কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ১৯৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কৃষি ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে সয়েল প্রকল্পের ইস্ট উইং ডাইরেক্টরেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে এর উদ্দেশ্য ছিল কৃষি উন্নয়নের জন্য সমগ্র দেশের প্রাথমিক মৃত্তিকা জরিপ সম্পন্ন করা। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এর ইস্ট উইং অফিসটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বা ‘মৃত্তিকা জরিপ বিভাগ’ রূপে কার্যক্রম শুরু করে ।

১৯৮৩ সালে কৃষি ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে মৃত্তিকা জরিপ বিভাগটির পুনর্গঠন করে বর্তমান মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয় । বাংলাদেশে উন্নত মৃত্তিকা ও পুষ্টি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শস্য উৎপাদনে যুগান্তকারী অবদান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে।

উদ্দেশ্য

যথাযথ এবং টেকসই ভূমি ও মৃত্তিকা (বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ) ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

মিশন

  • মৃত্তিকা ও ভূমি সম্পদের ইনভেন্টরি তৈরি ।
  • ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদের সক্ষমতাভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস ।
  • ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য উপযোগী নির্দেশিকা, পুস্তিকা এবং সহায়িকা প্রণয়ন।
  • শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা ।

বিভাগসমূহ

  • কেন্দ্রীয় গবেষণাগার : কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের অধীনে তিনটি শাখা রয়েছে যথা— সয়েল কেমিস্ট্রি, সয়েল ফিজিক্স অ্যান্ড মিনারেলজি এবং সয়েল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড বায়োকেমিস্ট্রি শাখা। মৃত্তিকার অনুর্বরতা, ফসল ও মৃত্তিকার আর্দ্রতার সম্পর্ক পরীক্ষা, বিভিন্ন মাটিতে উদ্ভিদের খাদ্য উপাদানের পরিমাণে বিভিন্নতা, মৃত্তিকার বিষাক্ততা ইত্যাদি বিষয়ে মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধান করা এবং সার ভেজালরোধে গবেষণা করা কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের মূল কাজ ।
  • গবেষণা কেন্দ্ৰ : SRDI’র ২টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যার একটি পাহাড়ি কৃষি, মৃত্তিকা সংরক্ষণ, ভূমি ক্ষয় এবং পানি বিভাজিকা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণার জন্য ‘মৃত্তিকা সংরক্ষণ ও পানি বিভাজিকা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র’ নামে বান্দরবানে এবং অন্যটি উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত মৃত্তিকার ব্যবস্থাপনাবিষয়ক গবেষণার জন্য ‘লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্র’ নামে খুলনার বটিয়াঘাটায় অবস্থিত।
  • ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষাগার : মৃত্তিকা পরীক্ষার ভিত্তিতে সার সুপারিশ করা, সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের সুফল এবং SRDI কর্তৃক স্থায়ী গবেষণাগারের মাধ্যমে মৃত্তিকা পরীক্ষা ও সার সুপারিশ সম্পর্কে উপকারভোগীদেরকে সচেতন করার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষাগার চালু হয়। বর্তমানে ১০টি ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষাগার চালু রয়েছে যথা— যমুনা, তিতাস, রূপসা, তিস্তা, মধুমতি, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলী, সুরমা, করতোয়া এবং কীর্তনখোলা ।

SRDI’র উদ্ভাবিত প্রযুক্তি

  • ডিবলিং পদ্ধতিতে ভুট্টা ও সূর্যমুখী ফুল চাষ
  • রোপণ পদ্ধতিতে ভুট্টা চাষ
  • ফ্লাইং বেড পদ্ধতিতে সবজি চাষ
  • Slash and mulch with agro forestry পদ্ধতিতে জুম চাষ
  • পাহাড়ি ঢালে ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জ ফালি প্ৰযুক্তি

Fact File

  • নাম : মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (SRDI)
  • SRDI’র পূর্ণরূপ : Soil Resource Development Institute
  • প্রতিষ্ঠা : ১৯৮৩ সালে
  • প্রধান কার্যালয় : কৃষি খামার সড়ক, ঢাকা
  • প্রধান নির্বাহী : মহাপরিচালক
  • উইং : ২টি— ফিল্ড সার্ভিসেস উইং ও অ্যানালাইটিকেল সার্ভিসেস উইং
  • বিভাগ : ২টি সয়েল সার্ভে অ্যান্ড ক্লাসিফিকেশন ও ট্রেনিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন
  • শাখা : ৯টি।
  • বিভাগীয় কার্যালয় : ৭টি
  • আঞ্চলিক কার্যালয় : ৩৩টি
  • এছাড়া ৭টি বিভাগীয় গবেষণাগার, ১৬টি আঞ্চলিক গবেষণাগার, ২টি গবেষণা কেন্দ্র এবং কৃষকের মৃত্তিকা নমুনা সরেজমিনে পরীক্ষা করে ফলাফলের ভিত্তিতে সুষম মাত্রার সার সুপারিশ করার লক্ষ্যে ১০টি ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষাগার রয়েছে ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button