্রেণির একজন ছাত্র। অসুস্থতার জন্য সে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। কিন্তু সে ক্লাসে দেয়া সকল হোমওয়ার্ক সংগ্রহ করে এবং পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উপস্থিত হয়।

ক. বায়োমেট্রিক্স কী?
খ. প্লেজারিজম বলতে কী বোঝায়?
গ. আবির কিভাবে তার হোমওয়ার্ক সংগ্রহ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আবিরের সমস্যা সমাধানে আইসিটি কিভাবে সাহায্য করে আলোচনা কর ।

ক. বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়।

খ. প্লেজারিজম হলো অন্যের লেখা বা গবেষণালব্ধ তথ্য নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া। ইন্টারনেটে পৃথিবীর প্রায় সব বিষয়েই কোনো না কোনো তথ্য আছে। এসব তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রকৃত তথ্যদাতার অবদান স্বীকার করা না হলে তা প্লেজারিজমের মধ্যে পড়বে। আমরা প্রতিনিয়ত বুঝে না বুঝে এ অপরাধ করছি। বর্তমানে প্লেজারিজম ধরার নানা ধরনের কৌশল বের হয়েছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির অবাধ স্বাধীনতার ফলে প্লেজারিজম একটি বড় ধরনের অনৈতিক কাজে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন :  রসায়নের পরিধি বা ক্ষেত্রসমূহ

গ. আবির ই-লার্নিং এর মাধ্যমে তার হোমওয়ার্ক সংগ্রহ করে। ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলা হয় ইলেকট্রনিক লার্নিং বা সংক্ষেপে ই-লার্নিং। রেডিও থেকে মোবাইল অ্যাপস পর্যন্ত সবই ই- লার্নিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। ই-লার্নিং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনেক জনপ্রিয়। ই- লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী তার প্রয়োজনমত একই ডিজিটাল কনটেন্ট বা ভিডিও ক্লিপ, ইচ্ছেমতো বারবার ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সিং আবিষ্কারের পরে এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে আলাদা আলাদা জায়গায় থেকেও সরাসরি কথা বলতে পারছে।

সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে স্মার্টফোন ভিত্তিক অ্যাপস। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত আগামী এক দশক শিক্ষাক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য করবে মোবাইল অ্যাপস । একসময় ফ্লপি ডিক্স বা সিডি দিয়েও শিক্ষা উপকরণের আদান-প্রদান হয়েছে। সেটাকেও ই-লার্নিং বলা চলে।

আজকাল ইন্টারনেটের বদৌলতে ই-লার্নিং ব্যাপারটা সবার কাছেই সুপরিচিত এবং এই ইন্টারনেট ই-লার্নিং এর সবচাইতে বড় অনুষঙ্গ। ই-লার্নিং এর সবচাইতে মজার ব্যাপারটি হলো এই যে ক্লাস করার জন্য আমাকে ক্লাসরুমে থাকতে হবে না। ইচ্ছে হলেই বাসার বিছানায় শুয়ে দেখে নিচ্ছি গেম থিওরির বর্ণনা, তাও আবার পৃথিবী-খ্যাত কোন প্রফেসরের কাছ থেকে।

আরও পড়ুন :  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?

ঘ. আবিরের সমস্যা সমাধানে আইসিটির অবদান নিচে বর্ণনা করা হলো : শিক্ষণ-শিখন (teaching-learning) কার্যক্রমকে আকর্ষণীয় ও কার্যকর করার এক অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করেছে ICT। ICT ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুত করা যায়, যা গতানুগতিক শিক্ষা উপকরণের চেয়ে যথেষ্ট কার্যকর। শিক্ষকগণ ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করে সফলভাবে শ্রেণিতে পাঠদান করতে পারেন।

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেণিকক্ষ ও পাঠ্য পুস্তকের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যপী জ্ঞানের সন্ধান করতে পারে। আবার ICT-র সাহায্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের (যেমনঃ প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক) জন্য বিভিন্ন Computer Assisted Learning (CAL) Computer Assisted Instruction (CAI) সফটওয়্যার প্রস্তুত করা যায়। ফলে বিশ্বব্যাপী সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে ICT গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।

আরও পড়ুন :  আচরণগত বায়োমেট্রিক্স কী? একটি বিশেষ টেকনোলজি দিয়ে যে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণদেয়া যায়'- ব্যাখ্যা করো।

ICT-র কল্যাণে শিক্ষাব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে; এখন যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় যেকোনো স্থান ( anyone. anytime, anywhere ) থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারে। বাংলাদেশে বসেও এখন একজন শিক্ষার্থী চাইলে আমেরিকার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স করতে পারে।

এটা সম্ভব হয়েছে ICT-র বহুমূখী সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে। বাস্তবে একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষককে মুখোমুখী না দেখেও বরং ই-মেইল, চ্যাটিং, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর সাহায্যে পাঠ গ্রহণ করতে পারেন। অনলাইনে শিক্ষক তার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করে সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারে। আর এই ব্যবস্থাকে সহজভাবে Virtual Learning Environment (VLE) বলা হয়।

এই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হচ্ছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন দেশে Virtual University, Virtual Library, Virtual Museum ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এ অনুরুপভাবে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে (বাউবি) পর্যায়ক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে।

Leave a Reply