অন্যান্য

তামাক ও ড্রাগস | ধূমপানের ক্ষতিকর দিক

তামাক গাছের পাতা ও ডাল শুকিয়ে তামাক তৈরি হয়। শুকনা তামাকপাতা কুচি কুচি করে কেটে তাকে বিশেষ কাগজে মুড়িয়ে সিগারেট এবং পাতায় মুড়িয়ে বিড়ি ও চুরুট বানানাে হয়। এগুলােকে পুড়িয়ে তার ধোঁয়া ও বাষ্প সেবনকে ধূমপান বলে। তামাক থেকে নিকোটিন নামক পদার্থ বের হয়, যা মাদকদ্রব্য হিসেবে নার্ভকে যেমন সাময়িকভাবে উত্তেজিত করে, তেমনি নানাভাবে শরীরের ক্ষতি করে।

ধূমপান করলে নিকোটিন ছাড়াও আরও কিছু বিষাক্ত পদার্থ শরীরে প্রবেশ করে। ধূমপানের ধোঁয়ায় উল্লেখযােগ্য বিষাক্ত গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ এবং মাদকদ্রব্যের সংমিশ্রণ থাকে। এই পদার্থগুলাে রক্তের হিমােগ্লোবিনের অক্সিজেন বহনক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এছাড়া কতগুলাে আঠালাে পদার্থ ও হাইড্রোকার্বন প্রভৃতি এতে থাকে, যা ফুসফুসে নানা ধরনের ব্যাধি, এমনকি ক্যান্সার সৃষ্টি করে।

ধূমপানের ক্ষতিকর দিক

আমাদের সবচেয়ে পরিচিত মাদক হচ্ছে ধূমপান। ধূমপানের ফলে মানবদেহে যেসব ক্ষতিকারক অবস্থা ও রােগ দেখা দেয় সেগুলাে হলাে:

  • ধূমপায়ীরা অন্যদের থেকে বেশি রােগাক্রান্ত হয়।
  • ধূমপায়ীরা কোনাে না কোনাে রােগে ভােগে যেমন: ফুসফুস ক্যান্সার, ঠোঁট, মুখ, ল্যারিংক্স, গলা ও মূত্রথলির ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, পাকস্থলীতে ক্ষত এবং হৃদযন্ত্র ও রক্তঘটিত রােগ। ফুসফুসে ক্যান্সার দেখা দিলে রােগী প্রায় ৫ বছরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে।
  • সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা বেশি ধূমপান করে, তাদের আয়ু কমে যায়।
  • যেসব লােক ধূমপান করে না অথচ ধূমপায়ীদের কাছাকাছি থেকে ধূমপায়ীর নির্গত ধোঁয়া প্রশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে, তাদেরও শারীরিক ক্ষতি হয়।

ধূমপান ও তামাকজাত পদার্থের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টাসমূহ

  • বাস, রেল, খােলা স্থানে, রেস্তোরাঁয়, অফিস, হাসপাতাল, রেলস্টেশন প্রভৃতি এলাকায় ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেখানে সেখানে ধূমপান করা এখন আইনত দণ্ডনীয় এবং আমাদের দেশে এর জন্য সুনির্দিষ্ট আইনও আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই আইনের সঠিক প্রয়ােগ না থাকার কারণে মানুষ এখনাে যেখানে সেখানে ধূমপান করে আশপাশের বায়ুকে দূষিত করে যাচ্ছে। প্রচলিত আইনকে কঠোরভাবে প্রয়ােগ করা আবশ্যক। এ ব্যাপারে সরকারকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।
  • বিক্রয়যােগ্য তামাকজাত পদার্থের মােড়কে “ধূমপান বিষপান” বা “ধূমপান শরীরের জন্য ক্ষতিকর কথাগুলাে ছাপানাে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
  • তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
  • স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিকটে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা প্রয়ােজন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button